ঘোড়াঘাট(দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে সুমন রহমান (২৮) নামের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবককে মাছ চুরির অভিযোগে গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে ২২ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ভাতছালা গ্রামে । সুমন রহমান ছয়ঘট্টি-বেলওয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের পুত্র। সুমন রহমানকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘোড়াঘাট উপজেলার ভাতছালা গ্রামের আঃ হামিদের পুত্র শাহারুল ইসলাম (৪৫), ইজ্জত আলীর পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান (৩২) ও বেলওয়া তাতিপাড়া গ্রামের মৃত নুরল ইসলামের পুত্র ফারাজ আলী (৫৫) সুমন রহমানকে একটি গাছের সাথে রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে লাঠি ও হাত দিয়ে পর্যায় ক্রমে অমানবিক ভাবে নির্যাতন করে বলে স্থানীয় সুত্রে জানা যায় ।
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী যুবককে মারধরের ১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরালও হয়।
এ ঘটনায় গত রবিবার নির্যাতনের শিকার সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করলে পুলিশ তা তদন্তের ব্যবস্থা নেয় এবং অভিযান পরিচালনা করে ফারাজ আলী নামের একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ফারাজ আলীকে গতকাল সোমবার দিনাজপুর জেলহাজতে প্রেরণ করেছে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ।
সুমনকে নির্যাতনের ভিডিওটি একাধিক সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়। ভিডিওতে সুমনকে একজন মহিলাও চড় থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারছে দেখা যায় ।
সুমনের মা জানান, আমরা খুবই গরিব। দিন এনে দিন খাই। আমার ছোট ছেলে সুমন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। সে ছোট বেলায় প্যারালাইসিস হওয়ায় বর্তমানে সে বাম পায়ে ঠিক ভাবে শক্তি পায় না। ঘটনার আগের দিন রাতে সে রাস্তার পাশে সরকারি খাড়িতে মাছ ধরার জাল ফেলে আসে। পর দিন শুক্রবার ভোরে সে জমিতে জাল থেকে মাছ আনতে গেলে সেই সময় অভিযুক্তরা জমি থেকে তাদের মাছ ধরার খোলসানী থেকে মাছ চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার ছেলেকে গাছের সাথে বেঁধে অমানুষিক ভাবে নির্যাতন করেছে। সুমনের মা এর সুষ্ঠ বিচার দাবি জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা আবু হাসান কবির।
এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট-হাকিমপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, গত রবিবার নির্যাতনের শিকার সুমনের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ করলে আমরা তা তদন্তের ব্যবস্থা নেই এবং অভিযান পরিচালনা করে ফারাজ আলী নামের একজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়াও এজাহার নামীয় অপর ৪ জনকে থানা পুলিশ গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।