শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকে:দিনাজপুর থেকে প্রায় ৬০ হাজার নেতা-কর্মী ২৯ অক্টোবর রংপুরে বিএনপির গণসমাবেশে যোগ দেবেন। এ নিয়ে ইতিমধ্যে জেলার ২২টি ইউনিটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পৃথক পৃথক প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে।
এমনি তথ্য দিয়েছেন,দিনাজপুর জেলা বিএনপির নেতাতা। আজ বৃহস্পতিবার দিনাজপুর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সন্মেলনে এমনি তথ্য জানানো হয়।
উপস্থিত দলের নেতা-কর্মীরা জানান, দীর্ঘ এক যুগ পর চলতি বছরের মে মাসে দিনাজপুর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে মোফাজ্জল হোসেনকে সভাপতি ও বখতিয়ার আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। গণসমাবেশে যোগ দিয়ে মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি দিনাজপুরের ছয়টি সংসদীয় আসনে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চান নেতা-কর্মীরা।সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে জেলার সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণে সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে। চট্টগ্রাম, খুলনা ও ময়মনসিংহের গণসমাবেশে যানবাহন বন্ধ করে দিয়েও জনস্রোতকে রুখতে পারেনি। তিনি আশা রাখছেন, রংপুরের গণসমাবেশও সফল হবে। দলের চেয়ারপারসনের স্মৃতিবিজড়িত দিনাজপুর জেলা বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা উন্মুখ হয়ে আছেন। ইতিমধ্যে পরিবহন বন্ধ না রাখার বিষয়ে পরিবহননেতারাও তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন। তবে বাধা আসবে ধরে নিয়েই তাঁরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। প্রয়োজনে ভ্যান-রিকশা-ইজিবাইকে, এমনকি হেঁটে হলেও গণসমাবেশে উপস্থিত হবেন। ইতিমধ্যে নেতা-কর্মী সমর্থকদের অনেকেই রংপুরে যেতে শুরু করেছেন।
সংবাদ সম্মেলন বলা হয়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’র নিঃশর্ত মুক্তি , চাল - ডাল , জ্বালানী তেল , গ্যাস - বিদ্যুৎ , সার সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি , দুর্নীতি - দুঃশাসন , গুম খুন , বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ও সম্প্রতি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৫ জন হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবীতে আগামী ২৯ অক্টোবর -২০২২ রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে আজকের এই সাংবাদিক সম্মেলন । চট্টগ্রাম , ময়মনসিংহ , খুলনার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্য ছিল গণসমাবেশে মানুষের ঢল যাতে না নামে । খুলনায় বিএনপি মহাসমাবেশ কে ঘিরে সরকার মূলত সান্ধ্য আইন জারি করেছিল । সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে সরকারের নির্দেশে আন্তঃজেলা রুটে গণ পরিবহন বন্ধ করেছিল । সরকারের নির্দেশে এই ধর্মঘটে সাধারণ মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়ে । সমাবেশে যাতে লোক সমাগম না হয় তার সকল চেষ্টাই করে যাচ্ছে এই ফ্যাসিষ্ট সরকার । গণপরিবহনে জনগন তাদের গণঅধিকার আদায়ে যেতে পারল না ভেবে আজকে খুবই অনুধাবন করছি মাওলানা ভাসানির সেই বিখ্যাত উক্তি- “ কৃষকের যে ফসল ঘরে উঠে না , তা ক্ষেতেই জ্বালিয়ে দাও ” । আওয়ামী শাসনে গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ হয়ে যায় । শুরু হয় মহা প্রতাপশালী আওয়ামী দুঃশাসন । এরা কোন দিনই বিরোধী দলকে বরদাস্ত করে নাই । বিরোধী দলের ইতিবাচক সমালোচনাকে কখনোই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মেনে নিতে পারেনি বরং তারা নির্যাতন নিপীড়নের মাধ্যমে বিরোধী দলের মুখ বন্ধ করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে । কারণ তারা জনগণকে ভয় পায় । ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয় , মূলতঃ আওয়ামী লীগ ভয় পেয়ে গেছে । এই কারণে , বিএনপির মহাসমাবেশকে পন্ড করার জন্য দূর্বৃত্তদের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছে তারা । যে সরকার বিরোধী মতের উপর কঠোর অবস্থান এবং গুম ও ক্রস ফায়ার হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সেই সরকার কখনই বিরোধী দলের শান্তি পূর্ন কর্মসূচীকে মেনে নিতে পারে না । এরা বিরোধী দলের উপর দমন পীড়নের যে ধারাবাহিকতা রেখেছে সেখান থেকে সরে আসে নাই । তাদের নোংরা চাতুরী ও দূর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে জনগনের অভ্যুত্থান থামানো যাবে না । এরা অরাজকতা , বিশৃঙ্খলা , হিংসা ও হত্যায় উদ্বুদ্ধ আওয়ামী নাৎসি বাদের সৈনিক । আমরা দিনাজপুর জেলা বিএনপি ও সাধারণ জনগন ২৯ অক্টোবর ২০২২ রংপুর বিভাগীয় সমাবেশে উপস্থিত হব ইনশাআল্লাহ্ ।
সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি।