লালমনিরহাট প্রতিনিধি : শালিকার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন দুলাভাই জয়নাল আবেদীন। সেই সম্পর্কের সুযোগে লম্পট দুলাভাই শারীরিক সম্পর্কে গর্ভবতি হোন। হঠাৎ অসুস্থ হলে ইভার মা ও দুলাভাই মিলে হাসপাতালে নিয়ে যান ইভাকে। পরে রাতে কন্যা সন্তান আসে ইভার কোলজুরে। কিন্তু বিষয়টি গোপন রাখতে নবজাতকের মা (ইভা) ও ইভার মাসহ নবজাতকের জৈবিক পিতা লালমনিরহাটের একটি ময়লার স্তূপে ফেলে দেন শিশুটিকে।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১২টার দিকে সদর থানার ওসি শাহা আলম প্রেস ব্রিফিংকরে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামাল, ওসি তদন্ত শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে শহরের সাহেবপাড়া এলাকার একটি রেলওয়ে কোয়ার্টার থেকে নবজাতকের মা ইভা (১৭), নানী (ইভার মা) লুৎফা বেগম (৪৫) ও নবজাতকের জৈবিক পিতা ইভার দুলাভাই জয়নাল আবেদীন(৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে দীর্ঘ ৮ দিন চিকিৎসার পর আদালতের নির্দেশে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর শিশুমণি নিবাসে শিশুটিকে প্রেরণের বিষয়টি জেলা পুলিশ নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ শিশুটিকে তাদের তত্ত্বাবধানে রেখে আদালতের আদেশে রাজশাহীর শিশুমণি নিবাসে প্রেরণ করেন।
এছাড়াও এখনো শিশুটিকে দত্তক নিতে প্রতিদিন লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল ও থানায় শত শত ফোন করছেন। এ জন্য শিশুটির নিরাপত্তায় হাসপাতালের ওই কেবিনের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। উদ্ধার হওয়া নবজাতক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন পুলিশ সুপারের নির্দেশে নারী পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক হাসপাতালে থেকে নবজাতক কন্যাশিশুটিকে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি মাতৃস্নেহে সেবাযত্ন করেছেন।
ওসি শাহা আলম জানান,ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতক কন্যা শিশুটির পরিচয় পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটির বাবা মায়ের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ায় তিনজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বিকেলে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারী (সোমবার) সকালে সদর থানার এসআই রফিকুল ইসলাম জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন কালীবাড়ি (পুরান বাজার) এলাকার একটি ময়লার ডাস্টবিন থেকে নবজাতক শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর তিনি থানায় একটি লিখিত এজাহার দেন। পরে ধারা-১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩০৭/৩১৭ রুজু করে থানা পুলিশ। তারই পেক্ষিতে বুধবার(২৩ ফেব্রুয়ারী) আদালত শিশুটিকে শিশু মনি নিবাসে প্রেরণের নির্দেশ দেন।