আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২ জুন ২০২৩ ● ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২ জুন ২০২৩
 width=
 width=
শিরোনাম: এলপিজির দাম কমল ১৬১ টাকা       পাঁচ মিনিট স্তব্ধ রংপুর       মন্ত্রিসভায় প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন       লালমনিরহাটে পাটক্ষেতে পড়েছিল অজ্ঞাত নারী, পানি খাওয়ার কিছুক্ষণ পর হলো নিথর       বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টর      

ফোটাঁ ফোটাঁ সয়াবিন তেল দিয়ে পরোটা ভাজা দেখতে হোটেলে ভীড়

বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ ২০২২, দুপুর ০৩:৫৬

রবিউল এহ্সান রিপন, ঠাকুরগাঁও: সয়াবিন তেলের দাম নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে যাওয়ার কারনে ভোগান্তী বেড়েছে সাধারণ মানুষের। তাই ঠাকুরগাঁওয়ের একটি হোটেলে সয়াবিন তেলের খরচ কিভাবে কমানো যায় তা দেখতে ভীর জমিয়েছে মানুষ। আর এতে বেচা বিক্রি বেড়েছে হোটেল মালিক আব্দুল হামিদের।

সরেজমিনে শহরের মথুরাপুর বাজারে গিয়ে দেখা যায় দোকান ভর্তি মানুষ। কেউ পরোটা খাচ্ছে কেউ আবার পরোটা ভাজা দেখছে। সবার চোখ দোকানের মাথার উপর থেকে কড়াই পর্যন্ত ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, হোটেলের চুলার কারিগরের মাথার উপর একটি বাশে সয়াবিনের তেল ঝুলে থাকতে। সেখান থেকে স্যালাইনের পাইপ বেয়ে পড়ছে তেল। দু এক ফোটা করে তেল কড়াইয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। আর কারিগর  ও দোকান মালিক পরোটা ভাজছে।

হোটেল মালিক আব্দুল হামিদ জানান, তেলের দাম বাড়ার কারনে খুব চিন্তা করছিলাম। গ্রামের দোকান কিভাবে কুলিয়ে উঠবো। পরে রুহুল নামের একজন কাস্টমার আমাকে এ বুদ্ধি দেয়। এখন গ্রামের প্রতিটি বাড়ির লোক এটি দেখতে আসছে। পরোটাও বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।

আব্দুল হালিমের স্ত্রী বলেন, আমরা যে পদ্ধতিতে পরোটা ভাজছি তা দেখতে গ্রামের অনেক মহিলা আমাদের দোকানে আসছেন। অনেক ভীর হচ্ছে আগের তুলনায়। আমরা এভাবে আর কতদিন চলবো। পরোটা ভাজা না হয় এভাবে হচ্ছে। কিন্তু বাকি সব কিছুতে তো বেশি বেশি তেল লাগছে। বিকালে তো আবার পুরি ভাজার সময় বেশি তেল লাগছে। এখন পুরি তেমন ভাজছিনা। আবার পুরির কাস্টমার ছুটে যাচ্ছে। আমরা তেল নিয়ে বিপাকে পড়েছি খুব।

পরোটা খেতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, তেলের দাম এত বেশি বাড়ার কারনে বাসায় আর পরোটা বানানো হয়না। রুহুল ভাইয়ের এমন আবিস্কার সমাজের জন্য কতটা স্বস্থির তা উপলব্ধি করছি। আর এটা আমাদের জন্য কত লজ্জার তা দেখতে ও মানুষ ভির করছে।

দোকানের আরেক কাস্টমার মামুন বলেন, একদম সৃজনশীল একটি চিন্তা। সয়াবিনের উচ্চ দামের দিনে এমন চিন্তা প্রশংসনীয়। বিষয়টি মজার হলেও সয়াবিন নিযে হতাশার দিনেও হাসিমুখে পরোটা ভাজতে অন্তত কষ্ট লাগছে।

হোটেল মালিক বলেন, তেলের এমন সংকটের সময় হোটেল গুলোতে খুব তেল অপচয় হচ্ছে। তেলের অপচয় রোধ করতে এমন চিন্তা করেছি। নিজের স্থানীয় বাজার থেকে স্যালাইনের পাইপ কিনে এনে সেট করে দিয়েছি। এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসছে। অনেকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে। পদ্ধতিটা আরেকটু আধুনিক করলে হোটেল গুলোতে তেলের অপচয় কম হবে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা শক্তিশালী হবে। কারন বাংলাদেশে তো একটা জিনিসের দাম বাড়ার সাথে সাথে সব কিছুর দাম বাড়তে থাকে।

স্থানীয় শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, খেটে খাওয়া মানুষ চলতে পারছেনা। তেল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম মানুষের দম আটকে গেছে। রুহুল একটা স্বস্থির বুদ্ধি এনেছে। তবে এটা সমাধান নয়। তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বাজার মনিটরিং করতে হবে, অসাধু ব্যবসায়ী ঠেকাতে হবে। আর তেল আমদানি করতে হবে সরকারকে।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করছে। সরকারের দেয়া নির্ধারিত দামের চেয়ে  বেশি কেউ সয়াবিন তেল বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সময় তেলের অপচয় রোধে সকলকে আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্য করুন


Link copied