শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকে: প্রায় ১৮ কোটি টাকার বিল বকেয়া থাকায় দিনাজপুর পৌরসভার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে,পিডিবি। এতে বন্ধ হয়ে গেছে,দিনাজপুর পৌরসভার সবধরনের সেবা প্রদান কার্যক্রম। সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন,পৌরবাসী-সাধারণ মানুষ। জরুরী টিকা প্রদান,জন্ম নিবন্ধন,নাগিরত্ব সার্টিফিকেট গ্রহণ ,পৌর কর,পানির বিল প্রদানে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন,কেউ কেউ।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিক্রয় ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নেসকো মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে পৌরসভার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
দিনাজপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড- ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফজলুর রহমান এবং ২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাহাদাৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রায় ১৮ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
দিনাজপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল জানান, টানা তিনবারের মতো দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। প্রায় ১৫ বছর আগে দেড় কোটি টাকার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। এরপর ঠিকমতো বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি। এতে মোট বিদ্যুৎ বিল বকেয়া দাঁড়ায় প্রায় ১৮ কোটি টাকা।
বিল পরিশোধ করতে একাধিকবার নোটিশও দিয়েছে নেসকো দিনাজপুর-১ ও দিনাজপুর-২। এরপরও পৌর কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিল পরিশোধ করেনি। এতে মঙ্গলবার পৌরসভা কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় নেসকো।
এ বিষয়ে কথা বলতে দিনাজপুর পৌরসভায় মেয়র কার্যালয়ে গেলে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের দেখা মেলেনি। পরে এ প্রতিবেকের কথা হয় প্যানেল মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলালের সঙ্গে। তিনি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘গোটা পৌরভবন অন্ধকারে রয়েছে। এতে পৌরসভার টিকা, জন্মনিবন্ধন,নাগরিকতে সার্টিফিকেট প্রদানসহ সবধরনের সেবা বন্ধ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা হচ্ছে জেনারেটর।’
পৌরসভার হেপাটাইসিস বি’র টিকাকর্মী নার্গিস আরা জানান, দিনাজপুর পৌরসভায় চার হাজার করোনাসহ হেপাটাইসিস বি’র টিকা রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় এগুলো নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
পৌরসচিব মাহবুবুর রহমান জানান, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে বসে আছি তবে,কত টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে তা আমার জানা নেই।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মিনারুল ইসলাম খান জানান,প্রায় ১৮ কোটি টাকার বিল বকেয়া থাকায় পৌরসভার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে, দিনাজপুর পৌরসভাও ভ্যাট ও ট্যাক্সের টাকা পাবে।
নেসকো দিনাজপুর-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ শাহাদৎ হোসেন জানান, আমরা শুধু পৌরভবনের লাইন বিচ্ছিন্ন করেছি। কিন্তু রাস্তার ধারে পোলের লাইন বিচ্ছিন্ন করিনি।
বিদ্যুৎ না থাকায় টিকা নষ্টের বিষয়ে দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম বোরহান-উল-ইসলাম সিদ্দিকী জানান, নরমালি ৭২ ঘণ্টায় টিকা নষ্ট হয় না। তারপরও যেহেতু পৌরসভার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, তাই টিকাগুলো জেলা ইপিআই স্টোরে নিয়ে এসে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।