ডেস্ক: দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধূমপান করা হয়ে থাকে রংপুর রেলস্টেশনে এবং কম খুলনায়। বাংলাদেশ রেলওয়ে ও আর্ক ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যৌথ সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের বড় ও মাঝারি সব রেলস্টেশনেই ধূমপান হয়। এসব এলাকা যে ধূমপানমুক্ত এমন কোনও চিহ্নও দেখা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও ধূমপানকারীদের বাধা দেননি।
২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে ধূমপানমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের ট্রেন ও ট্রেনস্টেশনকে ধূমপানমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়। ট্রেন ও ট্রেনস্টেশনে বর্তমান ধূমপান চিত্র কেমন তা জানার জন্যই যৌথভাবে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও আর্ক ফাউন্ডেশন এই সমীক্ষা পরিচালনা করে।
আর্ক ফাউন্ডেশন মাঠ পর্যায়ে সমীক্ষার জন্য দেশের ১০টি ট্রেন স্টেশনকে মডেল হিসেবে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে এসব রেলস্টেশনের সুপারিশ করেছে। সেগুলো হলো— খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা, ঢাকা বিমানবন্দর, ঈশ্বরদী, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর, চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুর রেলস্টেশন। সমীক্ষার উদ্দেশ্যই ছিল তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন কতটা রেল ও রেলস্টেশনে মানা হয় এবং ধূমপানমুক্ত ঘোষণার পর সেখানকার বর্তমান চিত্র কী তা দেখা।
সমীক্ষায় দেখা যায়, ধূমপানমুক্ত ঘোষণার পর সবকটি রেলস্টেশনেই ধূমপান হয়। সবচেয়ে কম ধূমপান খুলনা রেলস্টেশনে এবং একই সময়ে সবচেয়ে বেশি ধূমপানের ঘটনা ঘটেছে রংপুর রেলস্টেশনে। ক্রমানুসারে, সবচেয়ে বেশি ধূমপান রংপুর রেলস্টশনে, এরপর ঢাকা কমলাপুল রেলস্টেশন, ঢাকা বিমানবন্দর, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, রাজশাহী, ঈশ্বর্দী ও খুলনা রেলস্টেশন।
রেলস্টেশনগুলোর সবচেয়ে বেশি ধূমপান হয় প্লাটফর্মে। মোট ধূমপানের ৬৫ শতাংশই প্লাটফর্মে হয়, এরপর পার্কিং এলাকায় ২৬.৩ শতাংশ, এছাড়াও রেলস্টেশন এলাকার টি-স্টল বা টং দোকানে এবং টিকিট কাউন্টার এলাকাতেও ধূমপান করতে দেখা গেছে। তবে রেলস্টেশনগুলোর অফিসে কোনও ধূমপান করতে দেখেননি সমীক্ষা চালানো সদস্যরা।
ধূমপান করতে কেউ বাধা দেয় না রেলস্টেশনে
ধূমপান করতে রেলস্টেশনগুলোতে কেউ বাধা দেয়নি বলেও সমীক্ষায় উঠে এসেছে। রেলওয়ে পুলিশ বা নিরাপত্তারক্ষীদের কেউ ধূমপানকারীদের বাধা দেয়নি। ধূমপান না করার জন্য কোনও বিশেষ বার্তা সংবলিত কোনও সাইন বা চিহ্নও দেখতে পায়নি পর্যবেক্ষক দল। রেলস্টেশনের মাইকে ধূমপান না করার জন্য এসব স্টেশনে মাত্র দু’বার ঘোষণা শুনতে পেয়েছিল তারা। যা প্রয়োজনের তুলনা খুবই কম। খুলনা ও রাজশাহী রেলস্টেশনে ‘ধূমপান মুক্ত এলাকা’ লেখা সংবলিত নির্দেশনা বেশি রয়েছে। অন্যগুলোতে খুবই কম। ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে এমন কোনও চিহ্নই পায়নি সমীক্ষক দল। গত এপ্রিলে পরিচালনা করা এই সমীক্ষাটি নিয়ে গত সপ্তাহে রেল মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় রেলস্টেশনে ধূমপান বন্ধে কিছু করণীয় ঠিক করা হয়।