 
                                                                        
                                                                        
                                        
মমিনুল ইসলাম রিপন: রংপুরের কাউনিয়ায় মাকে নৃশংসভাবে হত্যা মামলায় ছেলেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৮ অক্টোবর ২০২৫) রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এই রায় ঘোষণা করেন।
 
দায়রা মামলা নং-১১৩৪/২০২৩ (সূত্র: জি.আর মামলা নং-৯২/২০২২ এবং কাউনিয়া থানার মামলা নং-১২, তারিখ ২৫/০৮/২০২২) অনুযায়ী, আসামি মো. জামিল মিয়া ওরফে ভেলন (২২), পিতা-মো. আব্দুর রাজ্জাক ওরফে লাল মিয়া, মাতা-মৃতা জামিলা বেগম, সাং-সীট নাজিরদহ (ময়নুদ্দিটারী), থানা-কাউনিয়া, জেলা-রংপুর—তাঁর মাকে হত্যা করে বসতঘরের ভেতর পুঁতে রাখেন।
 
মামলার বিবরণে জানা যায়, স্ত্রী ও মায়ের মধ্যে পারিবারিক মনোমালিন্যের জেরে ১৯ আগস্ট ২০২২ রাতে জামিল মিয়া ঘুমন্ত অবস্থায় মায়ের মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে হত্যার বিষয়টি গোপন রাখতে ঘরের মেঝে খুঁড়ে লাশ পুঁতে রাখেন। কয়েকদিন পর দুর্গন্ধ ছড়ালে প্রতিবেশীরা সন্দেহজনকভাবে ঘরে খোঁজ শুরু করে এবং মাটির নিচ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয়। নিহতের ভাই ছামসুল হক বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
 
রাষ্ট্রপক্ষের ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে আদালত জামিল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০,০০০ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন।
 
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি মো. আফতাব উদ্দিন এবং আসামিপক্ষে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী মো. শামীম আল মামুন।
 
রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের পিপি মো. আফতাব উদ্দিন বলেন, একজন ছেলের হাতে মায়ের মৃত্যু মানবিকতার চূড়ান্ত অবক্ষয়। আদালত আজ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন—অপরাধ করলে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
 
আসামিপক্ষে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী মো. শামীম আল মামুন বলেন, আজকের এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
 
রংপুর জেলা পুলিশের কোট ইন্সপেক্টর মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, এটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা মামলা। দ্রুততম সময়ে রায় ঘোষণা হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরেছে।