আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

সুপারি বাণিজ্যের জন্য বিখ্যাত লালমনিরহাটের বড়বাড়িহাট

শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, বিকাল ০৭:১০

Advertisement Advertisement

লালমনিরহাট প্রতিনিধি।। দেশের উত্তরাঞ্চল তথা রংপুর বিভাগের প্রায় সব জেলা উপজেলাতে পান-সুপারি প্রীতি আছে। ভূরিভোজনের পর একটি খিলিপান বা মিষ্টি সুপারির পানের কদর যেন একটি আলাদা নেশা জাগায়। সেই সুপারি লালমনিরহাটে এখন প্রধান বাণিজ্যিক ফসল। এই সুপারিই এখন সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল হিসেবে। প্রতিবছর মৌসুমে এ জেলায় উৎপাদিত হয় কোটি কোটি টাকার সুপারি। তবে চলতি বছর ফলন কিছুটা কম হওয়ায় বাজারে সুপারির দাম বেশ চড়া, যা বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশি মুনাফা পেতে আশার সঞ্চার জাগিয়েছে।

জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ের বাজারগুলোতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু সুপারির হাট। এসব হাট থেকে সুপারি দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। এসব হাটের মধ্যে লালমনিরহাটের বড়বাড়ি সুপারি হাটটি ব্যবসায়ীদের জন্য বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে।

শনিবার সকালে সরেজমিনে জেলা সদরের বড়বাড়ী বাজার ঘুরে দেখা যায়, হলুদ রঙের সুপারিতে ভরে গেছে পুরো হাট। বিক্রেতা ও ক্রেতার ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোর থেকেই ভ্যান, পিকআপ ও বস্তায় ভরে সুপারি নিয়ে হাটে হাজির হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। চলছে দামাদামি, লেনদেন এবং ব্যাপক বিক্রিবাট্টা। অনেকে আবার সুপারি কিনে গোডাউনে নেয়ার পর শ্রমিকরা বাছাই ও গণনা শেষে আবার বস্তাভর্তি করছেন।

সুপারি বিক্রি করতে আসা শফিক ও নারায়ন জানান, এ বছর সুপারির ফলন কম হলেও মোটামুটি ভালো দামে সুপারি বিক্রি করতে পেরেছি। প্রতিপোন (৮০টি সুপারি এক পোন) সুপারি বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে পাঁচশত টাকা পর্যন্ত। গত বছরের তুলনায় এবার সুপারিতে বেশ ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী হায়দার আলী জানান, সুপারি হাটের জন্য বিখ্যাত এই বড়বাড়ী হাটে শুধু লালমনিরহাট নয়, পাশের কুড়িগ্রাম ও রংপুর জেলা থেকেও এই হাটে সুপারি আসে। প্রতি হাটে কোটি কোটি টাকার সুপারি কেনাবেচা হয়। তিনি আরও জানান, গত বছর এক পোন সুপারি বিক্রি হয়েছে এক থেকে দেড়শ টাকায়। এবার সেই সুপারি বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে পাঁচশত টাকায়। কিছু বড় আকারের সুপারি সাড়ে পাঁচ বা ৬শ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কাউন (১৬ পোন) সুপারি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকার বেশি দামে।

বড়বাড়ি সুপারি হাটের তারা মিয়া, রফিক, পাতু, শরিফ, নয়ন ও বাবলাসহ অনেক সুপারি ব্যবসায়ী জানান, এই সুপারি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, খুলনা, ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এবারে সুপারির চাহিদা গতবারের থেকে ভাল থাকায় বিক্রেতারাও পাচ্ছেন সন্তোষজনক দাম।

তারা বলেন, গত বছর সুপারির উৎপাদন বেশি থাকায় দাম কম ছিল। এবার উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। গত বছর এক কাউন সুপারি ২ থেকে ৩ হাজর টাকায় বিক্রি হলেও এবার তা বিক্রি হচ্ছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকায়। গত বছর ব্যবসায়ীরা তেমন লাভ করতে না পারলেও এবার বেশি মুনাফার পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

হাটের ইজারাদার জানান, অন্য হাটের তুলনায় এখানে খাজনা কম হওয়ায় সুপারির আমদানি বেশি। এ বছর দাম ভালো থাকায় বিক্রেতারাও খুশি। দাম এভাবে থাকলে বাজারে আরও ভালো মানের সুপারি উঠবে এবং চাষিরাও কাঙ্খিত মুল্য পাবেন।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন জানান, এবছর সুপারির ফলন কিছুটা কম হলেও দাম ভাল পাচ্ছে কৃষকরা তাই তারা লাভবানও হচ্ছেন। সুপারির উৎপাদন আরও বাড়াতে ভালো মানের চারা রোপণ এবং নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে জেলা কৃষি অফিস থেকে গাছ লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, জেলায় প্রায় ৫শ হেক্টরের বেশি জমিতে সুপারির চাষ হচ্ছে। এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া সুপারি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে সুপারি গাছ। অনেকেই সুপারি বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সুপারি গাছ সাধারণত বাড়ির আঙিনা, রাস্তার পাশে, পুকুরপাড়, খালপাড়, ঝোপঝাড় বা ফসলি জমির সীমানায় লাগানো হয়। সচেতন কৃষকরা নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগসহ যত্ন নেন সুপারি গাছের।

মন্তব্য করুন


Link copied