কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বাঁশজানী সীমান্তে দু’দেশের সীমান্ত রেখায় অবস্থিত একটি মসজিদের সামনের গাছে একটি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে সিসি ক্যামেরাটি খুলে নিতে বিএসএফকে চিঠি দিয়েছে বিজিবি।
রবিবার দিবাগত রাতে জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ বাঁশজানী ঝাকুয়াটারী জামে মসজিদের সামনে বিএসএফ এই সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকাল থেকে বিজিবি ও বিএসএফ’র মধ্যে কয়েক দফায় পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই মিটিংএ দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ আলোচনা হলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো সমাধান হয়নি বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই সীমান্ত এলাকায় বিপুলসংখ্যক বিএসএফ সদস্যের উপস্থিতি দেখে স্থানীয়দের মনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী বিষয়টি নিয়ে সজাগ থাকেন। কোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। তবে এ ব্যাপারে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে বলেও জানান তারা।
উপজেলার দক্ষিণ বাঁশজানি ঝাকুয়াটারী জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আলমগীর হোসেন জানান, আমাদের এই মসজিদটিতে ভারত-বাংলাদেশের মানুষ নামাজ পড়েন। মসজিদটি আমাদের পূর্ব-পুরুষরা স্থাপন করেছেন। দেশ ভাগের সময় গ্রামের মাঝ দিয়ে সীমান্ত রেখা টানা হলেও আমাদের সম্পর্ক ভাগ হয়নি। তখন থেকে আমরা একসাথে একই মসজিদে দুদেশের মানুষ নামাজ পড়ি। মসজিদটি পুরাতন হয়ে গেলে নতুন করে স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এতে বিএসএফ সদস্যরা বাধা দেয়। তাদের বাধায় দুই বছর থেকে মসজিদের কাজ বন্ধ রয়েছে। এবার রাতের আঁধারে তারা সিসি ক্যামেরা লাগানোয় আমরা হতবাক হয়েছি। এতে আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। বিজিবি ক্যামেরা খুলে নিয়ে যেতে বললেও তা বিএসএফ করেনি।
কুড়িগ্রাম-২২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, বাঁশজানি সীমান্তে সিসি ক্যামেরাটি খুলে নিতে বিএসএফকে আমরা পতাকা বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানিয়েছি। এটি ঢাকার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার এ ব্যাপারে বিএসএফ সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে বিএসএফ’র সীমান্তে পতাকা বৈঠকের কমান্ড্যান্ট জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সীমান্তবর্তী দক্ষিণ বাঁশজানী ঝাকুয়াটারী জামে মসজিদটি দু’দেশের সীমান্ত রেখায় অবস্থিত। দেশ ভাগের আগে থেকে এ মসজিদটিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী মানুষ নামাজ আদায় করে আসছেন।