আর্কাইভ  রবিবার ● ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ● ৩০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যে ৬ অভ্যাস অন্যের কাছে আপনাকে প্রিয় করে তুলবে

যে ৬ অভ্যাস অন্যের কাছে আপনাকে প্রিয় করে তুলবে

উদ্বোধনের দিনই বিকল বেরোবি ভাড়া বাস

উদ্বোধনের দিনই বিকল বেরোবি ভাড়া বাস

রংপুর বিভাগের চার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

রংপুর বিভাগের চার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

বেরোবিতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ৭টি বাস উদ্বোধন

বেরোবিতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ৭টি বাস উদ্বোধন

রাজাপাকসে-হাসিনার পর অলি: উপমহাদেশে বিপ্লবের জ্বালানি যুগিয়েছে কে?

রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ০৮:৫১

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  নেপালের জেনজি বিদ্রোহ যখন আলোচনার তুঙ্গে তখন সামনে এসেছে কয়েকটি প্রশ্ন। উপমহাদেশে বিস্তর ক্ষমতা নিয়ে উড়তে থাকা নেতারা ধুপ করে পড়েছেন মাটিতে। ২০২২ সালের জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কায় তখনকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সময় লেগেছিল তিন মাস। ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী একনায়ক শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সময় লাগে মাত্র ১৫ দিন। আর ২০২৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের কেপি শর্মা ওলিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে লেগেছে মাত্র দুদিন।

ভারতের গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে লিখেছে, দক্ষিণ এশিয়ার এই সাবেক নেতারা—শেখ হাসিনা, রাজাপাকসে, কেপি শর্মা ওলি এবং পাকিস্তানের ইমরান খান—সবাই একসময় প্রভাবশালী শাসক ছিলেন। কিন্তু এখন রাজনীতির জটিল বাঁকে তারা ক্ষমতাচ্যুত। এদের হাতে একসময় সব ছিল। ক্ষমতাবলে ছিলেন নিরঙ্কুশ। এখন কেউ দেশান্তরী, কেউ বা জেলে।

তবে তাদের গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃংখলা বাহিনী ডিজিটাল দুনিয়ায় বিদ্রোহের আগাম ইঙ্গিত ধরতে পারেনি। যা পরবর্তীতে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পরিণত হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বহু নিরপরাধ মানুষ হতাহত হন। সবশেষ হয় শক্তিশালী এই নেতাদের পতন।

এই সব কয়টি বিপ্লবে জ্বালানি জুগিয়েছে চীনের টিকটক, আমেরিকার ডিসকর্ড, ভাইবার, ফেসবুকের মতো ডিজিটাল অ্যাপস। এই বিপ্লবগুলোর পেছনে ছিল এলগরিদম নিয়ন্ত্রণকারী কোনও পুতুলশিল্পী। যিনি হয়তো পশ্চিম ইউরোপ, পূর্ব ইউরোপ, রাশিয়া, চীন কিংবা বিশ্বের অন্য কোথাও বসবাস করেন।

২০২৩ সালে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্রা শাহকে একটি পশ্চিমা ম্যাগাজিন নেতা হিসেবে ঘোষণা করেছিল। তার প্রতিদ্বন্দ্বী রবী লামিচানে ডিজিটাল অ্যাক্টিভিজম চালান। পশ্চিমা অর্থায়নে পরিচালিত এনজিওগুলোর কার্যক্রমের সঙ্গেও এই রাজনীতির মিশ্রণে কাঠমান্ডু আগুনে ঝলসে ওঠে।

রাজাপাকসে, শেখ হাসিনা ও ওলি—তিনজনই পশ্চিমবিরোধী ছিলেন এবং নিজেদের রাজনৈতিক টিকে থাকার জন্য চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। রাজাপাকসে হম্বানটোটা বন্দর চীনের হাতে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের ব্যাপারে চীনের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন এবং ওলি তার ভূমিহীন দেশের জন্য চীনা বন্দরের প্রবেশাধিকার পেয়ে গিয়েছিলেন।

ক্ষমতা হারানোর মাত্র ৬ দিন আগে ওলি অবশ্য বেইজিংয়ে সামরিক প্যারেডে অংশ নিয়েছিলেন। যেখানে তিনি বা তার চীনা মদদদাতারা আসন্ন রাজনৈতিক বিপর্যয়ের কিছুই বুঝতে পারেননি। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক উত্থান-পতনের বিষয়ে অবগত ছিল না।

এলগরিদম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ডীপফেক প্রযুক্তির এই যুগে উত্তেজনা সৃষ্টি, বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক বিভাজন রোধ করা প্রায় অসম্ভব। আরব বসন্ত এবং আইএসআইএসের উদ্ভব দেখিয়েছে যে বিশৃঙ্খলা আরও বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়। যেখানে পুরনো নেতৃত্ব রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস হয় আর নতুনরা শাসন পরিচালনায় ব্যর্থ হয়। প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠতে সময় লাগে, ভেঙে যেতে পারে মুহূর্তে।

তবে, এই দক্ষিণ এশীয় বিক্ষোভগুলো মূলত এসব দেশের দুর্বল শাসনব্যবস্থা, উচ্চ যুব বেকারত্ব এবং পশ্চিমা ইউটো সিরিজগুলো যা যুবসমাজকে ইউরোপ-আমেরিকার স্বপ্ন দেখানোর প্রতিফলন। রাজনৈতিক দুর্নীতি এই তিন দেশের নেতাদের পতনের মূল কারণ।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।

মন্তব্য করুন


Link copied