আর্কাইভ  বুধবার ● ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ● ১৪ কার্তিক ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ২৯ অক্টোবর ২০২৫
১০৪ ভুয়া ‘জুলাই যোদ্ধার’ গেজেট বাতিল হচ্ছে

১০৪ ভুয়া ‘জুলাই যোদ্ধার’ গেজেট বাতিল হচ্ছে

শেখ হাসিনার মৃত্যু নিয়ে গুজব, যা জানা গেল

শেখ হাসিনার মৃত্যু নিয়ে গুজব, যা জানা গেল

পুরোপুরিভাবে চালু হচ্ছে না বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র

পুরোপুরিভাবে চালু হচ্ছে না বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র

বেগম খালেদা জিয়া অথবা তারেক রহমানকে প্রার্থী চান নেতা-কর্মীরা

ভোটের হাওয়া
বেগম খালেদা জিয়া অথবা তারেক রহমানকে প্রার্থী চান নেতা-কর্মীরা

পুরোপুরিভাবে চালু হচ্ছে না বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র

বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, সকাল ০৮:০১

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: দিনাজপুরের কয়লাভিত্তিক বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন তিন ইউনিটের তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র সহসা পুরোপুরি চালু হচ্ছে না। গত ১৯ অক্টোবর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রথম ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়। এর সাত দিন পর গত রোববার আবার প্রথম ইউনিট চালু হয়েছে। এর আগে ১৬ অক্টোবর সকালে তৃতীয় ইউনিটে গভর্ণর ভালভ স্টিম সেন্সরের চারটি টারবাইন নষ্ট হয়। এ কারণে কেন্দ্রটির ২৭৫ মেগাওয়াটের তৃতীয় ইউনিটেও উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১২ দিন পার হলেও এটি কবে চালু হবে তা এখনও নির্দিষ্ট করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। আবার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের সংস্কারকাজ ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে প্রায় পাঁচ বছর ধরে চলমান। ফলে তখন থেকে এই ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। দ্বিতীয় ইউনিটটি কবে চালু হবে সে ব্যাপারেও এখনও সিদ্ধান্ত জানাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। 

জানা গেছে, প্রথম ইউনিট চালু হওয়ার পর বর্তমানে সেখান থেকে ৫০ থেকে ৫২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে তৃতীয় ইউনিট থেকে ১৬০ থেকে ১৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতো। কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট স্থাপন করে চালু করতে যে পরিমাণে অর্থ ব্যয় হয়েছিল এখন একটি ইউনিট (দ্বিতীয় ইউনিট) মেরামত করতে তার চেয়ে বেশি অর্থ চাচ্ছে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। ফলে তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। 

২০০৬ সালে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের বড়পুকুরিয়া এলাকায় কয়লাভিত্তিক এ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। প্রথমে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট ছিল; যার প্রতিটির বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১২৫ মেগাওয়াট করে। ২০১৭ সালে এই কেন্দ্রে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন আরও একটি ইউনিট চালু করা হয়। ফলে এই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়ায় ৫২৫ মেগাওয়াটে। যদিও ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন এই কেন্দ্র, তবে কখনোই এই কেন্দ্রে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো না। অধিকাংশ সময়ই কোনো না কোনো ইউনিট বন্ধ থাকত যান্ত্রিক ত্রুটিসহ নানা কারণে। 

গত ১৯ অক্টোবর প্রথম ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তীব্র লোডশেডিং দেখা দেয় উত্তরের জেলাগুলোতে। বর্তমানে প্রথম ইউনিট চালু হওয়ায় লোডশেডিং কিছুটা কমেছে। 
এর আগে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি এই কেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ওই সময়ে পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর ২২ ফেব্রুয়ারি আবার উৎপাদন শুরু হয়। এরপরে ২১ জুলাই সকালে আবারও তৃতীয় ইউনিট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। একইদিন সন্ধ্যার পর বন্ধ হয়ে যায় প্রথম ইউনিটটিও। চার ঘণ্টা পর প্রথম ইউনিট চালু করা গেলেও তৃতীয় ইউনিটটি বন্ধ ছিল ১০ দিন। ৩০ জুলাই তৃতীয় ইউনিট চালু করা হলে পরের দিন আবারও প্রথম ইউনিটের বয়লারের পাইপ ফেটে যাওয়ায় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। 

দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক এবং বাংলাদেশ অটো, মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, একটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে পাঁচ বছর ধরে। এটি আসলে মেনে নেওয়ার মতো না। বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে এই এলাকার কৃষির আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য। এই কৃষির মধ্যে চালকলগুলোও রয়েছে। বিদ্যুতের সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে চালকলগুলোতে প্রভাব পড়বে। এছাড়া প্রভাব পড়বে বোরো চাষেও। তাই দ্রুত এই কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের সবক’টি থেকে যেন বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় সে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। 

এ বিষয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, প্রথম ইউনিটটি চালু করা হয়েছে।  তৃতীয় ইউনিট চালু করতে সময় লাগবে। অনেক বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চালু করতে হবে। না হলে মেশিন ভেঙে যাবে। আমরা ইউনিটগুলো প্রস্তুতকারী চীনা প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ইউনিটটি এখনও গরম আছে, সেটি ঠান্ডা হলে তারা এসে মেরামতে হাত দেবে। 

২০২০ সাল থেকে বন্ধ থাকা কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ওটা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। এটি ২০২০ সাল থেকে বন্ধ থাকায় অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আরও বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে। প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ২৩ মিলিয়ন ডলার চাচ্ছে। অথচ আগে দুটি ইউনিট করতে ২২ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছিল। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। 

মন্তব্য করুন


Link copied