মমিনুল ইসলাম রিপন, রংপুর।। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর জাতীয় পার্টির রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করা না হলে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের সাথে বেঈমানি করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর টাউন হল মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রংপুর মহানগর শাখা আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেছেন, জাতীয় পার্টি দীর্ঘ ১৫ বছর সহযোগিতার কারণে শেখ হাসিনা স্বৈরাচার হয়ে উঠেছিল। জাতির স্বার্থ চিন্তা না করে আওয়ামী লীগের দোসর এবং ভারতের এজেন্ট হয়ে কাজ করেছে জাতীয় পার্টি। যার ফলে স্বৈরাচার হাসিনা দেশের মানুষকে খুন-গুম, হামলা-মামলাসহ নির্যাতনের স্ট্রিম রোলার চালিয়েছে। ওই স্বৈরাচারকে বিদায় করতে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে জীবন দিতে হয়েছে। সুতরাং অবিলম্বে স্বৈরাচার হাসিনার দোসর জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের সাথে বেঈমানি করা হবে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি শুধু স্বৈরাচারের দোসর নয়, তারা বারবার জনগণের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তাই এই দলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর কোনো নৈতিক অধিকার নেই। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
মাহবুবুর রহমান বলেন , দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতি চালু করতে হবে। বর্তমান একক সংখ্যাগরিষ্ঠতাভিত্তিক ভোট পদ্ধতিতে কৃষক-শ্রমিকসহ সাধারণ জনগণের প্রকৃত মতামত প্রতিফলিত হয় না। একারণে পিআর পদ্ধতির বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।
জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, শ্রমিক শ্রেণি শুধু উৎপাদন ব্যবস্থার চালিকাশক্তি নয়, তারা জাতীয় রাজনীতিরও একটি বড় শক্তি। আগামী নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শ্রমিকদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ হলে কোনো স্বৈরাচারী সরকার টিকতে পারবে না। দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় শ্রমিকদের সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করতে হলে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। এজন্য শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনকে মাঠ পর্যায়ে আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে হবে।
সমাবেশে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রংপুর মহানগর শাখা সভাপতি অ্যাডভোকেট কাওছার আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন—ফেডারেশনের রংপুর-দিনাজপুর সহকারী অঞ্চল পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসেম বাদল।
অন্যান্যের মধ্যে রংপুর মহানগর মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি শহিদা বেগম, ফেডারেশনের মহানগর সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুত্তালিব হোসাইন, সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ নূর হুসাইন, মহানগর যুব বিভাগের সেক্রেটারি ফরহাদ হোসেন মন্ডল, কোতোয়ালি থানা সভাপতি আবু সায়েম বক্তব্য রাখেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রংপুর মহানগর সেক্রেটারী শাহানত মিয়া।