আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ● ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি       রংপুর বিভাগে আসছেন ভূমিমন্ত্রী       রংপুর জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত       রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজ আদায়       যুদ্ধ নয়, আলোচনায় সমাধান সম্ভব : প্রধানমন্ত্রী      

 width=
 

বিশ্ব মানবাধিকার, তুমি কেন পিশাচের জন্য কাঁদো!

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৩, দুপুর ১০:৪৩

অরণ্য নির্ঝর

৭১-এর কষাই ক্ষ্যাত কাদেরের জন্য যখন তাদের অশ্রু উৎপাদন হয় তখন প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে- ডলার পুত্রগণ, কবি মেহেরুন্নেসা কি মানুষ ছিলেন না! শুধু নির্যাতনের বিরুদ্ধে, দেশের পক্ষে, মানুষের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় যদি  তার গলাকেটে মু- সিলিংফ্যানের সাথে বেধে ঘোরানো হয় এবং তার রক্তে আল্পনা তৈরি হয় দেয়ালে, সেই হত্যাকারীর জন্য তোমাদের মানবাধিকার ডিপোজিট থাকে!? মানুষের জন্য নয় !? শত শত নিরীহ মানুষের হত্যাকরী হয় তোমাদের কাছে মানুষ ! একজন ধর্ষক তোমাদের কাছে মানুষ! হায়রে ভন্ডামী। 

তবু ধন্যবাদ শেখ হাসিনার দৃঢ়তাকে। জননী, তুমি মানুষের পক্ষে থেকো, এই কুলহীন বাঙালরি কান্ড রী হয়ে  থাকো। মাঝে মাঝে চোখে ঘোর লাগে- যখন দেখি বিবিসি, সিএনএন এর মতো বিশ্ব মিডিয়াগুলো একজন পিশাচের পক্ষে লিড নিউজ করে, এই বুলি সর্বস্ব আধুনিক সভ্যতার প্রতি করুণা হয়। জামায়াতের সন্ত্রাসে যখন শাহাবাগে পুড়ে মরে মানুষ তখন এই মিডিয়াগুলো লিড নিউজ করেনা। শিবিরের সন্ত্রাসীরা যখন রেলের ফিসপ্লেট খুলে নিয়ে হাজার হাজার নিরহ মানুষের জীবন বিপন্ন করে তখন এ বস মিডিয়া তাদের প্রশ্ন বিদ্ধ করেন ! জামায়াতের হামলায় যখন একটি শিশু পর্যন্ত রক্ষা পায় না তখন নিউজের হুইল ঘোরে ডলারের দিকে। হায়রে বিশ্ব মিডিয়া, হায়রে বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থা, তোমাদের এত করুণ লতানো অবয়াব! অন্যায়ের পক্ষে এত উচ্চ কন্ঠ ! 

আজ বাংলাদেশ জুড়ে চলছে রাজাকার জামায়াত শিবিরের হত্যা- লুন্ঠন- নৈরাজ্য, স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি, আগুন এবং ক্ষুধার আগুন দুটোই মানুষকে প্রজ্জ্বলীত করছে।  হয়তো সেদিন খুব দূরে নয় ফুসে উঠবে জনগণ। আক্রমণ উদ্দ্যতো জনরোসের মুখে একদল ডাকাত হয়তো বেশিক্ষণ টিকবেনা, হোকসে যতই সংগঠিত। অতপর এই ঝড় যা এখন উঠতে শুরু করেছে তা যদি পর্যাপ্ত রক্তমূল্যে থেমে যায় তখন কি বলবে মানবাধিকারের পিল্লাই- বিল্লাইরা! তারা কি  সারা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে দোষী করবেন? হয়তো করবেন। কেননা তাদের অবস্থান মানবাতার বিপক্ষে, দানবদের অধিকার রক্ষার এজেন্ডাই তাদের প্রচারণার বিষয়। হয়তো সেদিন তাদের মানবাধিকারের বল্লম দিয়ে একটি রক্তাক্ত বাংলাদেশকে তারা নির্মম ভাবে খোঁচাবেন। কিন্তু আজ এই ক্রান্তি কালে বাংলাদেশের মানুষদের খুব বেশি চেনা দরকার তাদের শত্রু মিত্র, চেনা দরকার ভন্ড এবং ভালোর পার্থক্য। আমাদের বুঝতে হবে মানবাধিকারের মুখোশ পরা দানবাধিকারের বাণীগুলোকে। এত রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়া একটি দেশ আজ শকুনের বিচারণ ভূমি হতে চলেছে, তাদের প্রতিরোধে নিষ্ক্রিয় দর্শক সাজা আজ অন্যায়। এই বাংলাদেশ যারা চায়নি বাংলাদেশ ধ্বংস করতে তাদের মন কাঁদবে না। যারা মানুষের সন্তান, যারা বাঙালির সন্তান তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী, তাদের মন কাঁদবে। জামায়াত ধ্বংস করে দিচ্ছে দেশের অবকাঠামো, ধ্বংস করে দিচ্ছে অর্থনীতি। এখন সময় রুখে দাঁড়াবার , নিরহ মানুষের জান-মাল রক্ষার জন্য, একটি রক্তে রাঙ্গানো পতাকাকে রক্ষার জন্য, এই পদ্মা মেঘনা যমুনার জন্য, এই আসমুদ্র হীমাচলকে রক্ষার জন্য, হাজার হাজার বছরের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য। অসংখ্য গণকবর স্বাক্ষী, স্মৃতিসৌধ স্বাক্ষী, হাজার হাজার জীবিত মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষী এই দেশ হাসতে হাসতে স্বাধীন হয়নি। দেশের তরুণ প্রজন্মকে বুঝে নিতে হবে সময়ের দায়, প্রজন্মের দায়, মিষ্টি মিষ্টি আন্দোলনই শেষ সমাধান নয়, শত্রুরা কঠিন প্রতিশোধ নিতে তৈরি।

আমাদের সেনাবাহিনীর নাম বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, তারা এই দেশের ভূমিপুত্র। নিজ মায়ের বস্ত্রহরণ যেমন কোন সন্তান সহ্য করে না হয়তো তেমনি সেনাবাহিনী ও সহ্য করবে না রাজাকার পাক পকী’দের আস্ফোলন। এ বাহিনীর জন্মই হয়েছিল ওদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে। যদিও বিভিন্ন সময়ে এ বাহিনীর মধ্য থেকে বেরিয়ে এসেছিল রাজনৈতিক ঘাতক, ভিলেন ও ভাঁড় । কিন্তু কিছু দিন আগে যখন এই বাহিনী সংবাদ সম্মেলন করে কিছু চক্রান্তকারীদের বহিষ্কার করেছিলেন তখন থেকে মানুষ আবার উপলব্ধি করতে শুরু করেছে এটি আমাদের আর্মি। যে আর্মির জন্ম হয়েছিল স্বাধীনতার জন্য, জয় বাংলারা জন্য।

আজ এই ক্রান্তিকালে যখন পাক রাজাকারদের সন্ত্রাসে সন্ত্রস্ত সারাদেশ, যখন নাভী পিল্লাই-বিল্লাইদের ডলার পেইড ক্রন্দনে ধরণীর আকাশে বাতাসে হাহাকার তখন দেশের জনগণ প্রত্যাশা করে আমাদের আর্মি, স্বাধীন বাংলাদেশের আর্মি, মুক্তিযুদ্ধজাত আর্মি- মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জাতিকে কিছু বলুক। 

মানুষ দেখতে চায় তাদের যে সন্তানদের দেশরক্ষার দায়িত্ব দিয়েছেন তারা ভুল রাজনৈতিক আবহে জন্ম নেয়া দেশ বিরোধী  জামায়াতি আপদ, সন্ত্রাসী শিবিরের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিক। এই দেশ পাকিস্তান নয়, কোনদিন হবে না, এই দেশ চিরকাল বাংলাদেশ। লক্ষ লক্ষ মানুষের শরীরের রক্ত ধোয়া বাংলাদেশ। পাক জামাতের বাংলাদেশ আক্রমণের হুমকি আমরা প্রত্যক্ষ্যভাবে গুরুত্বহীন ভাবলেও এর একটি পরোক্ষ গুরুত্ব হয়তো আছে। যার নাম সন্ত্রাস। যা বাংলাদেশে অবস্থানকারী জামায়াত করে চলেছে দেশের মধ্যে। লক্ষ্য ধ্বংস করে দেয়া দেশের অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক অবকাঠামো। হয়তো এর বিস্তৃতি পাকিস্তান জামায়াতের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের স্বার্থের উপর বিশ্বব্যাপী প্রসারিত হতে পারে। 

যদি আমরা বাংলাদেশের সন্তান হয়ই, যদি এই মাটির একটি শষ্য-কণার ঋণও বোধ করি এখনই সময় সজাগ হওয়ার, প্রস্তু হওয়ার, প্রতিরোধের জন্য। আর তা না হলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। ইতিহাস কাপুরুষদের কাপুরুষই বলে, রাজাকারকে রাজাকারই বলে, মুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তি যোদ্ধাই বলবে। মানুষ বাঁচে, মানুষ মরে যায়, মানুষ রেখে যায় তার কৃত্ত্বিগাঁথা, দেশ প্রেম , তার মহৎ অর্জন। আর সেই উপার্জন জাতির ক্রান্তিকালেই করতে হয়। এখন পরীক্ষার সময়। এজন্য বহুমাত্রিক প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়তো হতে হবে বিশ্বব্যাপি। নাভী পিল্লাইদের মতো জাতিসংঘের মানবাধিকার কারখানার কামলারা হয়তো পিশাচদের জন্য কাঁদবে ডলার পেইড কাঁন্না কিন্তু দেশ প্রেমিককে এগোতে হবে মাতৃভূমি রক্ষায়।

লেখাটি সাপ্তাহিক ধাবমান থেকে নেয়া

মন্তব্য করুন


 

Link copied