নিউজ ডেস্ক: ‘নয়া বন্দোবস্তের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না এনসিপি’-এটি দৈনিক বণিক বার্তার প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ঘোষণা দিয়ে গত ফেব্রুয়ারির শেষে আত্মপ্রকাশ ঘটে তারুণ্যনির্ভর রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীদের বড় অংশের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ ঘটে নতুন এ দলটির, যার মূল কথা ছিল ‘ব্যবস্থা’র পরিবর্তন বা ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’। এমন প্রতিশ্রুতি উঠে আসে নয়া দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলীয় প্রধান নাহিদ ইসলামের ভাষণে। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘এখনই সময় নতুন স্বপ্ন দেখার, নতুন পথচলার এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার’। তবে তরুণদের গড়া দলটি নয়া বন্দোবস্তের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
এনসিপির আত্মপ্রকাশের পর পেরিয়ে গেছে তিন মাস। এ সময়ে দলটি জেলা-উপজেলায় কমিটি গঠনে কাজ করছে। তৃণমূল পর্যায়ে জনসংযোগ ও সদস্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যুব ও শ্রমিক উইং খোলা হয়েছে। চিকিৎসক-প্রকৌশলীসহ বেশকিছু পেশাভিত্তিক উইং গঠনের পাশাপাশি প্রবাসীদের অংশগ্রহণ ও তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে ‘ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স’ গঠনের কাজ চলমান। তবে রাজনৈতিক দলটির বিগত তিন মাসের কার্যক্রমে নয়া বন্দোবস্তের নিদর্শন মিলছে না বললেই চলে। সেই পুরনো ধাঁচেই আটকে আছে নয়া দলের রাজনীতি।
এনসিপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্যে আর্থিক কেলেঙ্কারি, সরকারি অফিসে প্রভাব খাটানো ও নারী কেলেঙ্কারির মতো অভিযোগ উঠেছে। ব্যয়বহুল জীবনযাপনের অভিযোগও উঠেছে এনসিপি নেতাদের বিরুদ্ধে। দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন স্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্র প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে। জাঁকজমকপূর্ণভাবে দলীয় অনুষ্ঠান আয়োজন ও রাজধানীর বাংলা মোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ব্যয়ভার নিয়েও জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা প্রদান করলেও নেটিজেনদের মাঝে তীব্রভাবে সমালোচিতও হয়েছেন অল্প কিছুদিন আগেও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা এসব নেতা।
এনসিপির প্রতিশ্রুতিতে নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলে এনসিপি যে প্রত্যাশা তৈরি করেছে, সেটা কেবল কথায় নয়, কাজেও প্রমাণ করতে হবে, যা এখন পর্যন্ত অনুপস্থিত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. স ম আলী রেজা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের স্লোগান তুলে এনসিপি দেশবাসীর মনে এক ধরনের প্রত্যাশা তৈরি করেছিল। দলটির বিগত কয়েক মাসের কার্যক্রমে সেটি স্পষ্ট নয়। এ মুহূর্তে তাদের জন্য জরুরি হচ্ছে জনমনে আস্থা তৈরি করা ও দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করা, যা এখনো নতুন দলটির মাঝে অনুপস্থিত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। অবশ্য নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য তরুণদের আরো সময় দিতে হবে।’
এনসিপি শুরু থেকেই নিজেদের মধ্যপন্থার দল হিসেবে উল্লেখ করলেও নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিরোধিতা করে ডাকা একটি সমাবেশে এনসিপির দুই নেতা অংশ নেয়ায় সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে একটি বিবৃতি দেয়া হলেও সেখানে তাদের অবস্থান সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এনসিপি নেতাদের বিদ্রূপাত্মক ও আক্রমণাত্মক লেখা অতীতের রাজনীতির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। এছাড়া ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ট্যাগিং করার সংস্কৃতি চালুর অভিযোগ উঠেছে দলটির নেতাদের বিরুদ্ধে।
শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা ছিল, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে শিক্ষা খাতে বিভিন্ন ইতিবাচক পরিবর্তন দৃশ্যমান হবে। কিন্তু অভ্যুত্থানের প্রায় ১১ মাস পেরিয়ে গেলেও শিক্ষাঙ্গনে পুরোপুরি স্থিতিশীলতা ফেরেনি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশাসনের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। যেহেতু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তি হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে দলটির গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতে এনসিপির অনেক কিছুই করার ছিল। কিন্তু এনসিপির তেমন কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়।
এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বণিক বার্তাকে বলেন, ‘৫ আগস্টের মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তার অধিকাংশই এখনো পূরণ হয়নি। জাতি গঠনের লক্ষ্যে আমাদের একটি অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা পদ্ধতি প্রয়োজন। কোনো প্রকার চাপ কিংবা দায় এড়ানোর জন্য পরীক্ষা পদ্ধতিকে দুর্বল করতে দেয়া যাবে না। একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন।’
নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের রাজনীতির ঘোষণা দিলেও এনসিপিকে পুরনো সংস্কৃতির কিংস পার্টির সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দুই ছাত্র প্রতিনিধি এনসিপির ‘অংশ’ বলে অনেকে অভিযোগ তুলেছেন। তবে এনসিপির সঙ্গে এ দুজনের কোনো সম্পর্ক নেই বলে বারবার দাবি করে আসছেন নাহিদ ইসলাম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বণিক বার্তাকে বলেন, ‘অভিযোগটি সঠিক নয়। আমাদের দেশে বড় রাজনৈতিক দল তৈরির যে সংস্কৃতি যেমন বিএনপি ও জাপা দুটোই সরাসরি রাষ্ট্রপতির তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রীয় সুযোগ, প্রভাব তৈরি করে হয়েছিল। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি এটিই প্রথম। সরকারে থাকা দুজন ছাত্র উপদেষ্টা অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি, এনসিপির না। তাদের সঙ্গে আমাদের পূর্বপরিচয় আছে, তারা আমাদের সহযোদ্ধাও ছিলেন এটিও সত্য, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে তারা এখানে সবকিছুকে প্রভাবিত করছে, এটা মোটেই সত্যি নয়। এরই মধ্যে খসড়া গঠনতন্ত্র হয়েছে, সেটার নেতৃত্ব কাঠামো দেখলেও পুরনো রাজনৈতিক সংস্কৃতির সঙ্গে স্পষ্ট পার্থক্য দেখা যাবে।’
অভ্যুত্থান-পরবর্তী আওয়ামী লীগ ও এর নেতাকর্মীদের বিচার ও সংস্কারের দাবিতে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় এনসিপি নেতারা। যদিও ১১ মাসেও বিচারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (কোষাধ্যক্ষ) এসএম সাইফ মোস্তাফিজ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এ অল্প সময়ের মধ্যে মৌলিক সংস্কার ও বিচার নিয়ে কাজ করেছি। আমরা সিস্টেমেটিক চেঞ্জ চাচ্ছি। কেননা বিচার বিভাগ ও পুলিশের মতো প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যেতে পারি না। কাঠামোগত পরিবর্তন ছাড়া নির্বাচন করলে আরেক সরকার এসে কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে উঠবে। আমরা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, পরিবারতন্ত্র দূরীকরণের প্রস্তাব জানিয়েছি। এছাড়া দেরিতে হলেও বিচারের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালের মধ্যে বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি নিশ্চিত হবে।’
আওয়ামী লীগ আমলে দেশের স্বাস্থ্য খাত হয়ে পড়েছিল বিদেশমুখী। এ লক্ষ্যে ‘স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন’ নামে কমিশন গঠন করে গত ১৮ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়। এরই মধ্যে কমিশন গত ৫ মে প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। যদিও ক্ষমতায় যাওয়ার ১০ মাস পার হলেও এ খাতে দৃশ্যমান কোনো সংস্কারই চোখে পড়ছে না। এ বিষয়ে এনসিপিকে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে বা সংস্কারের বিষয়গুলো তুলে ধরতে দেখা যায়নি। শুধু তা-ই নয়, খোদ জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এমনকি বছর পেরিয়ে এলেও জুলাইয়ে শহীদ ও আহতদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন সম্ভব হয়নি। এ বিষয়গুলো সুরাহা করতে তেমন কার্যকর উদ্যোগ নেই দলটির। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতু বণিক বার্তাকে বলেন, ‘শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসন না হওয়া নিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের নেতাদের দ্বারা গঠিত দল হিসেবে স্বাভাবিকভাবে এনসিপির দিকে সবাই আঙুল তুলছে। কিন্তু দায় শুধু এনসিপির নয়, সব রাজনৈতিক দলেরই দায় রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি দায় সরকারের। এখন কারো ওপর দায় না চাপিয়ে আহতদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসা উচিত।’
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেটেও ঋণনির্ভরতা কাটানোর দৃশ্যমান কোনো চেষ্টা দেখা যায়নি। এছাড়া শেখ হাসিনার গড়ে তোলা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় অপ্রয়োজনীয় অনেক মেগা প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। বর্তমান সরকারও সংস্কারের বদলে সে পথেই হাঁটছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বিগত সময়ের মতো কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এখনো বহাল রয়েছে। শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়লেও প্রাথমিক শিক্ষায় বরাদ্দ কমেছে। খোদ এনসিপি নেতারা উন্নয়ন বাজেটে অঞ্চলভিত্তিক বৈষম্যের অভিযোগ তুললেও পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে তাদের অনেকটা নীরব থাকতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ঘোষিত বাজেট অভ্যুত্থানকারী জনসাধারণের বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা অনেকভাবেই নিশ্চিত করতে পারেনি। বাজেট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার গঠনের ক্ষেত্রে এনসিপির নেতারা যুক্ত থাকায় জনগণের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় আমাদের দায় আছে; কিন্তু আমরা ব্যর্থ নই। কেননা দল হিসেবে আমরা সরকার চালাচ্ছি না।’ এক্ষেত্রে এনসিপি ক্ষমতায় এলে গণমুখী অর্থনীতির ভিত তৈরি করবে বলে তিনি জানান।
তবে সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে উপসংহারে পৌঁছার সময় এখনো হয়নি বলে দাবি এনসিপি নেতাদের। এনসিপি নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না বলে মনে করা হচ্ছে—এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমি এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই।’ একই প্রশ্নের জবাবে যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, ‘নো কমেন্টস।’
তবে নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সম্ভাবনা এখনো ফুরিয়ে যায়নি বলে দাবি এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিনের। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘নয়া রাজনীতির বন্দোবস্তের প্রত্যাশা শুরু হলো মাত্র, এটা শেষ হয়ে যায়নি। আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি, জনসম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছি। নিবন্ধন কার্যক্রম এবং জনদাবি পূরণে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে।’
বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর নতুন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে আপামর জনগণ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বেই যেহেতু স্বৈরশাসনামলের পতন হয়, তাই নতুন বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের ওপর জনগণের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। যদিও প্রচলিত রাজনৈতিক ধারার বাইরে গিয়ে তারা ঠিক কী করেছেন, তার কোনো নিদর্শনও খুব একটা মিলছে না, তবে সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এনসিপি নেতাদের কিছু ভুল-ত্রুটি আছে। কিন্তু এত সিরিয়াসলি মূল্যায়নের সময় এখনো আসেনি। মাত্র তিন মাস সময় তারা পেয়েছেন। নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও দলীয় অবস্থান থেকে তাদের কেউ কেউ চেষ্টা করছেন। তাদের সময় দেয়া হোক, দেখি তারা কী উপহার দেন।’
তরুণদের প্রতি পরামর্শ দিয়ে কাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘তারা যে নতুন, ভিন্ন ও আলাদা কিছু করতে চায়, নতুন চিন্তা ও চরিত্র নিয়ে আসতে চায়, সেজন্য তাদের ন্যায়পরায়ণ, সৎ, সদাচারী ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। আগের রাজনৈতিক নেতাদের মতো একই অভিযোগ যেন তাদের বিরুদ্ধে না আসে। এর অর্থ এই নয় যে একটা দলের সবাই শতভাগ শুদ্ধ হবেন। তবে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাকে গ্রহণযোগ্য হতে হবে।’ এক্ষেত্রে পার্টির অভ্যন্তরে দুষ্টের দমন শিষ্টের লালন নীতি অনুসরণের পরামর্শ দেন তিনি।