আর্কাইভ  বুধবার ● ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ● ১৯ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবিতে বাড়ছে চাপ

জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবিতে বাড়ছে চাপ

শেখ হাসিনা মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন, হত্যার ঘটনায় আমি লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী

রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের জবানবন্দি
শেখ হাসিনা মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন, হত্যার ঘটনায় আমি লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী

ডিবি হারুনকে ‘জিন’ ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সাক্ষ্য
ডিবি হারুনকে ‘জিন’ ডাকতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কুড়িগ্রামে সাংবাদিক নির্যাতন, সেই ডিসি সুলতানা কারাগারে

কুড়িগ্রামে সাংবাদিক নির্যাতন, সেই ডিসি সুলতানা কারাগারে

রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের জবানবন্দি

শেখ হাসিনা মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন, হত্যার ঘটনায় আমি লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী

মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ১০:৪১

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হয়েছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। সাক্ষীর জবানবন্দিতে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরাসরি মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় তিনি লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ক্যামেরা ট্রায়ালে জবানবন্দি দেন সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন।

জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৬ জুলাইয়ের পর প্রতিদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসায় রাত ৯টায় কোর কমিটির বৈঠক হতো। ১৯ জুলাই সেখানে আন্দোলন দমানোর বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওখানে আমি নিজেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব টিপু সুলতান ও রেজা মোস্তফা, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, র‍্যাব মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।’

সাক্ষী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সেখানে (বৈঠকে) ডিজিএফআই থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনরত সমন্বয়কদের আটক করার জন্য। আমি বিরোধিতা করি, কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে পরে সিদ্বান্ত বাস্তবায়ন করা হয়। সিদ্বান্ত অনুযায়ী সমন্বয়কদের আটক করে মানসিক নিযার্তন করা হয়। তাদের স্বজনদের তুলে নিয়ে আসা হয়। ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ এ দায়িত্ব পালন করে। ডিবি প্রধান হারুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিন বলে ডাকতেন। কারণ সে সরকারের নির্দেশ পালনে পারদর্শী ছিল। সব জায়গায় তাকে দেখা যেত। আন্দোলনের একপর্যায়ে ড্রোন ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। এটি সরকারের রাজনৈতিক সিদ্বান্ত।’

জবানবন্দিতে সাবেক এই আইজিপি বলেন, “২০২৪ সালের ১৮ জুলাই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ফোনকলের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে পুলিশ ‘লেথাল উইপন’ বা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার শুরু করে। ১৮ জুলাই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আমাকে ফোন করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি লেথাল উইপন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন।”

সাক্ষী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমি ১৮ জুলাই দুপুরে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে বসা ছিলাম। আমাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ফোন করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি লেথাল উইপন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন’। এ সময় অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ার্দার আমার সামনে উপস্থিত ছিলে। আমি প্রলয় কুমার জোয়ার্দারকে বললাম—স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এটি বলছেন। বিষয়টি নিয়ে কী করা যায়। সে সাথে সাথে আমার রুম থেকে বের হয়ে যায়। পরে সে ডিএমপি কমিশনারসহ সারা দেশে এ তথ্যটি পাঠিয়ে দেয়। ওইদিন থেকে লেথাল উইপন ব্যবহার শুরু হয়। চাইনিজ রাইফেল এলএমজিতে এটি ব্যবহার শুরু হয়।”

‘ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান এক্ষেত্রে অতি উৎসাহী ছিলেন। তিনি ছাড়াও আন্দোলন দমনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মেয়র ফজলে নূর তাপস, ব্যবসায়ী ও উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগনেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মির্জা আযম, জাসদনেতা হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেননসহ একাধিক রাজনৈতিক নেতা মারণাস্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে প্ররোচিত করেছিলেন’, যোগ করেন সাবেক এই পুলিশ মহাপরিদর্শক।

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘২০২৪ সালে ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফর থেকে এসে সংবাদ সম্মেলন করে। এ সময় তিনি আন্দোলনকারীদের রাজাকারের নাতিপুতি বললে সারা দেশে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। ১৫ জুলাই ওবায়দুল কাদের ও নানক সংবাদ সম্মলেন করে আন্দোলনকারীদের দমনে যুবলীগ-ছাত্রলীগ যথেষ্ট বলে বক্তব্য দেয়। এরপর ১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরতদের ওপর নিযার্তন চালায়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মীরা ভূমিকা রাখে। এভাবে সময় পার হচ্ছিল।’

‘৪ আগস্ট বেলা১১টায় আমাকে গণভবনে ডাকা হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, তিন বাহিনীর প্রধান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, সব গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানসহ ২৭ জন উপস্থিত ছিলেন। মিটিংয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রিপোর্ট পেশ করার পর অবস্থার অবনতির খবর পাওয়া যায়। তখন মিটিং স্থগিত করা হয়। পরে আমি অপারেশন কন্ট্রোল রুমে যায়। সেখানে সিদ্বান্ত হয় ৫ আগস্ট ছাত্রদের মার্চ টু ঢাকা আন্দোলন দমনে রাজধানীর প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর সঙ্গে পুলিশ প্রতিরোধ করবে। পরদিন (৫ আগস্ট) সকালে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে যাই। দুপুর ১২টা থেকে ১টার দিকে জানতে পারি, শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেবে’, উল্লেখ করেন আবদুল্লাহ আল মামুন।

রাজসাক্ষী আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, ‘(৫ আগস্ট) বিকেল ৫টার পর আমি ও এসবি প্রধান মনিরুল ইসলামকে পুলিশ হেড কোয়ার্টাস থেকে উদ্ধার করতে হেলিকপ্টার পাঠায় সেনাবাহিনী। সঙ্গে আরও দুজন ছিল। পরদিন ৬ আগস্ট আমাকে পদ থেকে বাতিল করা হয়। আমি ক্যান্টনমেন্টে আটকা ছিলাম। ৪ সেপ্টেম্বর আমাকে আটক দেখানো হয়।’

জবানবন্দিতে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “২৭ জুলাই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আমি নারায়ণগঞ্জ যাই। পথে যাত্রাবাড়ি থামলে ওয়ারী জোনের ডিসি ইকবাল আমাদের ছবি দেখিয়ে বলে—‘স্যার একটি গুলি করে একটা মরে, বাকিরা যায় না স্যার’।”

আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় একজন পুলিশ প্রধান হিসেবে আহত ও হত্যার ঘটনায় আমি লজ্জিত ও অনুতপ্ত এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি। ট্রাইব্যুনালে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে যে নিশৃংসতার বর্ণনা দেখেছি, তাতে আমি রাজসাক্ষী হওয়াটা যৌক্তিক।’

কান্নারত অবস্থায় সাবেক এই আইজিপি বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে স্বজন হারানো পিতা-মাতার আহাজারি, লাশ হত্যার পর নৃশংসভাবে পুড়িয়ে ফেলার দৃশ্য দেখে আমি ব্যথিত, লজ্জিত ও অনুতপ্ত এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’

জবানবন্দিতে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে এই গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। আমি গণহত্যার শিকার প্রত্যেকের পরিবার, আহত ব্যক্তি, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দেবেন।’ এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

আবদুল্লাহ আল-মামুন আরও বলেন, ‘আমি সাড়ে ৩৬ বছর পুলিশে চাকরি করেছি। পুলিশের চাকরি খুবই ট্রিকি চাকরি। সবসময় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। চাকরি জীবনে আমার বিরুদ্ধে কখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি সবসময় যথেষ্ট মানবিকতা ও সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। চাকরি জীবনের শেষপর্যায়ে এসে এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্বকালে সংঘটিত হয়েছে, তার দায় আমি স্বীকার করছি। আমার সত্য বর্ণনার মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হলে আল্লাহ যদি আমাকে আরও হায়াত দান করেন, বাকি জীবনে কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।’

গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই পাঁচটি অভিযোগে তাদের বিচার করা হচ্ছে। অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

গত ১ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগ আমলে নেন। আমলে নেওয়া পাঁচ অভিযোগ হলো—

প্রথম অভিযোগ

শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আমলে নেওয়া অভিযোগের প্রথমটিতে বলা হয়, শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই চীন থেকে ফিরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় আন্দোলনরত ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে অভিহিত করে ছাত্র- জনতার ওপর নির্যাতনের উসকানি দেওয়া হয়। আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন তার অধীনস্থ বাহিনীকে হামলার জন্য সুপিরিয়র কমান্ডার হিসেবে নির্দেশ দেন। এতে করে রাজধানীর মিরপুর, আশুলিয়া, যাত্রাবাড়ি গাজীপুরসহ সারা দেশে নিহতদের জানাজা ও সৎকার করা, হাসপাতালে লাশ হস্তান্তরে বাধা প্রদান করা হয়। এসব কর্মকাণ্ড করে আসামিরা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।

দ্বিতীয় অভিযোগ

জুলাই- আগস্ট আন্দোলনের সময় সুপিরিয়র কমান্ডার শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) এস এম মাকসুদ কামাল ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এসব ফোনকলে আন্দোলন ঠেকাতে ছাত্র-জনতার ওপর মারণাস্ত্রের ব্যবহার করার কথা বলা হয়। নির্দেশ পেয়ে হেলিকপ্টার থেকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করা হয়। এসব ফোনের অডিও ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে। নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। এ ছাড়া সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বাহিনীকে মারণাস্ত্র ব্যবহারের জন্য নির্দেশনা দিয়ে প্রায় দেড় ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং ২৫ হাজার মানুষকে আহত করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।

তৃতীয় অভিযোগ  

১৬ জুলাই রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে তার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চারবার পরিবর্তন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আবু সাঈদের সহপাঠীদের আসামি করে মামলা করে পুলিশ। সুপিরিয়র কমান্ডার হিসেবে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নির্দেশে এই হত্যা, তথ্য গোপন ও মিথ্যা মামলা করা হয়। এসবের নির্দেশ দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন তিন আসামি।

চতুর্থ অভিযোগ    

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা এক দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে আসার সময় চাঁনখারপুল এলাকায় শহীদ আনাসসহ ছয়জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সুপিরিয়র কমান্ডার হিসেবে এ ছয়জনকে হত্যা করে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

পঞ্চম অভিযোগ

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা এক দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে আসার সময় আশুলিয়ায় ছাত্রদের গুলি করে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ভস্মীভূত করা হয়। এ ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামি মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। এই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করে প্রসিকিউশন।

মন্তব্য করুন


Link copied