আর্কাইভ  শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ● ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: ডিমলা উপজেলা নির্বাচন॥ এমপির ভাই, ভাতিজা ও ভাতিজি বউ প্রার্থী-তৃণমূলে ক্ষোভ       কিশোরী গৃহকর্মীকে খুন্তির ছ্যাকা; রংপুর মেডিকেলে মৃত্যু যন্ত্রণায় পাঞ্জা লড়ছে নাজিরা       সারাদেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি       হিট অ্যালার্টে ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি       শিল্পী সমিতির নতুন সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল      

 width=
 

স্থানীয় সরকারের ভোটে বারবার হোচট খাচ্ছে প্রার্থীরা॥ জলঢাকা আঃলীগে কোন্দল

বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বিকাল ০৫:১৬

বিশেষ প্রতিনিধি॥ অসংগঠিত ও এলোমেলো অবস্থায় পড়েছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার সকল অঙ্গসংগঠন। দলীয় কোন্দলে এখানে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন গুলোতে বার বার হোচট খাচ্ছে দলীয় প্রার্থীরা। গত ৩০ জানুয়ারী তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচন এর একটি বড় উদাহরণ। জলঢাকায় নেই উপজেলা আওয়ামীলীগের কোন কার্যালয়। পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়েই বসেন উপজেলার নেতারা। সরেজমিনে গেলে জানানো হয়, তৃতীয় ধাপে গত ৩০ জানুয়ারী/২০২১ জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচনের ভোটে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী জলঢাকা উপজেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. মোহসীন শুধু পরাজিত হননি- রিতিমত তাকে জামানত হারাতে হয়েছে। জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা কৃষকলীগের সহ সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৭৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দী বিএনপির প্রার্থী বর্তমান মেয়র ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ১০ হাজার ৬০৮ ভোট পান। আর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মোহসীন নৌকা প্রতীকে মাত্র ৭৬৫ ভোট, জাতীয় পাটি মনোনীত প্রার্থী মোছা. আফরোজা পারভীন লাঙ্গল প্রতীকে ৪৪ ভোট এবং দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাবিনা আক্তার মুঠোফোন প্রতীকে ১২২ ভোট ও জিয়াউর রহমান চৌধুরী জগ প্রতীকে ৫৮৫ ভোট পেয়েছেন। ফলে চারজন মেয়র প্রার্থী তাদের জামানত খুয়িছেন। আওয়ামীলীগের তৃণমুল কর্মীরা বলছেন, দলের ভেতর নেতাদের একের প্রতি অন্যের অবিশ্বাসসহ নানা কারনে জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। জলঢাকা পৌরসভার মোট ৩৩ হাজার ৬৩৪ জন ভোটার এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত পরাজিত প্রার্থী মো. মোহসীন বলেন, জলঢাকা পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর হুটহাট করে বেশ কিছু হিন্দু কমিউনিটির দলীয় নেতাদের দল থেকে বহিস্কার করে উপজেলা আওয়ামীলীগ। পৌরসভায় সংখ্যালঘু ভোটার সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। দলীয় ভোটার প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। এতে অনায়াসে নৌকার বিজয় ছিল। কিন্তু সংখ্যালঘু নেতাদের ফোন করে ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য বেশ কিছু আওয়ামীলীগ নেতা চাপ দেন। দলের প্রার্থীকে পরাজিত করতে যা যা করতে হয় তারা সেটাই করেছেন। ফলে হিন্দু কমিউনিটির সব ভোট চলে যায় বিরোদ্রী প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আঃলীগের প্রার্থী হয়ে গোলাম মোস্তফা নির্বাচিত হওয়ার পর এখানে দলের বিভক্তি প্রকাশ্য হয়। নিয়মিত কাউন্সিল না হওয়ায় নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়ে। দলের কারও প্রতি কারও বিশ্বাস নেই। এর মাঝখানে আমি নির্বাচন করলাম। তারা আমাকে কেউ বলেন, পুর্ব দিকে যাও, কেউ বলেন পশ্চিমে যাও। আমাকে প্রার্থী করে নেতারা চরকির মতো ঘুরালো আর দলের ভাবমূর্তি বিনস্ট করলো। জলঢাকা পৌর আওয়ামী লীগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দীক বলেন, ২০০৪ সালে ২৩ নভেম্বর জলঢাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে আনছার আলী মিন্টু সভাপতি এবং সহীদ হোসেন রুবেল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর পর ১৭ বছর পার হলেও আর কোনো কাউন্সিল হয়নি। নেতা-কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ কাউকে বিশ্বাস করেন না। তিনি জানান, ২০১৫ সালে পৌরসভা নির্বাচনে এবং সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারেননি। এবার পৌর সভা ভোটে জামানত হারাতে হয়েছে। তাদের মতে নিয়মিত কাউন্সিলের মাধ্যমে দলকে সু-সংগঠিত করতে না পারলে এখানে বার বার পরাজয় বরণ করতে হবে। ৩০ জানুয়ারীর পৌর নির্বাচন এর একটি বড় উদাহরণ। তৃণমুল নেতাকর্মীরা বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে মাত্র ৫টিতে দলের হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। বাকী ৬টিতে পরাজিত ঘটে। তারা বলেন ইউনিয়নের ভোটেও তারা কান্ডকারখানা করতে ছাড়েননি। ফলে শুরু থেকে এ পর্যন্ত জলঢাকা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী যেমন মেয়র হতে পারেননি, তেমনি উপজেলা নির্বাচনেও একই দশা। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সহীদ হোসেন রুবেল বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার কারনে এমনটি হয়েছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম দলের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে। তার মতে প্রার্থী সিলেকশনে আমাদের ভুল ছিল। উনার (প্রার্থীর) জনসম্পৃক্ততা ছিল না। কাউন্সিল না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা চাইলে কাউন্সিল হবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied