আর্কাইভ  শনিবার ● ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ● ৩ ফাল্গুন ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঘন কুয়াশায় আর কনকনে শীতে লালমনিরহাটে জনজীবন বিপর্যস্ত, বেড়েছে জনদুর্ভোগ

শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, বিকাল ০৬:৫৯

Ad

Advertisement

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:  ঘন কুয়াশায় আর কনকনে শীতে লালমনিরহাটে জনজীবন বিপর্যস্ত। তীব্র শীতে বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। কয়েকদিন থেকে সূর্যের দেখা না থাকায় হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের অনুভূতি বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। সব থেকে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে শিশু, বয়বৃদ্ধরা নদীপাড়ের চরাঞ্চলের মানুষজন। কুয়াশার চাদরে সারাদিন ঢাকা থাকছে চারদিক। ফলে রাতের পাশাপাশি দিনভর অনুভূত হয় শীতের। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারী) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হওয়ার তথ্যটি জানিয়েছেন রাজারহাট আবহাওয়া অফিস।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কে ধীর গতিতে চলাচল করছে যানবাহন। কনেকনে ঠান্ডায় শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে আছেন হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবি মানুষজন। দেখা গেছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাস এবং বৃষ্টির মতো কুয়াশার কনায় বেশি কষ্টে পড়েছে মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখিরাও।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা রাজপুর ইউনিয়নের শিক্ষক রেজাউল করিম (৫২) জানান কয়েকদিন থেকে কুয়াশার সাথে ঠান্ডা অনেকটাই বেশি পড়েছে। বর্তমানে দিনের বেলা তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা ব্যাপক হারে কমতে থাকে। ফলে দিন ও রাতে সমান শীত অনুভূত হয়।

মোগলহাট ইউনিয়নের ধরলা চরের দিনমুজুর করিম হাওলাদার (৬০) বলেন, ঠান্ডায় সকাল সকাল কাজে যোগ দিতে কষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে দিনে ও রাতে একই পরিমাণ শীতের তীব্রতা। আজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেলেও প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে কাজে যেতে পারছি না।

একই এলাকার ভ্যান চালক রফিক মিয়া (৪২) জানান, শীত বলেন আর গরমই বলেন পেটের তাগিদে ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতে হয়। তাই এই শীতে কষ্ট হলেও নিজের ও পরিবারের জীবিকার তাগিদে ভোরেই ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়েছে। অন্যান্য দিনের থেকে আজকে ঠান্ডাটা একটু বনশি পড়েছে। এত বেশি ঠান্ডায় ভ্যানে যাত্রীরা উঠতে চায় না। তবুও বের হয়েছি।

এদিকে,লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সামিরা হোসেন চৌধুরী বলেন, শীতের কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রোগীর সংখ্যা একটু বেশিই আসছে হাসপাতালে। বিশেষ করে বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। বর্তমানে যেসব রোগীর অবস্থা খুব ক্রিটিক্যাল আমরা শুধু তাদেরকেই ভর্তি নিচ্ছি। এখানে যারা ভর্তি রয়েছেন তাদের বেশির ভাগই সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত । এছাড়াও অনেকের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও খিচুনি রয়েছে।  সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এ ঠাণ্ডায় যথাসম্ভব গরম পানি পান করতে হবে। আর অসুস্থ হলে তাজা ফলমূলের রস, শাকসবজি ও পুষ্টিকর খাবার বেশি বেশি করে খেতে হবে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ঠান্ডার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি আমাদের চলমান রয়েছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় শীতার্ত অসহায় মানুষকে শীতবস্ত্র বিতরন করা হচ্ছে। শীতবস্ত্র যথেষ্ট মুজুত রয়েছে তারপরেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আরো চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন


Link copied