বিশেষ প্রতিনিধি॥ নীলফামারীর ডোমার মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে চলছে ডিগ্রি (পাশ) তৃতীয় বর্ষের চুড়ান্ত পরীক্ষা (ফাইনাল)। ওই পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে পরীক্ষার্থীদের আসনবিন্যাসে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লতিফুল মোন্তাকীমের বিরুদ্ধে।
এঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন ডোমার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে ওই কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। তিন কর্মদিবসের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে অধ্যক্ষের কাছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকালে মুঠোফোনে ডোমার মহিলা ডিগ্রি কলজেরে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) লতিফুল মোস্তকীমের সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি দুইদিন ধরে রংপুরে। আমার শাশুড়ি অসুস্থ । চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছি। কারন দর্শানোর নোটিশ সর্ম্পকে আমি অবগত নই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত ওই পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারি একটি সংস্থা থেকে প্রাপ্ত গোপনীয় তথ্যের প্রেক্ষিতে কলেজের দুইজন শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার অনুরোধ করা হয়। সে প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ওই দুই শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার অঙ্গীকার করেন। এরপরও তাদের একজনকে কেন্দ্রের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অপরজনকে কক্ষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া ওই দিনের আসন বিন্যাস পর্যবেক্ষন করে দেখা গেছে ২২৬১৩৫৩, ২২৬১৩৫৫, ২২৬১৩৭৮, ২২৬১৩৮০, ২২৬১৩৮১ রোল নম্বরের পরীক্ষার্থীদের ১০২ নম্বর কক্ষে না রেখে সিরিয়াল ভঙ্গ করে ১০৩ নম্বর কক্ষে আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা অস্বাভাবিক।
ওই ডিগ্রি পরীক্ষা কেন্দ্রের তথ্য মতে সেখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৩ জন। গত ২৫ নভেম্বর ইংরেজী আবশ্যিক বিষযের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পরীক্ষা। সেদিন পরীক্ষার্থীদের আসন বিন্যাস করা হয় তিনটি কক্ষে। এরমধ্যে ১০১ নম্বর কক্ষে ৪৩ জন, ১০২ নম্বর কক্ষে ৩৫ জন এবং ১০৩ নম্বর কক্ষে ২৫ জন। অধ্যক্ষের স্বাক্ষর করা ২৫ নভেম্বর ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষার আসনবিন্যান থেকে দেখা গেছে ১০২ নম্বর কক্ষে রোল নম্বর শুরু হয়েছে ২২৬১৩৪৩ থেকে। ৩৫ সংখ্যার কক্ষে শেষ হওয়ার কথা ২২৬১৩৭৭ রোল নম্বরে। কিন্তু সেখানে সর্বশেষ রোলনম্বর দেখা গেছে ২২৬১৩৮২ পর্যন্ত। কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখিত পাঁচ পরীক্ষার্থীকে বিশেষ সুবিদা দিতে সিরিয়াল ভঙ্গ করে অন্য কক্ষে নেওয়ার কারণে ওই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অচ্ছিুক একাধিক অভিভাবক জানান, কেন্দ্র থাকার সুবাদে বিভিন্ন পরীক্ষায় অধ্যক্ষের যোগসাযোগে অনৈতিকভাবে সুবিধা করে দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নামে কলেজের একটি চক্র। সে চক্রটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শ উপেক্ষা করে এবারও সেটিই করেছেন। একাজে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন তারা।