আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ৪ নভেম্বর ২০২৫ ● ২০ কার্তিক ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ৪ নভেম্বর ২০২৫
আগামী সপ্তাহে শেখ হাসিনার বিচারের রায় হবে : মাহফুজ আলম

আগামী সপ্তাহে শেখ হাসিনার বিচারের রায় হবে : মাহফুজ আলম

বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যেসব নারী প্রার্থীরা

বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যেসব নারী প্রার্থীরা

রংপুর বিভাগে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

রংপুর বিভাগে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

৩৯ বছর আগে হারানো আসন উদ্ধারে রংপুরে ৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থী যারা

৩৯ বছর আগে হারানো আসন উদ্ধারে রংপুরে ৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থী যারা

সংসদ নির্বাচন

ধানের শীষ পেলেন ১০ নারী

সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫, রাত ১১:০৬

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: জুলাই সনদের সুপারিশ মেনেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনশ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশে নারী প্রার্থী দিচ্ছে বিএনপি। সোমবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন। তার মধ্যে ১২ আসনে ১০ নারীর নাম রয়েছে।

তাদের মধ্যে কেবল বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্য তিনটি আসন ঘোষণা করা হয়েছে। আসনগুলো হচ্ছে দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১। অন্য ৯টি আসনে রয়েছে ৯ জন নারী নেত্রী। 

সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল বিএনপি। সে সময় ধানের শীষের হয়ে লড়েছিলেন ১৪ নারী নেত্রী।

জুলাই সনদে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ প্রস্তাবে সায় দিয়েছে বিএনপিসহ ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোট। আর নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে তিনটি দল ও জোট। এর বাইরে নারীদের সংরক্ষিত যে ৫০ আসন রয়েছে, তা বহাল রেখে সংবিধানের ৬৫(৩) অনুচ্ছেদে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার কথা বলা হয়েছে জুলাই সনদে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোর সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জন করার কথা ছিল ২০২০ সালের মধ্যে। তবে তা না পারায় ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।

খালেদা জিয়া লড়বেন তিন আসনে
আইন অনুযায়ী, একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রার্থী হতে পারেন। যদিও এটা আগে ছিল পাঁচটি আসন। ২০০৮ সালে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী এনে তিনটির বেশি আসনে প্রার্থী হতে না পারার আইন করা হয়।  

এই আইন অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে খালেদা জিয়ার জন্য তিনটি আসন রাখা হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়া পাঁচটি আসনেও নির্বাচন করেছেন; কখনও হারেননি। খালেদা জিয়ার পৈত্রিক আদি নিবাস ফেনীতে। আর তাঁর স্বামী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৈত্রিক বাড়ি বগুড়ায়। খালেদা জিয়ার জন্ম, শৈশব ও পড়াশোনা দিনাজপুর শহরে হলেও এর আগে তিনি এখান থেকে প্রার্থী হননি।

অন্য যেসব নারী প্রার্থী
খালেদা জিয়ার বাইরে আর যেসব নারী নেত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন- গুম হওয়া পরিবারগুলোর প্রতিবাদের প্ল্যাটফর্ম ‘মায়ের ডাক' এর সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলিকে ঢাকা-১৪ আসনের প্রার্থী করেছে বিএনপি। ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর তাঁর ভাই ঢাকার তৎকালীন ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম নয়নকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে র‌্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময়ই সুমনের মা হাজেরা খাতুনকে কেন্দ্র করে তার পরিবারের উদ্যোগে গড়ে ওঠে ‘মায়ের ডাক' নামের সংগঠনটি।

মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী মুন্নুর চেয়ারম্যান। আফরোজা খানম রিতাকে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের প্রার্থী করা হয়েছে। রিতার বাবা হারুনার রশীদ খান মুন্নু এ শিল্পগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনাকে প্রয়াত স্বামীর আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১২ সালে গুমের শিকার হন ইলিয়াস। এরপর থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হন তাঁর স্ত্রী লুনা।

বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলামকে ফরিদপুর-২ আসনের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। শামার বাবা প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমান এই আসনের কয়েকবারের এমপি ছিলেন। ১৯৮৬-৮৮ সালে বিএনপির মহাসচিব কেএম ওবায়েদ বিএনপির শাসনামলে একাধিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। 

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং মহিলা দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক চৌধুরী নায়াব ইউসুফকে ফরিদপুর-৩ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর বাবা প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যানের পাশাপাশি একাধিকবার মন্ত্রী ছিলেন। নায়াবের দাদা ইউসুফ আলী চৌধুরী ছিলেন মুসলিম লীগ নেতা এবং প্রপিতামহ চৌধুরী মঈজউদ্দীন বিশ্বাস ছিলেন জমিদার।

সাবেক এমপি ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টোকে ঝালকাঠি-২ আসনের প্রার্থী করছে বিএনপি। তাঁর স্বামী সাবেক সাংসদ জুলফিকার আলী ভুট্টো মারা গেলে ইলেন ১৯৯৯ সালের উপনির্বাচনে এই আসনের এমপি দাঁড়িয়ে পরাজিত হন। এরপর তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আমির হোসেন আমুকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। 

বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ও মিডিয়া সেলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফারজানা শারমিন পুতুলকে নাটোর-১ এর প্রার্থী করছে দলটি। হাইকোর্টের এই আইনজীবী অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্নীতি দমন কমিশনের সংস্কার কমিশনের সদস্য ছিলেন। তাঁর বাবা প্রয়াত ফজলুর রহমান পটল বিএনপির মনোনয়নে চারবারের এমপি ছিলেন।

শেরপুর-১ আসনের প্রার্থী হিসেবে সানসিলা জেবরিন প্রিয়াংকার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর মেয়ে তিনি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী ছিলেন প্রিয়াংকা।

এছাড়া যশোর-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হচ্ছেন সাবিরা সুলতানা মুন্নী। ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য তিনি। এছাড়া স্থানীয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। মুন্নীর স্বামী নাজমুল ইসলাম একসময় ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও যশোর জেলা বিএনপির অর্থবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০১১ সালে ঢাকায় অপহরণ হওয়ার পর নাজমুলের লাশ মিলেছিল গাজীপুরে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, নারীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে সরাসরি ভোটের জন্য দলীয়ভাবে ৫ শতাংশ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন


Link copied