আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ১১ পৌষ ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
দেশে ফিরে তারেক রহমান তিন দিন কোথায় যাবেন, কী করবেন

দেশে ফিরে তারেক রহমান তিন দিন কোথায় যাবেন, কী করবেন

৭৬১ কোটি টাকার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ভোটের মাঠে কাজী রফিক!

৭৬১ কোটি টাকার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ভোটের মাঠে কাজী রফিক!

৮ম শ্রেণির ৬৭ শতাংশ বই প্রস্তুত হয়নি, প্রাথমিকের শতভাগ সরবরাহ

মাধ্যমিক বিদ্যালয়
৮ম শ্রেণির ৬৭ শতাংশ বই প্রস্তুত হয়নি, প্রাথমিকের শতভাগ সরবরাহ

দিনাজপুর-সদর আসনে খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ 

দিনাজপুর-সদর আসনে খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ 

এসব দেখার কেউ নেই
পোস্টারে ছেয়ে গেছে প্রধান সড়ক অলিগলি দেয়াল

নির্বাচনি পোস্টারের বেআইনি মহোৎসব

বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, রাত ০৮:০৯

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাজধানীজুড়ে চলছে নির্বাচনি পোস্টারের বেআইনি মহোৎসব। প্রধান সড়ক, অলিগলি, বৈদ্যুতিক খুঁটি, দেয়াল, সেতুর পিলার থেকে ফুটওভার ব্রিজ সর্বত্র পোস্টারের ছড়াছড়ি। লাগানো হচ্ছে প্লাস্টিকের অপচনশীল ব্যানারও। নির্বাচনি আচরণবিধি উপেক্ষা করে প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের লাগানো পোস্টার-ব্যানারে ঢাকার দৃশ্যপট আবারও রূপ নিয়েছে বিশৃঙ্খল বিজ্ঞাপন নগরীতে। আচরণবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পোস্টার-ব্যানার লাগানো হচ্ছে দেশের অন্যান্য এলাকাতেও। এসব দেখার কেউ নেই।

ইসি ঘোষিত নতুন আচরণবিধি অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে পোস্টার ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পরিবেশ রক্ষা, নগর সৌন্দর্য বজায় রাখা এবং ব্যয়বহুল ও ক্ষমতাভিত্তিক প্রচারণা   ঠেকাতেই এই সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। এ ছাড়া রেক্সিন, পলিথিন, প্লাস্টিকের মতো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর অপচনশীল দ্রব্য দিয়ে তৈরি কোনো প্রচারপত্র, লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রার্থী নিজে বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচনি এলাকায় অবস্থিত দালান, দেওয়াল, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি, সরকারি স্থাপনা ও যানবাহনে লিফলেট বা ফেস্টুন সাঁটাতে পারবে না। নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে জেল-জরিমানা ছাড়াও প্রার্থিতা বাতিলের মতো সাজাও রয়েছে। মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। অনেক এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে পোস্টার লাগানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

এদিকে লাগানো এসব পোস্টারের কোনোটির নিচে সৌজন্যে দলের কোনো নেতা-কর্মীর নাম লেখা রয়েছে। রয়েছে তার ছবিও। বেশির ভাগ পোস্টারের নিচে লেখা- ‘প্রচারে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ’। কোথাও আবার প্রচারে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের নাম লেখা। এমনও দেখা গেছে, পাশাপাশি একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর পোস্টার লাগানো। সবগুলোর নিচে লেখা- ‘প্রচারে : এলাকার সর্বস্তরের জনগণ’। যদিও তফসিল ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনি সব প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলতে কঠোর নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। অন্যথায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল কমিশন। তবে তফসিল ঘোষণার পর প্রায় দুই সপ্তাহ পার হতে চললেও রাজধানীর মিরপুর, কাজিপাড়া, শেওড়াপাড়া, পল্লবী, খিলগাঁও, গোড়ান, সবুজবাগ, মুগদা, জুরাইনসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, ভাটারা, খিলক্ষেত, উত্তরা- প্রায় সব এলাকাতেই দেয়ালজুড়ে নির্বাচনি পোস্টার চোখে পড়ছে। ঢাকার বাইরে থেকেও নির্বাচনি পোস্টারের ছবি তুলে পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধিরা।

রাজধানীবাসী বলছেন, নিষেধাজ্ঞা থাকলে তা বাস্তবায়নের দায়িত্বও ইসির। চোখের সামনে নিয়ম ভাঙলেও জরিমানা বা পোস্টার অপসারণের উদ্যোগ খুবই সীমিত। এসব পোস্টার নাকি এলাকার সর্বস্তরের জনগণের পক্ষে লাগানো হচ্ছে। এই সর্বস্তরের জনগণ কারা? একই এলাকায় তিনজন প্রার্থীকেই এমপি হিসেবে দেখতে চাইছে সর্বস্তরের জনগণ! বিষয়টা হাস্যকর! পরিবেশবিদদের মতে, এই পোস্টার সংস্কৃতি শুধু আইন লঙ্ঘনই নয়, এটি পরিবেশের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। কাগজ, আঠা ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বর্জ্য বাড়াচ্ছে, নগরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে, সম্পদের অপচয় বাড়ছে।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, আচরণবিধি যদি শুরুতেই কার্যকরভাবে প্রয়োগ না হয়, তাহলে নির্বাচনের সমতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। এ ছাড়া এটি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আইন ভাঙার একটি নেতিবাচক দৃষ্টান্ত তৈরি করছে। নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা পোস্টারে ছেয়ে গেছে এমন খবর প্রচার হচ্ছে। কিন্তু, আমরা অপসারণও করছি, সেটা প্রচার হচ্ছে না। আচরণবিধি লঙ্ঘনে প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিচ্ছি। নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে এক প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন


Link copied