স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ বুড়ি তিস্তা নদীর অবৈধ দখলদারদের দ্বারা নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার প্রতিবাদ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং হামলাকারীদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের প্রকৌশলীরা। সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে রংপুর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি এবং নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সভা শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধন চলাকালিন বক্তব্য রাখেন রংপুর উত্তারঞ্চল পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবর রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম স¤পাদক মো. ফরিদুল ইসলাম, নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস বাংলাদেশ (আইডিইবি) নীলফামারী জেলার সভাপতি ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মুরাদ হোসেন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, গত ৮ অক্টোবর সকালে বুড়ি তিস্তা নদীর জলাধার পুনঃখনন কাজের বিষয়ে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ কেয়ার বাজার নামক স্থানে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। আলোচনার এক পর্যায়ে এলাকার ৪০-৫০ জনের একটি অবৈধ দখলদারদের বাহিনী পাউবোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জুলফিকার রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইবনে সাঈদ শাওন, গাড়ি চালক মো. আবু তালেব ও গেট অপারেটর মো. মাহমুদ হাসান গুরুতর আহত হন। হামলাকারীরা সবাই বুড়িতিস্তা নদীর অবৈধ দখলদার।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর নীলফামারীর ডিমলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কালিগঞ্জের কুঠিরডাঙ্গা বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পের রিজার্ভার বা জলাধার খনন কাজে সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে ১৫০-২০০ জন আমাদের উপর হামলা করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হলেও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন অবৈধ দখলদার ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। রাষ্ট্রের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর বার বার হামলার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরব ভূমিকা পালন করছে। কর্মক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ অতিদ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। যদি না হয় তাহলে আমরা প্রকোশলীরা কর্মবিরতি সহ আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেব।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় রংপুর উত্তারঞ্চল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) মোঃ আহসান হাবীব, তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী (চঃদাঃ) কৃষ্ণকমল চন্দ্র সরকার, নীলফামারী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাজেরুল ইসলাম, গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাকিউজ্জামান, জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকোশলী মোঃ ফিরোজ হাসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সৈয়দপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান, ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী, নীলফামারীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম, সৈয়দপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবু সৈয়দ মোহাম্মদ আমিনুর রশিদ, মোঃ রাকিবুল হাসান সহ রংপুর বিভাগের পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত সকল নির্বাহী প্রকৌশলী ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
উত্তর বাংলা / নী.নি