আর্কাইভ  সোমবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ● ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ১৭ নভেম্বর ২০২৫
‘অন্তরটা ঠান্ডা হৈল’! হাসিনার ফাঁসির সাজা শুনে খুশি রবার বুলেটের সামনে বুক পেতে দেওয়া আবু সাঈদের বাবা

‘অন্তরটা ঠান্ডা হৈল’! হাসিনার ফাঁসির সাজা শুনে খুশি রবার বুলেটের সামনে বুক পেতে দেওয়া আবু সাঈদের বাবা

বিবাহবার্ষিকীর দিনে মৃত্যুর ফয়সালা হাসিনার

বিবাহবার্ষিকীর দিনে মৃত্যুর ফয়সালা হাসিনার

যেসব অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড হলো শেখ হাসিনার

যেসব অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড হলো শেখ হাসিনার

শেখ হাসিনার রায়ে সন্তুষ্ট আবু সাঈদের পরিবার

শেখ হাসিনার রায়ে সন্তুষ্ট আবু সাঈদের পরিবার

যেসব অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড হলো শেখ হাসিনার

সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, বিকাল ০৫:১৮

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  দেশের ইতিহাসে প্রথম কোন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে এই রায়কে একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতেই এই রায় ঘোষণা করেছে ট্রাইবুনাল।  গণঅভ্যুত্থানের সে উত্তাল জুলাইয়ের এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারে ঘোষণা হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ সাজা

মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। এই রায় শুধু রাজনৈতিক ইতিহাসে নয় দেশের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসেও এক টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে থাকবে বলেও মনে করা হচ্ছে।  গত বছরের জুলাই আন্দোলনে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার শুরু করতে নতুন কাঠাময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। চলতি বছরের ২৫ মে থেকে ৪ অক্টোবর মাত্র চার মাসে যেসব মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হয়েছে তার মধ্যে জুলাই গণভুত্থানের সময় সংঘঠিত হত্যাকাণডের মামলা আছে আটটি। এর মধ্য থেকে পাঁচটির অভিযোগ গঠন করে বিচারকার্য শুরু করে ট্রাইবুনাল।
 
এই পাঁচটি বিচারধীন মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। আর এই মামলার রায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণড দেওয়া হয়। একই দন্ডাদেশ দেওয়া হয় আসাদুজ্জামান খান কামালকেও। রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল। অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মোঃম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মহিতুল হকিনাম চৌধুরী।
 
মামলার শুনানিীতে রাষ্ট্রপক্ষ বারবার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘঠিত সকল মানবতা বিরোধী অপরাধের পরিকল্পনাকারী, হুকুমদাতা ও সুপিরিয়র কমান্ডার। প্রসিকিউশনের দাবি তিনি শুধু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই নেননি। বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলের সশস্ত্র শাখাকে নির্দিষ্ট নির্দেশও দিয়েছিলেন। [মিউজিক]মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল দুজনেই ভারতে পলাতক। একমাত্র গ্রেপ্তার হওয়া আসামী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দী দেন। যা মামলাটির মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এ বছরের ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে আসামিীদের বিরুদ্ধে আনা হয় মোট পাঁচটি অভিযোগ। প্রথম অভিযোগে বলা হয় ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী ছাত্রদের রাজাকার, রাজাকারের বাচ্চা বলা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বক্তব্যের পরপরই শুরু হয় নিরীহ মানুষ ও ছাত্রদের উপর পদ্ধতিগত আক্রমণ। এতে যুক্ত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি এবং শাসকদলের সশস্ত্র অংশ।
 
দ্বিতীয় অভিযোগটি সবচেয়ে গুরুতর। প্রতিবেদন অনুযায়ী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেই আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও আইজিপি মামুন। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয় রংপুরের বেগম রোকিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে কেন্দ্র করে আসামীদের বিরুদ্ধে প্ররোচনা, উস্কানি, ষড়যন্ত্র সহায়তার অভিযোগ আনা হয়। চতুর্থ অভিযোগে বলা হয় গত বছরের পাঁচ আগস্ট ঢাকার চাঙ্কারপুল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ছয় জন নিহত হন। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাকে সরাসরি মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পাঁচ নাম্বার অভিযোগে জীবিত একজনসহ মোট ছয় জনকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগও তোলা হয়। নির্দেশ, প্ররোচনা, সহায়তা এবং ষড়যন্ত্র। সবই যুক্ত করা হয় তিন আসামির বিরুদ্ধে।
 
এসব মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আন্দোলনকারী আহত প্রত্যক্ষদর্শী চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন। ট্রাইবুনালে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয় শেখ হাসিনার কথোপকথনের অডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং অভিযানস্থল থেকে উদ্ধার করা গুলি। মানবতা বিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইবুনালে চলমান মামলার সংখ্যা চারটি। আজ ঘোষিত জুলাই গণভুত্থান মামলায় তিনি মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন। আরো দুটি মামলায় অভিযোগ ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত শাসন আমলে ঘুমের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধ। এই দুটি মামলার শুনানিী হবে ২৩ নভেম্বর। [মিউজিক]আরেকটি মামলা ২০১৩ সালে ছাপড়াচত্র অভিযানের সময় হেফাজত নেতাকর্মীদের হত্যা নির্যাতনের অভিযোগ। সেই মামলায় ২১ জন আসামী। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়িয়ে আগামী ১২ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন


Link copied