আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ● ১২ পৌষ ১৪৩২
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’—১৬ মিনিটের ভাষণে যা বললেন তারেক রহমান

‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’—১৬ মিনিটের ভাষণে যা বললেন তারেক রহমান

তারেক রহমান সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী

বিবিসি-রয়টার্সের প্রতিবেদন
তারেক রহমান সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী

গুলশানের ১৯৬ নম্বরে তারেক রহমান

গুলশানের ১৯৬ নম্বরে তারেক রহমান

বঙ্গোপসাগরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

বঙ্গোপসাগরে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

রংপুরে বেড়েছে নারী ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যা

বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকাল ০৭:২২

Advertisement

মমিনুল ইসলাম রিপন: ২০২৫ সালের হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী রংপুর জেলার সংসদীয় ছয়টি আসনে এবার ভোটার বেড়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৭ জন। সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৩২ হাজার ৫০৫ জন। গত নির্বাচনের মতো এবারও নারী ভোটার বাড়ার সঙ্গে ভোট কেন্দ্র বেড়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৩২ হাজার ৫০৫ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ছিলেন ১২ লাখ ২০ হাজার ৩৯৪ জন, পুরুষ ভোটার ছিলেন ১২ লাখ ১২ হাজার ৮৭ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন ২৪ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ছিল ৮৫৮টি।

এবার আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের আট উপজেলা মিলে ভোটার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৯৯ হাজার ২০২ জনে। এর মধ্যে নারী ভোটার ১৩ লাখ ৬ হাজার ৩৩৩ জন, পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৯২ হাজার ৮৩৮ জন। এছাড়া, তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৩১ জন। জেলার ছয়টি আসনে মোট কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭৩টিতে।

২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবার ভোটার সংখ্যা বেড়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৭ জন। বিশেষ করে নারী ও নতুন ভোটার বৃদ্ধির হার নির্বাচনকে ঘিরে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। নতুন ভোটারদের সিংহভাগই তরুণ। যারা প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ এবং পরবর্তীতে অনলাইনে নিবন্ধনের সুযোগ থাকায় ভোটার সংখ্যা বেড়েছে। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে মৃত ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়াও যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।

এবারের নির্বাচনকে ঘিরে ব্যতিক্রমী একটি চিত্র দেখা যাচ্ছে। নতুন ভোটারদের বড় একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয়। এ কারণে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তারুণ্যের ভোটকে টার্গেট করে প্রচার-প্রচারণাতেও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে জোর দিচ্ছেন। আর ভোটাররা শুধু উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নয়, বরং শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে এমন প্রার্থী বাছাইয়ের কথা বলছেন।

সব মিলিয়ে, ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি, কেন্দ্র সম্প্রসারণ এবং তরুণ ভোটারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। এই তিনটি বিষয় রংপুরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অন্য সময়ের তুলনায় আরও গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যতিক্রমী করে তুলেছে। বিশেষ করে বিগত সময়ের বিতর্কিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের পর এবার একসঙ্গে অনেকগুলো দলের প্রার্থীদের সরব পদচারণায় ভোটের মাঠে উৎসবময় পরিবেশ ফিরতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন ভোটারসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এদিকে, রংপুরের ছয়টি আসনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, বাসদ মাকর্সবাদীসহ বিভিন্ন দলের মনোনীত প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু করেছেন।এতে প্রার্থীসহ দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।  

আসনভিক্তিক ভোটার ও কেন্দ্র

গঙ্গাচড়া উপজেলা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১ থেকে ৯ নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত রংপুর-১ আসন। এর আগে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসনটিতে গঙ্গাচড়া উপজেলা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ১ থেকে ৮টি ওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত ছিল। তখন ভোটার ছিল ৩ লাখ ৩২ হাজার ২১৯ জন। এরমধ্যে দুইজন ছিলেন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার। ভোট কেন্দ্র ছিল ১২৩ টি।

এবার এই আসনের আংশিক পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ড আসনটিতে যুক্ত করা হয়েছে। এতে মোট ভোটার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ২২৭ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৪ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪ জন। মোট ভোট বেড়েছে ৪৩ হাজার ৮টি। এখানে মোট কেন্দ্র ১৩৯টি।

জেলার বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে রংপুর-২ আসন গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৪৬ জন। এখানে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন ৮ জন। কেন্দ্র ছিল ১৩৬টি।

এবার রংপুর-২ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯২১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬২৫ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯২ হাজার ২৮৭ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ০৯ জন। ভোট বেড়েছে ২৩ হাজার ৮৭৫ টি। কেন্দ্র সংখ্যা ১৩৭টি।

রংপুর সিটি করপোরেশনের ১০ থেকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রংপুর-৩ আসন। গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৮ জন। এই আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন ২ জন। গত নির্বাচনে কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১৭৫টি।

এবার ভোট বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৮ হাজার ২২৪ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮৪৯ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫২ হাজার ৩৭০ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৫ জন। ভোট বেড়েছে ১০ হাজার ৪৫৬টি। সিটির ৯নং ওয়ার্ডটি রংপুর-১ আসনে যুক্ত করায় কেন্দ্র কমে দাঁড়িয়েছে ১৬৯টিতে।

এদিকে কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলা নিয়ে গঠিত রংপুর-৪ আসন। ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৩৮৩ জন। এরমধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন ৫ জন। কেন্দ্র ছিল ১৬৩টি।

এবার ভোটার বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৬ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৮৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৫ জন। এই আসনে মোট ভোটার বেড়েছে ৩১ হাজার ৫২৩ জন। তবে কেন্দ্র সংখ্যা রয়েছে অপরিবর্তিত।

মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রংপুর-৫ আসন। গত নির্বাচনে এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার ৩৩৫ জন। এরমধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ছিলেন ৪ জন। কেন্দ্র ছিল ১৫০টি।

এবার এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ১৮৯ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭২৩ জন, পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩২ হাজার ৪৬২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৪ জন। ভোটার বেড়েছে ২৮ হাজার ৮৫৪ জন। আর দুটি কেন্দ্র বেড়ে হয়েছে ১৫২টি।

পীরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন-৬। এই আসনে রয়েছে ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। নানা কারণে এ আসনটি রংপুর অঞ্চলের মধ্যে বেশ আলোচিত। গত নির্বাচনে এ আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৫৪ জন। ভোটকেন্দ্র ছিল ১১১টি।

এবার ভোট বেড়ে হয়েছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৫ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার হলেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬২৯ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৬ হাজার ১০২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার অপরিবর্তিত ৪ জন। কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৩টি। এই আসনে এবার ভোট বেড়েছে ২৫ হাজার ৯৮১টি।

ইসি ঘোষিত তফসিল

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের সময় ৫ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। রিটার্নিং কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে প্রতীক বরাদ্দ করবেন ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি। প্রচার চালানো যাবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।

মন্তব্য করুন


Link copied