আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

রওশন ও কাদের স্বপদেই থাকছেন, বিপাকে রাঙ্গা

বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২, সকাল ০৯:২৮

Advertisement Advertisement

ডেস্ক: এখনই বিরোধীদলীয় নেতা হতে পারছেন না জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। এ পদে বহাল থাকবেন রওশন এরশাদ। 'সরকারি মধ্যস্থতায়' তাঁরা নিজ পদে থাকলেও বিপাকে মসিউর রহমান রাঙ্গা। তাঁকে সরিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদকে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মনোনীত করে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছে জাপা। পদ রক্ষায় রাঙ্গা আদালতের স্থগিতাদেশের কথা জানিয়ে স্পিকারকে পাল্টা চিঠি দিয়েছেন।

জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু যদিও বলেছেন, এসবকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তবে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের দুইজন জ্যেষ্ঠ নেতা এবং সরকারি সংস্থা জি এম কাদেরসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জি এম কাদের বর্জন করলেও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিএনপিবিহীন নির্বাচনে অংশ নেন রওশন এরশাদ। তাই সরকার তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীল। বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশনকে না সরাতে জি এম কাদেরকে 'পরামর্শ' দিয়েছে সরকার। সরকারের কড়া সমালোচনাকারী হিসেবে আবির্ভূত হওয়া জি এম কাদেরও নির্বিঘ্নে জাপার নেতৃত্বে থাকতে পারবেন।

জাপা চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, মানবিক কারণও দেখানো হয়েছে। পূর্ণ মন্ত্রী পদমর্যাদার বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে রওশন এরশাদ সরকারি খরচে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেন। তিনি এ পদে না থাকলে চিকিৎসা ব্যাহত হবে।

দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়ে রওশন ও কাদেরের লড়াইয়ে জাপা ভাঙনের মুখে পড়ে। দলীয় নেতার সমঝোতায় চেয়ারম্যান পদে কাদেরকে ও বিরোধীদলীয় নেতা পদে রওশনকে পরস্পর মেনে নেন।

তিন বছরের এ স্থিতাবস্থা মাস দুই আগে ভাঙে, থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন রওশন এরশাদ চিঠি দিয়ে 'কাউন্সিল' ডাকলে। জি এম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর এই কাউন্সিল বাতিলে রাজি না হওয়ায় রওশনকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দিতে ১ সেপ্টেম্বর স্পিকার ড. শিরীন শারমিনকে চিঠি দেয় জাপার সংসদীয় দল।

ওই দিন সংসদীয় দলের সভায় জাপার ২৬ এমপির ২৪ জন জি এম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত করেন। কিন্তু জাপার দলনেতা হিসেবে দুই মাসেও স্পিকারের স্বীকৃতি পাননি জি এম কাদের। দলীয় সূত্রের খবর, গত সোমবার স্পিকার জানিয়ে দেন বিরোধীদলীয় নেতার পদে বদল চায় না সরকার।

গতকাল জি এম কাদের বলেছেন, 'স্পিকারের আশ্বাসে সংসদে ফিরেছে জাতীয় পার্টি। বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচনের বিষয়ে স্পিকার সময় চেয়েছেন। সমাধান না হলে জাতীয় পার্টির হাতে বিকল্প রয়েছে।'
স্পিকারের কাছ থেকে স্বীকৃতি না পেয়ে গত রোববার সংসদ বর্জনের ঘোষণা দেয় জাপা। সূত্রের খবর, এই ঘোষণার আধাঘণ্টা পর, রওশন এরশাদের ডাকা কাউন্সিল স্থগিত করা হয় সরকারি নির্দেশে। একই জায়গার নির্দেশে জাপাও অবস্থান বদলে সংসদে যায়।

জাপা সূত্রের খবর, সরকারের সমর্থনে রওশন এরশাদপন্থিরা কাউন্সিল করলে দলের ভাঙন নিশ্চিত। এতে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশের বিএনপির দিকে চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে দুই পক্ষকেই কিছু সুবিধা দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখছে সরকার।
তবে দলীয় সূত্রের খবর, গত দুই দিনে সরকারের তরফে বার্তা দেওয়া জি এম কাদের বিরোধীদলীয় নেতা হতে অনড় অবস্থানে থাকলে স্পিকার ১ সেপ্টেম্বরের ওই সভার চিঠি গ্রহণ না করে অধিবেশনে রুলিং দেবেন। এতে জি এম কাদেরের প্রকাশ্য পরাজয় হবে।

কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী দলনেতা নির্বাচন করে সংসদীয় দল। স্পিকার শুধু স্বীকৃতি দেন। তবে সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। গত রোববার অনুষ্ঠিত সংসদীয় দলের সভায় জাপার ২৬ এমপির ২১ জন জি এম কাদেরকে ফের সমর্থন করেন। অঙ্কের হিসাবে বিরোধীদলীয় নেতা হতে তাঁর বাধা নেই।

জাপার একাধিক নেতা জানিয়েছেন, সরকার জড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি এত সরল নেই। নেতা নির্বাচিত হতে জি এম কাদেরের অন্তত ১৪ এমপির সমর্থন লাগবে। ১ সেপ্টেম্বরের সভাকে স্পিকার বৈধতা না দিলে, আবার সভা করে ১৪ এমপির সমর্থন পাওয়া কঠিন। ইতোমধ্যে যোগাযোগ করে জাপা এমপিদের বার্তা দিয়েছে, সরকার রওশন এরশাদকেই বিরোধীদলীয় নেতার পদে চায়।

১ সেপ্টেম্বরের সভাকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে ওই মাসের ২০ তারিখ স্পিকারকে চিঠি দেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। যদিও তিনিই জি এম কাদেরকে নেতা নির্বাচনের চিঠি পৌঁছে দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে রওশন এরশাদের পক্ষ নিয়ে দলের পদ ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ পদ হারান রাঙ্গা। এ কারণে দলীয় পদ হারান জাপার সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধা। দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি গত ৪ অক্টোবর ঢাকা জেলা যুগ্ম জজ আদালতে মামলা করেন।

গত সোমবার ওই মামলায় আদালত জাপা চেয়ারম্যানের ক্ষমতা প্রয়োগের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। জিয়াউল হক মৃধা সমকালকে জানিয়েছেন, আদেশের বিস্তারিত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে জানাবেন। তবে গতকালই রাঙ্গা আদেশের কপিসহ স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, জি এম কাদের জাপা চেয়ারম্যানের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন না। তাই তিনি বিরোধীদলীয় নেতা, চিফ হুইপ পদে পরিবর্তনের সিদ্ধান্তও নিতে পারবেন না। এ বিষয়ে স্পিকারের বক্তব্য জানতে পারেনি সমকাল।

জাপা মহাসচিব বলেছেন, রাঙ্গা চিঠিকে পাত্তা দিচ্ছেন না। কাজী ফিরোজ রশীদকে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মনোনীত করে স্পিকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ পদে পরিবর্তনের জন্য স্পিকারের স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই।
আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ফখরুল ইমাম হবেন চিফ হুইপ। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ফখরুল ইমামের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর সম্মতিতে কাজী ফিরোজকে চিফ হুইপ করা হয়েছে। খবর- দৈনিক সমকাল

মন্তব্য করুন


Link copied