আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

সাংবাদিকদের জন্য বিপজ্জনক দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, শীর্ষে ফিলিস্তিন ও পাকিস্তান

বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, বিকাল ০৭:৫৯

Advertisement Advertisement

উত্তর বাংলা: চলতি বছরে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক ৯ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)। তাদের এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে নাম এসেছে বাংলাদেশের। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এই তালিকায় নাম আছে দ্বিতীয় স্থানে পাকিস্তানেরও। তবে এ বছর সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক নয়টি দেশের মধ্যে শীর্ষে আছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের নাম।
আজ বৃহস্পতিবার(১২ ডিসেম্বর) প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
'২০২৪ রাউন্ড আপ' শীর্ষক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ বছর পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রেকর্ড ৫৪ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে যুদ্ধ বা সহিংসতার চলছে এমন এলাকায়। বিশেষ করে ইরাক, সুদান, মিয়ানমার, ইউক্রেন ও গাজার যুদ্ধক্ষেত্রও রয়েছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এরকম এলাকায় সাংবাদিকদের নিহতের সংখ্যা এবারই সর্বোচ্চ (৫৭ দশমিক ৪ শতাংশ)। 

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্সের প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে ৯টি দেশের নামতালিকায় সবচেয়ে বিপজ্জনক বিবেচনায় যেসব দেশের নাম আছে–– ফিলিস্তিন (১৬ সাংবাদিক নিহত), পাকিস্তান (সাত জন), বাংলাদেশ (পাঁচ জন), মেক্সিকো (পাঁচ জন), সুদান (চার জন), মিয়ানমার (তিন জন), কলম্বিয়া (দুই জন), ইউক্রেন (দুই জন), লেবানন (দুই জন)। 
আরএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল তিবো ব্রুটিয়েন বলেন, এই সাংবাদিকরা মারা যাননি, তাদের হত্যা করা হয়েছে। যারা বন্দি, তাদের ক্ষমতাসীনরা আটকে রেখেছে। যারা নিখোঁজ, তাদের অপহরণ করা হয়েছে। এসব অপরাধ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটেছে বিভিন্ন সরকার বা পুরোপুরি দায়মুক্তি পাওয়া সশস্ত্র বাহিনীগুলোর হাতে। এসব ঘটনা বিচার না হওয়া আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। 
আরএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক অঞ্চল ছিল গাজা। বিশ্বে এ বছর যত সাংবাদিককে দায়িত্ব পালনের সময় হত্যা করা হয়েছে তার ৩০ শতাংশই ঘটেছে গাজায়, আর তাদের প্রায় সবাইকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিন এখন সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ। গত পাঁচ বছরে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে এ বছর ফিলিস্তিনে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালে অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ১৪৫ জনেরও বেশি সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে দায়িত্ব পালনকালে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে অন্তত ৩৫ জনকে। 
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ পাকিস্তান। এবছর সেখানে সাত জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। এর পরই আছে বাংলাদেশের নাম, যেখানে হত্যা করা হয়েছে পাঁচ জন সাংবাদিককে।
আরএসএফ-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, সারা বিশ্বে এখন ৫৫ জন সাংবাদিক জিম্মি অবস্থায় আছেন, তাদের ২৫ জনই ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাতে আটক। সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৭০ শতাংশ জিম্মি আছেন সিরিয়ায়। এ বছর দুই জন সাংবাদিককে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে এবং দুটি ঘটনাই ঘটেছে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের হাতে।
এছাড়া ৩৪টি দেশের প্রায় ১০০ জন সাংবাদিক এখনও নিখোঁজ রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে কারাবন্দি আছেন ৫৫০ জনেরও বেশি সাংবাদিক। গত বছরের তুলনায় এবার এই হার প্রায় সাত শতাংশ বেড়েছে। যে তিন দেশে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক কারাবন্দি সেগুলো হচ্ছে চীন (১২৪ জন), মিয়ানমার (৬১ জন) ও ইসরায়েল (৪১ জন)। 
এদিকে বিবিসি নিউজের সূত্র মতে, আরএসএফের বার্ষিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ক্রমেই অবনতি হতে দেখা যাচ্ছে। গত ৩রা মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আরএসএফ এর গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থান। আগের বছর ২০২৩ সালে বাংলাদেশ ছিল ১৬৩তম।
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি সংগঠন উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে গত তিন মাসে একাধিক বিবৃতি দেয়।
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিস ঘিরে সংঘঠিত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ২৭শে নভেম্বর রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, এমন কর্মকাণ্ড স্বাধীন 'সাংবাদিকতার পরিপন্থী এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। একই বিবৃতিতে সাংবাদিকদের ব্যাংক হিসাব জব্দ এবং হত্যা মামলার আসামি করা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
পৃথক এক বিবৃতিতে আটক সাংবাদিকদের মুক্তিও দাবি করে সংস্থাটি।
এছাড়া কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) ১০ নভেম্বর এক বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করে, ইউনূস সরকার বাংলাদেশে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করবে। হত্যা মামলায় আটক সাংবাদিকরা যেন যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার সুযোগ নিতে পারে সেটি নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করা হয় তাদের বিবৃতিতে।

মন্তব্য করুন


Link copied