আর্কাইভ  সোমবার ● ২৬ মে ২০২৫ ● ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৬ মে ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা

সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, রাত ০২:১৩

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে নানা প্রস্তাব তুলে ধরেছেন রাজনৈতিক নেতারা। রোববার বিকালে দুই ভাগে অনুষ্ঠিত হয় বৈঠক।

বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‌‘একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার দরকার ততটুকু করতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদ চলমান ষড়যন্ত্রের অংশীদার বলে দাবি করেন তিনি।’

সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘জনগণের মতামত নিয়ে সংস্কার করতে হবে।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সেক্রেটারি সাইফুল হক বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ সংকট আরও ঘনীভূত হবে। প্রধান উপদেষ্টাকে পুরো সমর্থন জানিয়ে সবার প্রতি সমান দৃষ্টিভঙ্গি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। উপদেষ্টাদের সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলেন তিনি। এছাড়া, বন্দর, করিডোর বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেন তিনি। সংস্কার করে আগামী ১ মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব।’

রাজনৈতিক দলগুলোকে এড়িয়ে চলার অভিযোগ করেন সাইফুল হক। দুইয়েক মাস সময় বেশি লাগলেও সমস্যা হবে না যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের বোঝাপাড়া থাকে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন যে তার পক্ষে কাজ করা চ্যালেঞ্জিং আর কিভাবে এই পরিস্থিতিকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায় সেটা নিয়েই বৈঠক হয়েছে। তিনি সবার একমত কামনা করেছেন। অন্তবর্তী সরকার একদিকে বিচার অন্যদিকে গণতান্ত্রিক সংস্কারের দিকে যাওয়ার যে দায়িত্ব তা পালন করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।’

জনগণ দৃশ্যমান বিচার দেখতে চায় জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচারের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা না হবার দৃঢ়তা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। নানা ধরণের অনাস্থা অস্থিতিশীলতারও জন্ম দিচ্ছে তা দূর করতে হবে। জুলাই সনদ জাতীয় সনদ হিসেবে দ্রুততম সময়ে প্রকাশ করতে হবে। জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে যেন বিভাজন তৈরি না হয় সেদিকে সরকারকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ জরুরি। নির্বাচনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট মাস বা সপ্তাহ ঘোষণার দাবি করেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, ‘রাজনীতির ইচ্ছে থাকলে সরকারের দুই উপদেষ্টার নিয়মের মধ্যে থেকেই সরে যাওয়া উচিত। প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ করে চলে যাওয়া আলোচনার অংশই হতে পারে না দেশের এই পরিস্থিতিতে। তার প্রতি আস্থা সবারই আছে। তাই তার দায়িত্ব পালনের বিকল্প নেই এই মুহুর্তে। বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সরকারের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সজাগ থাকতে হবে।’

এবি পাটির মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইলেকশন দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন বিষয়ে হতাশ। একটি টিম গঠন করে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বোঝাপাড়ার আহবান করা হয় এবি পার্টির পক্ষ থেকে। উনাকে শক্ত হাতে সমাধান করার আহবান জানিয়ে, নির্বাচন, সংস্কার, বিচারের একটি রোডম্যাপ দাবি করে এবি পার্টি।

বৈঠক শেষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘অনেক আশা ভরসা থেকে মৌলিক সংস্কারগুলো করবেন, নির্বাচনী রোড ম্যাপ দিবেন। 

যে কোনো পরিস্থিতিতে মাঝপথে হাল ছেড়ে না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘চলমান সংস্কারের অগ্রগতি নেই। গণঅভ্যুত্থানের অন্তত দু-চারটি মামলার বিচার শেষ করার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া করিডোর বা বন্দরের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহবান জানান তিনি। 

এদিকে নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট মাস ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়াসহ সরকার সামরিক বাহিনীসহ পুরো প্রশাসনকে আস্থায় নিয়ে কাজ করার আহবান জানান নুর। এছাড়া বাহ্যিক চাপ ও নানান ধরনের ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা জানান নুর।

মন্তব্য করুন


Link copied