বেরোবি প্রতিনিধি : আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত এজাহারভুক্ত ৮ পুলিশ কর্মকর্তা এখনো বহাল তবিয়তে থাকলেও, মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং হত্যাকাণ্ড আড়াল করতে প্রশাসন কৌশলে কিছু ‘চুনোপুটি’ গ্রেফতারে ব্যস্ত—এমন অভিযোগ তুলেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দিনব্যাপী প্রশাসনিক ভবনে তালা এবং প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় তার বড় ভাই রমজান আলী রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। মামলার এজহারভুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের তৎকালীন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, রংপুর মহানগর পুলিশের তৎকালীন উপকমিশনার আল মারুফ হোসেন, সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, আল ইমরান হোসেন, তাজহাট থানার তৎকালীন ওসি রবিউল ইসলাম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতিভূষণ রায়, এএসআই আমির আলী এবং কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।
তালিকাভুক্ত আসামির ১০ পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে কেবল দুই পুলিশ কনস্টেবল সুজন চন্দ্র এবং এএসআই আমির আলীকে আটক করা হয়েছে। বাকি ৮ পুলিশ কর্মকর্তা এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলার এজারভুক্ত আসামি আট পুলিশ কর্মকর্তাকে স্বপদে বহাল রেখে তুলনামূলক কম দোষী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে, এবং অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত, মূল আসামিদের গ্রেফতার করার দাবি জানান।
একই দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় প্রেস ব্রিফিং ডেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্তর্জাতিক অপারাধ ট্রাইব্যুনালকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে রংপুরে ঘটনা স্থলে এসে উক্ত হামলার সাক্ষী, সহযোদ্ধা ও সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণে গণ শুনানির আয়োজন করে সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এর ব্যতিক্রম কিছু হলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক মিলে আবু সাঈদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবারো কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলা হবে।