স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজে রয়েছেন অধ্যক্ষের দায়িত্বে তিনজন। তাঁদের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন একজন অধ্যক্ষ ও অপর দুইজন রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে। বর্তমানে তিন অধ্যক্ষের রশি টানাটানিতে কলেজটিতে দেখা দিয়েছে প্রশাসনিক জটিলতা। তবে কলেজটি জাতীয়করণের সময় থেকে সেখানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল হান্নান।
এবিষয়ে মঙ্গলবার(৮ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে নীলফামারী জেলা শহরের একটি রেস্টুরেন্টের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে জানান, ‘২০২১ সালের ৮ আগস্ট শিমুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজটি জাতীয়করণ হয়। তখন থেকে তিনি বিধিমালা অনুযায়ী কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের আত্তীকরণ বিধিমালা অনুযায়ী বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার, নন-ক্যাডারে পদায়নের বিধান নেই। সে অনুযায়ী তার পদায়ন যৌক্তিক রয়েছে বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরে বলেন, বিধি ভঙ্গকরে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে ফ্যসিস্ট সরকারের ঘাপটি মেরে থাকা দোসরা শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষে হঠাৎ করে চলতি বছরের ৮ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ শাখা-২ এর আদেশে ১৩৫ কলেজের সঙ্গে শিমুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজে ক্যাডারভুক্ত অধ্যাপক এ কে এম সিদ্দিকুর রমহানকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। আদেশের প্রেক্ষিতে তিনি ১৭ এপ্রিল কলেজে যোগদান করেন।
তিনি এই আদেশ বাতিল চেয়ে চলতি বছরের ২৭ মে সুপ্রিম কোটে হাইকোট ডিভিশনে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান। উক্ত পিটিশনের প্রেক্ষিতে মহামান্য আদালত চলতি বছরের পহেলা জুন অধ্যক্ষ পদায়ন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে আমাকে (মো. আব্দুল হান্নান) অধ্যক্ষ পদোন্নতি প্রদান পূর্বক রায় প্রদান করেন। ওই আদেশের পর এ কে এম সিদ্দিকুর রহমান আমাকে দায়িত্ব প্রদান না করে অবৈধভাবে কলেজের একজন সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার রায়কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করেছেন। তিনি আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য জুন মাসের বেতন ভাতাদি বন্ধ করে রেখেছেন। এতে করে আমি পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি দ্রুত এর অবসান চাই’। এসময় তিনি অধ্যক্ষ এ কে এম সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেন।
এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকারী অশোক কুমার রায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
তবে মুঠোফোনে কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকারের নির্দেশে ওই কলেজে আমার পদায়ন হয়। কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মো. আব্দুল হান্নানের রিটের কারণে মহামান্য আদালত আমার পদায়নের আদেশটি তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এ অবস্থায় কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমি কলেজের সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার রায়কে দায়িত্ব প্রদান করি। সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুল হান্নানকে দায়িত্ব না দিয়ে জেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে অশোক কুমার রায়কে দায়িত্ব প্রদানের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আব্দুল হান্নান কলেজে অনুপস্থিত থাকার কারণে অশোক কুমার রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একই কারণে তাঁর জুন মাসের বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানানো হয় এসময়।