আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ৩১ জুলাই ২০২৫ ● ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ৩১ জুলাই ২০২৫
আক্রান্ত ও মৃত্যু প্রতিদিনই বাড়ছে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি নাজুক হতে পারে

ডেঙ্গুর সংক্রমণ শহর থেকে গ্রামে বেশি

বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, রাত ০১:২০

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: চারদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন সাভার নবীনগর থেকে আসা মোহাম্মদ ইকবাল (৩৬)।  প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিলেও ধীরে ধীরে শরীরের অবস্থার অবনতি হতে থাকে তার। একপর্যায়ে চিকিৎসা নিতে আসেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, পরে ডাক্তার টেস্ট দিলে ধরা পড়ে ডেঙ্গু। তার প্লাটিলেট কমে দাঁড়ায় ৪৫ হাজারে। তাৎক্ষণিক ভর্তি হতে বলেন ডেঙ্গু ওয়ার্ডে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন, তার সেবা করার জন্য এসেছেন স্ত্রী ও এক মেয়ে।

ডাক্তার বলেছেন, আপাতত এখানে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। ইকবালের মতো ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে। এদের মধ্যে কারও অবস্থা উন্নতির দিকে আবার কারও সংকটাপন্ন। দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা, সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যা। তবে এবার শহর থেকে গ্রামের লোকেরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।  


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা মৌসুমে প্রতিবছর জুন থেকে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে মশার সংখ্যা বেড়ে যায়। বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও সেপ্টেম্বর-আগস্টে ডেঙ্গু ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করতে পারে। এছাড়াও এ বছর থেমে থেমে বৃষ্টি, সঙ্গে ভ্যাপসা গরমে ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়ে নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।


২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৯৩ জন। এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০ হাজার ৩১৬ জন।


স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১০১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৪ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৪৬ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬০ জন, খুলনা বিভাগে ২৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৮ জন এবং রংপুর বিভাগে ৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদিকে গত এক দিনে সারাদেশে ৩৬৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৮ হাজার ৯৫১ জন।


তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে’তে ১ হাজার ৭৭৩ জন এবং জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন জন, এপ্রিলে সাত জন, মে’তে তিন জন এবং জুনে ১৯ জন মারা গেছেন, জুলাইয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক মো. হালিমুর রশিদ জানান, রোগীর সংখ্যা আরও বাড়লে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।


গত বছরের আক্রান্ত ও মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছিল ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সী ১৫ হাজার ১১০ জন; ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১৪ হাজার ৬৩ এবং ১৬ থেকে ২০ বছর বয়সী ১৩ হাজার ১৩৫ জন। এ ছাড়া সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল ২৬ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৫৬ জনের এবং ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সী ৫২ জনের।


বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন গত ৫ দিন প্রচ- জ্বরে ভুগে থাকা পুরান ঢাকার বাসিন্দা ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আরাফ সাইফুল (২৪)। প্রথমে জ্বরের ওষুধ খেলেও তাতে কাজ হয়নি পরে ডাক্তার দেখাতে যান লালবাগের ইবনে সিনা হাসপাতালে। সেখানে ডাক্তার দেখানোর পর ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। তবে পরিবারের সঙ্গে থাকায় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন এই শিক্ষার্থী।  জানালেন, গত কয়েকটি পরীক্ষাও দিতে পারেননি তিনি। পরিবার থাকায় ডাব, স্যালাইনের পানি আর সেবাযতেœর কোনো সমস্যা হচ্ছে না।


জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে এডিস মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শুধু প্রশাসন নয়, নাগরিকদেরও সচেতনতা জরুরি। নিজের বাসা ও আশপাশে দুদিনের বেশি পানি জমতে না দেওয়া এবং ঘুমানোর সময় মশারি টাঙানো আবশ্যক। ডেঙ্গু ভাইরাস বহনকারী এডিস মশার উৎস মূলত প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, ফুলের টব, নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ কিংবা ড্রেনে জমে থাকা পানি। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু, গর্ভবতী নারী, নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা।

তাই জ্বর এলে কোনোভাবেই অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এ ছাড়াও, শুধু হাসপাতালভিত্তিক প্রস্তুতি নয়, বরং কমিউনিটি লেভেলে মশা নিয়ন্ত্রণ ও বাসার আশপাশ পরিষ্কার রাখা এখন সবচেয়ে জরুরি। তা না হলে পরিস্থিতি দ্রুতই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।


হাসপাতালগুলোর যেমন অবস্থা ॥ সরেজমিন ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে শুরু করে মেডিসিন ওয়ার্ড পর্যন্ত উপচেপড়া ভিড়। অধিকাংশই জ্বর, বমি ও শরীরে ব্যথা নিয়ে আসছেন। জরুরি বিভাগে একসঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী অপেক্ষায় রয়েছেন। হাসপাতালের বারান্দায় অন্তত ২৫ জন রোগীকে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। মেডিসিন ওয়ার্ডের এক নার্স বলেন, তিন দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আমরা সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দিচ্ছি।


ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবন্ধন খাতার তথ্য বলছে, জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনে শুধু মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন সাত হাজার ১৮৪ জন। পরের ১২ দিন (১২ জুলাই থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত) চিকিৎসা নিয়েছেন আট হাজার ২৭৪ জন। সেই হিসাবে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর হার বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ।


ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফারুক আহাম্মদ বলেন, আমরা দিনে গড়ে এক হাজার ২০০ রোগী দেখছি, যার একটি বড় অংশ ভাইরাস জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত। প্রায় সবারই জ্বর, কাশি, শরীর ব্যথা ও দুর্বলতা নিয়ে আসছে। রোগী সামলানো ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে সংকটে পড়ছি। জ্বর আসলে কোনো রোগ নয়, বরং এটি রোগের একটি লক্ষণ বা উপসর্গ।

 

অনেকগুলো কারণে জ্বর হতে পারে। সবচেয়ে কমন হলো ঠান্ডা লেগে জ্বর হওয়া বা সর্দি-কাশির কারণে জ্বর। এর বাইরে শরীরের ভেতরে কোনো কারণে ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাসের আক্রমণ হলে। অর্থাৎ ইনফেকশন হলে জ্বর হতে পারে। এ ছাড়া টিকা নিলে, ফোঁড়া বা টিউমার হলে, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, প্র¯্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হলে, পিরিয়ডের কারণে, আকস্মিক ভয় পেলে বা মানসিক আঘাত পেলেও জ্বর হতে পারে।


ঢামেকের নিবন্ধন খাতার তথ্য বলছে, গত ১ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত এসব হাসপাতালে ৭৪ হাজার ২৮০টি বিভিন্ন ভাইরাস জ্বরের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ১২ দিনে ৩৭ হাজার ৮৩টি পরীক্ষা করা হয়। এই কয়দিনে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ৯০ জনের পরীক্ষা করা হয়। তবে পরবর্তী ১২ দিনে ৩৭ হাজার ১৯৭টি পরীক্ষা করা হয়। পরের ১২ দিনে দৈনিক ১১৪টি পরীক্ষা বেশি করা হয়েছে। এই কয়দিনে প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার ৯৯টি পরীক্ষা বেশি করা হয়। পরীক্ষার হার বেড়েছে প্রায় ০ দশমিক ৩১ শতাংশ। তবে এদের বাইরে অসংখ্য রোগী বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন।


ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গত মাসের তুলনায় এবার রোগীর চাপ বেশি। ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু ও অন্য ভাইরাল সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কীট সংকটের তথ্য আমাদের কাছে নেই। ওষুধের চাহিদা বেশি, তবে আমাদের নিজস্ব ফার্মেসিতে সরবরাহ সীমিত।


শুধু ঢাকা মেডিক্যাল নয় রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে ডেঙ্গু রোগীর চাপ দেখা গেছে। ধানমন্ডির বেসরকারি পপুলার হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ২১ বছর বয়সী শয়ন রহমান। জানালেন, ৪ দিন ধরে ভর্তি আছেন এখানে; তবে বোন থাকায় খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না তার। শুরুতে জ্বর এলেও বুঝতে পারেননি, গুরুত্ব না দিলে পরবর্তীতে শরীর খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপর ডাক্তারের নিকট গেলে পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু পজিটিভ হয়। এখানে ভর্তি আছেন আরও চার জন রোগী।


ডেঙ্গু আবারও বড় হুমকি হয়ে দেখা দিচ্ছে জানিয়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির (বিএমইউ) মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবেদ খান বলেন, আগের বছরগুলোতে মূলত ঢাকা শহরে ডেঙ্গু বেশি দেখা গেলেও বর্তমানে তা ছড়িয়ে পড়েছে বরিশাল, বরগুনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এবার তিনটি ভিন্ন ধরন বা ভ্যারিয়েন্ট বেশ সক্রিয়, যা রোগীদের জটিলতায় ফেলছে। চলতি সময়ের আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ সেরোটাইপ সক্রিয় পাওয়া গেছে।


অপরিকল্পিত নগরায়ন, মশা নিয়ন্ত্রণে অব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এই ডেঙ্গু সংক্রমণ বৃদ্ধির মূল কারণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।


মহাখালীর ডিএনসিসি কভিড-১৯ হাসপাতালেও আগের থেকে তুলনামূলক বেশি ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গু রোগী। বর্তমানে ২১ রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। গত মাসে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ১৪ জন। এর আগের মাসে ১০ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালের পরিচালক কর্নেল তানভীর আহমেদ বলেন, ডেঙ্গু রোগী জুন থেকে বাড়তে শুরু করেছে। সামনে আরও বাড়তে পারে, তবে আমাদের ৩৫০ শয্যা এখন রোগীর সেবার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। 


কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। মাঠপর্যায়ের গবেষণা থেকে দেখা গেছে, দেশের প্রতিটি জেলায় এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব নির্দেশক ব্রেটো ইনডেক্স ২০-এর ওপরে, অর্থাৎ ডেঙ্গু বিস্তারের ঝুঁকি অনেক বেশি।

তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কীটতত্ত্ব গবেষণাগারে সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা, মাঠ পর্যায়ে এডিস মশার ঘনত্ব, বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, আর্দ্রতাসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে মাল্টিভেরিয়্যান্ট অ্যানালাইসিস করে ফোরকাস্টিং মডেল তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে ওই এডিস মশার ঘনত্বের আগাম ধারণা দেওয়া যায়। ওই গবেষণাগার থেকে এখন পর্যন্ত যত আগাম তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার সবগুলোই সঠিক হয়েছে।’


তিনি জানান, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তার নেতৃত্বে গবেষণাগারের সদস্যরা একটি মডেল তৈরি করেছেন। ওই মডেল বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা বলে দাবি এই কীটতত্ত্ববিদের। তার মডেলে বলা হয়েছে, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায়-স্বাস্থ্যকর্মী, ক্লিনার, মশককর্মী, সুপারভাইজার, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা থাকবে। যাদের কাজ নির্ধারিত থাকবে, তারা সেগুলো যথানিয়মে পালন করবে। এসব কর্মী স্থায়ীভাবে নেওয়ার প্রয়োজন নেই, আউটসোর্সিংয়েও করা যেতে পারে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পর্যাপ্ত কীটনাশকের সংস্থান, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজীকরণ করতে হবে।


কবিরুল বাশার আরও বলেন, গত ১১ মাস স্থানীয় সরকারব্যবস্থা সেভাবে কার্যকর না থাকায় মশকনিধন কার্যক্রম তেমন ছিল না। ডেঙ্গুকে শহরভিত্তিক রোগ বলা হলেও এবার গ্রামে এর বিস্তার বেশি ঘটতে দেখা যাচ্ছে। তিনি মনে করেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগ দরকার। দীর্ঘদিন ধরে মশা নিয়ে কাজ করছেন এমন বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করে পরিকল্পনা করা দরকার। পাশাপাশি আগামী দুই মাসে রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালগুলোয় যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকা দরকার।

মন্তব্য করুন


Link copied