আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ● ১০ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
‘সবগুলাকে ফাঁসি দিছি, তোদেরও ছাড়বো না’, শিক্ষার্থীদের বিষয়ে হুংকার হাসিনার

‘সবগুলাকে ফাঁসি দিছি, তোদেরও ছাড়বো না’, শিক্ষার্থীদের বিষয়ে হুংকার হাসিনার

আন্দোলনের সময় হাসিনাকে ‘জঙ্গি কার্ড’ খেলার কথা বলেছিলেন ইনু

আন্দোলনের সময় হাসিনাকে ‘জঙ্গি কার্ড’ খেলার কথা বলেছিলেন ইনু

শেখ হাসিনার পরিবার ও ১০ শিল্প গোষ্ঠীর ৫৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

শেখ হাসিনার পরিবার ও ১০ শিল্প গোষ্ঠীর ৫৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গৃহবধূকে গণধর্ষণ

অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গৃহবধূকে গণধর্ষণ

ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন মিত্রদের কঠোর অবস্থান, কোন পথে ট্রাম্পের ইসরায়েল নীতি

বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ১১:২০

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এবার স্পষ্ট হয়ে গেলো গাজা যুদ্ধ নিয়ে ওয়াশিংটনের প্রতি আন্তর্জাতিক হতাশা। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র-যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া- একযোগে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই জোরালো পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসরায়েল নীতির জন্য বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দ্রুত ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ থামাবেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, ইসরায়েলি বাহিনীর বেপরোয়া হামলার মধ্যে তিনি অনেকটা দর্শকের ভূমিকায়, আর মধ্যপ্রাচ্যে তার অন্যতম এই ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলকে এখন নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যাপারে অনীহা দেখাচ্ছেন। 

সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কাতারে হামাস নেতাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হামলা চালান। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির সর্বশেষ প্রচেষ্টা কার্যত ভেঙে পড়ে। 

এরপর গাজা সিটিতে ইসরায়েলি বাহিনীর স্থল অভিযান শুরু হয়-যা যুক্তরাষ্ট্র নিরব সম্মতি দিয়েই মেনে নিয়েছে, যদিও বিশ্বব্যাপী মানবিক সংকটের ইস্যুতে সমালোচনা চরমে পৌঁছেছে। 

এসময় ট্রাম্পের সতর্কতা উপেক্ষা করে পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি একে হামাসের জন্য 'উপহার' বলে আখ্যা দিলেও ফ্রান্স, ব্রিটেন, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রনায়ক মতে—এমন স্বীকৃতি দীর্ঘদিনের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাঁচাতে ও গাজা যুদ্ধ থামাতে সহায়ক হবে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে জিও নিউজ। 

 

মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে বারবার নিজেকে 'শান্তির দূত' দাবি করলেও বাস্তবে পরিস্থিতি তার আগের তুলনায় খারাপ হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তো অধিবেশনে দেয়া ভাষণে বলেন, ট্রাম্প যদি নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে চান, তবে তাকে গাজা যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।

এদিকে, সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে তুরস্ক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মিশর, জর্ডান, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ট্রাম্প বৈঠক করেন। সেখানে যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা প্রশাসনের প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, যেখানে শাসকগোষ্ঠী হামাসকে সম্পূর্ণ বাদ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। 

আরও পড়ুন : এবার পাকিস্তানের ‘পারমাণবিক ছাতার’ নিচে সৌদি, পাল্টে যাবে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের হিসাব-নিকাশ

ইসরায়েলকে ঠেকাতে তিনি আরব ও মুসলিম দেশগুলোকে নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানোর আহ্বান জানান। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রতি ওয়াশিংটনের চাপ প্রয়োগ এড়িয়ে যাচ্ছেন। কারণ একদিকে তিনি নেতানিয়াহুকে মোটেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। 

অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়েও বেকায়দায় রয়েছেন ট্রাম্প। যেমন রক্ষণশীল নেতা চার্লি কার্কের হত্যাকাণ্ড, জেফ্রি এপস্টেইন কেলেঙ্কারির প্রভাব ও এপস্টেইনের সঙ্গে তার বিতর্কিত সম্পর্ক এবং ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত শহরে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের মতো বিতর্কিত বিষয়গুলো তাকে ব্যস্ত রেখেছে।

এদিকে ইসরায়েলের দোহায় হামলার কারণে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গড়া ঐতিহাসিক আব্রাহাম চুক্তিও এখন হুমকির মুখে পড়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) হুঁশিয়ারি দিয়েছে, পশ্চিম তীর দখল নীতি নিয়ে ইসরায়েল এগোলে তারা এ চুক্তি থেকে সরে আসতে পারে। সৌদিও নতুন করে এতে যোগ দেবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রকাশ্যে নেতানিয়াহুর প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখলেও, ভেতরে ভেতরে তার ধৈর্য ফুরিয়ে যেতে পারে। কারণ ইসরায়েলের ডানপন্থি সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—তারা কোনোভাবেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র মেনে নেবে না এবং হামাস দমনের নামে সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখবে।

জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদ পেতে হলে নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তাই যত দেশই স্বীকৃতি দিক, পূর্ণ রাষ্ট্রের মর্যাদা ও জাতিসংঘের সদস্যপদ পেতে হলে ফিলিস্তিনকে মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের হাতেই জিম্মি হয়ে থাকতে হবে।

মন্তব্য করুন


Link copied