আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১০ অক্টোবর ২০২৫ ● ২৫ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১০ অক্টোবর ২০২৫
শনিবার ভোরে দেশে ফিরছেন শহিদুল আলম

শনিবার ভোরে দেশে ফিরছেন শহিদুল আলম

বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই

রংপুরে ডা. এ জেড এম জাহিদ
বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের কোন পরিবেশ নেই

অনিশ্চয়তা বাড়ছে নির্বাচন নিয়ে?

অনিশ্চয়তা বাড়ছে নির্বাচন নিয়ে?

ইসরায়েল থেকে তুরস্কে পৌঁছেছেন শহিদুল আলম

ইসরায়েল থেকে তুরস্কে পৌঁছেছেন শহিদুল আলম

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ঘিরে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, বিকাল ০৭:৪৫

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) উদযাপন করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ২০০৮ সালের এই দিনে উত্তরাঞ্চলের উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচন হয়েছিল রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৭ বছরের পথচলায় বিশ্ববিদ্যালয়টি যেমন অনেক অর্জন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নানা অপূর্ণতা ও প্রত্যাশাও। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে শিক্ষার্থীরা কী ভাবছেন তা তুলে ধরা হলোঃ

 
বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হক শাওন বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস, এটি শুধু একটি দিবস নয়, এটি আমাদের গর্ব, আমাদের অস্তিত্বের প্রতীক। এই বিশ্ববিদ্যালয় বেগম রোকেয়ার নাম ধারণ করে, যিনি ছিলেন নারী জাগরণের অগ্রদূত, শিক্ষার আলোকবর্তিকা। সেই শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ুক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর হৃদয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস দিনটি নিয়ে রয়েছে আলাদা আবেগ। কেউ এটিকে দেখছে  শুধু উৎসবের দিন হিসেবে, কেউ দেখছে উৎসবের পাশাপাশি সমালোচনার সময় হিসেবে, যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়  ১৭ বছরে কি অর্জন  আছে বা পেয়েছে? এই দিনে আমরা নতুনভাবে ভাবি,আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থান কোথায়?  বিশ্ববিদ্যাল কোথায়  যেতে চায়, আর আমরা শিক্ষার্থীরা সেই যাত্রার অংশ হিসেবে কীভাবে অবদান রাখতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের শেখায় ঐক্য, উদ্দীপনা ও দায়িত্ববোধ। আমরা চাই, আমাদের প্রিয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাক গবেষণায়, সংস্কৃতিতে, আর মানবিক মূল্যবোধে। এছাড়া আমরা আরো চাই শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ, উন্নত আবাসন, আধুনিক পাঠদান ও সৃষ্টিশীল পরিবেশ, যাতে শিক্ষার্থীরা নিজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়। এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, শিক্ষা শুধু ডিগ্রি অর্জনের বিষয় নয় এটি নিজেকে, সমাজকে ও দেশকে বদলে দেওয়ার শক্তি। বেগম রোকেয়া যেমন অন্ধকার সমাজে আলো জ্বেলেছিলেন, আমরাও তেমনি জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে পারি,এই প্রত্যাশা করি। পরিশেষে, আমরা বেগম রোকেয়ার স্বপ্নের পথে হাঁটব, শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেব, আর নিজেদের গড়ে তুলব যোগ্য নাগরিক হিসেবে, এই প্রত্যাশা করি।
 
 ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীর মোহাম্মদ বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পেরোতে চললেও পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়ার যে আকাঙ্ক্ষা শিক্ষার্থীরদের মাঝে ছিল সেই আশার আলো শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত দেখেনি। আমরা পেয়েছি সমস্যা ও সংকটে পরিপূর্ণ আমাদের প্রিয় ক্যাম্পাস। আমাদের সম্ভাবনাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে অতল গহীনে। এই সংকটময় পরিবেশ আমাদেরকে আশাহত করেছে। প্রতিষ্ঠাকালীন অবকাঠাম ছাড়া এখন পর্যন্ত নতুন করে  অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি যার ফলে দেখা দিয়েছে ক্লাসরুমের সংকট। পর্যাপ্ত ক্লাস রুম না থাকায় সময় মতো ক্লাস পরীক্ষা সম্ভব হয় না প্রতিটি বিভাগের। শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না পর্যাপ্ত গবেষণার সুযোগ। আবার অন্যদিকে রয়েছে আবাসন সংকট। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল গুলোকে বলা হয় প্রাণ। প্রতিষ্ঠাকালীন ছেলেদের দুটি হল এবং মেয়েদের জন্য রয়েছে একটি। নতুন করে একটি হল এর কাজ শুরু হলেও ব্যাপক দুর্নীতিতে কারণে নারী শিক্ষার্থীদের  হলের কাজে স্থবিরতা। ১৭ বছর পেরোতে চললেও আবাসন সুবিধা পাচ্ছে শুধুমাত্র ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী। বাকি ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। শরীরচর্চার জন্য নেই জিমনেশিয়াম। মেডিকেল সেন্টারে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক যা আছে তা অতি নগন্য। সকল শিক্ষার্থী পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত। এসব সংকট সমস্যার নিয়ে বেরোবি ১৮ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। এই সমস্যাগুলো ও সংকট সমাধানের মাধ্যমে প্রিয় ক্যাম্পাস বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠ একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়  ও আধুনিক  সম্ভাবনার এবং গবেষণার  প্রাণকেন্দ্র। এই আশা কামনা করি।
 
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, আগামী ১২ অক্টোবর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় তার ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করতে যাচ্ছে। প্রায় দুই দশকের কাছাকাছি পথচলায় বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনও পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি যা আমাদের জন্য চিন্তার বিষয়। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে মৌলিক একাডেমিক কাঠামো থাকা প্রয়োজন, তার অনেকটাই এখানে অনুপস্থিত। এখনো কৃষি ও আইন অনুষদ চালু হয়নি, যা উত্তরবঙ্গের বাস্তবতায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা এখনো বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যদিও সম্প্রতি প্রশাসন সীমিত পরিসরে গবেষণা ফান্ডের ব্যবস্থা করেছে এটি একটি ইতিবাচক সূচনা। অবকাঠামোগত দিক থেকেও বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে পর্যাপ্ত হল, ক্লাসরুম ও ল্যাব সুবিধা এখনো অপ্রতুল। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আর্থিক স্বনির্ভরতার অভাব, যা উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে আছে। নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস রংপুর সফরে অনেক আশার কথা বলেছিলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় উত্তরবঙ্গ ও এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো ন্যায্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত। তবে দায় শুধু প্রশাসনের নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয়ভাবে উত্তরবঙ্গ অবহেলিত থেকেছে। আমাদের সবচেয়ে বড় সংকট হলো শক্ত, দূরদর্শী নেতৃত্বের অভাব যার কারণে সম্ভাবনাময় এই বিশ্ববিদ্যালয় এখনো পূর্ণ বিকাশে পৌঁছাতে পারেনি।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের স্বদিচ্ছা থাকলেও উপর মহলের গুরুত্বহীনতা মূলসংকট। আমাদের প্রত্যাশা, ১৭ বছরের এই পথচলার প্রান্তে আমরা নতুন করে ভাববো।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ বায়েজিত শিকদার বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এই দিনটি কেবল একটি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নয়; এটি আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক, আমাদের ইতিহাসের স্মারক, এবং আমাদের ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা। বেগম রোকেয়া শখাওয়াত হোসেন ছিলেন একজন আলোকিত নারী, যিনি অন্ধকার সমাজে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, শিক্ষাই মুক্তির পথ, আর জ্ঞানই হলো পরিবর্তনের শক্তি। আজ তাঁর নামধারী এই বিশ্ববিদ্যালয়ও সেই আলোকিত চেতনার ধারক-বাহক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা শিখি শুধু বইয়ের জ্ঞান নয়, বরং চিন্তা, বিশ্লেষণ এবং দায়িত্ববোধের প্রকৃত শিক্ষা।বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমরা কেবল ডিগ্রিধারী হতে এসেছি না, আমরা এসেছি চিন্তাশীল মানুষ, দায়িত্বশীল নাগরিক এবং সমাজ পরিবর্তনের কারিগর হতে।
 
আমাদের ভাবনা হলো, আমরা গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখব, বেগম রোকেয়ার শিক্ষাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সমাজে ন্যায়, সমতা ও মানবতার মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেব। আমরা চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হোক এমন এক জায়গা, যেখানে জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবিকতা একসঙ্গে বিকশিত হবে। আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় মানে শুধু ক্লাস, পরীক্ষা বা সার্টিফিকেট নয়। এটি এমন এক জায়গা, যেখানে মানুষ নিজেকে চিনতে শেখে। এখানে শেখা মানে শুধু তথ্য মুখস্থ করা নয়, বরং ভাবতে শেখা, বিশ্লেষণ করতে শেখা, এবং সমাজের জন্য কাজ করতে শেখা। আমি চাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হোক এমন এক শিক্ষাঙ্গন, যেখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থী হবে নৈতিক, সৃজনশীল ও দেশপ্রেমিক মানুষ। যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সম্মান, ভালোবাসা এবং অনুপ্রেরণার বন্ধনে গড়া। আমি বিশ্বাস করি একদিন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হবে শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, পুরো বাংলাদেশের গর্ব। এটি হবে একটি আধুনিক, গবেষণামুখী ও মানবিক বিশ্ববিদ্যালয়। আজকের এই বিশেষ দিনে আসুন আমরা নতুনভাবে অঙ্গীকার করি, আমরা রোকেয়ার চেতনা ধারণ করব, নিজেদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলব, এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উজ্জ্বল করব জ্ঞান, নৈতিকতা ও কর্মের মাধ্যমে। শেষে একটাই কথা বলতে চাই জ্ঞানই শক্তি, নৈতিকতাই সৌন্দর্য, আর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ই আমাদের গর্ব।
 
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ তুহিন রানা বলেন, অবহেলিত উত্তরের জনপদে আশার বাতিঘর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ,রংপুর। প্রিয় বিদ্যাপীঠের ১৭ বছর পেরিয়ে ১৮ তে পদার্পণ। এই দীর্ঘ সময়ে,একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বিস্তর ফারাক খুঁজে পেয়েছি। শুরুতেই নাম পরিবর্তনের ইতিহাস থেকে শুরু করে এখানে সকল চাওয়া পাওয়ার একমাত্র পরিবর্তিত রূপ হচ্ছে, আশ্বাস। আমরা আর আশ্বাসের বেড়াজালে বন্দী হয়ে থাকতে চাই না।স্বৈরাচারী আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ভিসিদের স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি প্রবণ মনোভাবের দরুণ বেরোবির কাঙ্খিত উন্নয়ন বাস্তবায়ন হয় নাই। ৫ ই আগস্ট পরবর্তী প্রেক্ষাপটেও এখন পর্যন্ত পূর্বের ন্যায় আশ্বাসের ফুলঝুরি। বৈষম্য দূরীকরণে শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগ অথচ তারই প্রিয় বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম বৈষম্যের শিকার। তবে বর্তমান উপাচার্যের দূরদর্শী নেতৃত্বে কিছুটা অগ্রসরের পথে প্রিয় বিদ্যাপীঠ। প্রস্তাবিত মেগা বাজেটের বাস্তবায়ন ও স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতামূলক প্রশাসনিক কাঠামো নিশ্চিত করা হলে কাঙ্খিত বাস্তবায়ন সম্ভব বলে আমি মনে করি। পরিশেষে ,সকলের প্রতি আমার উদাত্ত আহ্বান দল-মতের ঊর্ধ্বে গিয়ে বেরোবির উন্নয়নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো।
 
বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম্ বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ সাকিব ইসলাম বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি আমাদের স্বপ্ন, ভালোবাসা ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক। ১৭ বছরের এই পথচলা যেন উত্তরবঙ্গের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও আলোকিত ভবিষ্যতের গল্প। এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের শিখিয়েছে কেবল পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞান নয়, শিখিয়েছে মানুষ হতে, সমাজের জন্য ভাবতে। প্রতিটি ক্লাসরুম, প্রতিটি গাছ, প্রতিটি প্রভাত যেন বলে “তুমি পারবে, আলোর পথে এগিয়ে চলো। এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমি গর্ব করে বলি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আমার গর্ব, আমার ভালোবাসা।প্রার্থনা করি, এই প্রতিষ্ঠান জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাক প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
 
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীর মোঃ মমিনুল ইসলাম মমিন বলেন, প্রতি বছর ১২ অক্টোবর  যখন আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাস নতুন করে সেজে ওঠে, তখন প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনে আনন্দের পাশাপাশি কিছু প্রত্যাশাও জেগে ওঠে। এই দিনটি আমাদের জন্য কেবল একটি উৎসবের দিন নয়, এটি আমাদের আত্মপরিচয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একটি বিশেষ দিন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।নারী জাগরণের অগ্রদূত মহীয়সী বেগম রোকেয়ার নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা গর্বিত। যিনি নারীশিক্ষার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁর নামের সঙ্গে যুক্ত থাকাটা আমাদের জন্য শুধু সম্মানই নয়, এক বিশাল দায়িত্বও বটে। এই নামের মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমি স্বপ্ন দেখি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হবে গবেষণামুখী, উদ্ভাবনী আর জ্ঞানচর্চার এক তীর্থক্ষেত্র। আমরা চাই আমাদের অর্জিত ডিগ্রি যেন শুধু একটি সনদপত্র না হয়ে ওঠে, বরং মেধা ও যোগ্যতার প্রতীক হিসেবে সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়। কিন্তু এই স্বপ্নের পথে আবাসন সংকট, উন্নত ল্যাব ও লাইব্রেরির স্বল্পতা কিংবা পরিবহন ব্যবস্থার মতো বাস্তব সমস্যাগুলো প্রায়ই বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব সমস্যা সমাধানে আরও আন্তরিক হবেন এবং আমাদের জন্য একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবেন।
 
বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের জন্য শপথ নেওয়ার দিন। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রশাসন আমরা সবাই মিলে যদি একসঙ্গে কাজ করি, তবেই এই প্রতিষ্ঠান জ্ঞান ও মানবতার আলোয় সত্যিকার অর্থে আলোকিত হয়ে উঠবে। আসুন, এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমরা শুধু উৎসবের রঙে নয়, বরং সুন্দর আগামীর প্রত্যয়ে নিজেদের রাঙিয়ে তুলি। বেগম রোকেয়ার আদর্শ হোক আমাদের পথচলার পাথেয়।

মন্তব্য করুন


Link copied