ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'এটাই হয়তো আমার শেষ নির্বাচন, আমি চেষ্টা করেছি এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার। সেজন্য আমি ১১ বার জেলে গিয়েছি। আমরা একটা লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। তাই দেশে আর কোনো বিভাজন বা ভাগাভাগির রাজনীতি চাই না আমরা। দেশের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি আহ্বান জানান, সবাই মিলে সত্যিকার অর্থে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই আমরা। একই সঙ্গে তিনি জামায়াতে ইসলামীর প্রতি আহ্বান জানান, গণভোট (রেফারেন্ডাম) বা পিআর এর মতো দাবি আপাতত বন্ধ রেখে নির্বাচনের পথে যেতে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিহিংসা ও বিভেদের রাজনীতি পরিহার করে একটি 'শান্তির রাষ্ট্র' প্রতিষ্ঠা করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নামা কিছু প্রতিষ্ঠানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'আপনাদের দাবিগুলো আপাতত বন্ধ রাখুন, নির্বাচিত সরকার আসলে আপনাদের দাবি নিয়ে তখন কথা বলুন। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমেছে, উদ্দেশ্য ভালো না, তারা নির্বাচন পন্ড করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, 'আর বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। গণভোট হতে হবে, বা পিআর হতে হবে, না হলে ভোট হবে না এইগুলো বাদ দেন। দেশের মানুষ একটি নির্বাচন চায়। পিআর দেশের মানুষ বুঝে না। পিআরটা আবার কি? আগে ভোট হোক তার পর পিআর নিয়ে সংসদে গিয়ে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।
মির্জা ফখরুল জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, 'পিআর নিয়ে মিছিল মিটিং বন্ধ করুন, দয়া করে নির্বাচনটা হতে দেন। বাংলাদেশের মানুষ বাঁচুক। দেশের অস্থিরতা কাটুক। আপনাদের কাছে অনুরোধ সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।'
নির্বাচনী জনসভায় মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয় নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, 'আগামী ১৭ অক্টোবর সংস্কার সনদে স্বাক্ষর হবে। কিসের সংস্কার? সংস্কার কাকে বলে? কি কঠিন কঠিন শব্দ। তারপরও আমরা করতেছি। তিনি সাধারণের কাছে বোধগম্য করে বলেন, 'সংস্কার হলো ঘরের টিন বদলোর মতো। ঘরে দরজা বা ঘরের টিন যেমন কয়েক বছর পরপর বদলাতে হয় বা সংস্কার করতে হয়, তেমনি রাজনীতিতেও কিছু সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। তাই আমাদের দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ও ছাত্ররা মনে করেছেন দেশটাকে ঠিক করতে হলে সংস্কার করতে হবে।
নিজের রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, 'আমি ১১বার কারাগারে গেছি। শেখ হাসিনা আমাকে ভয় করতো, যে কারণে কারাগারে পাঠাতো। একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য আমাদের অনেক ছেলেরা প্রাণ দিয়েছেন। তাই আসুন সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করি।'
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরীফ ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান তুহিনসহ অন্য নেতারা।