আর্কাইভ  রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫ ● ৯ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫
একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে বলল বাংলাদেশ

একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে বলল বাংলাদেশ

জয়ের জটিল সমীকরণ

জয়ের জটিল সমীকরণ

হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ
সীমাহীন বর্বরতা
হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

উত্তরবঙ্গে অবনতি, বন্যার আশঙ্কা মধ্যাঞ্চলেও

সোমবার, ২০ জুন ২০২২, সকাল ০৮:১৫

Advertisement Advertisement

ডেস্ক: পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যায় গতকাল রবিবারও দেশের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয়। এমনকি আগামী দুই-তিন দিনের আগে সেখানে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর মধ্যে গঙ্গা অববাহিকায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দেশের মধ্যাঞ্চলেও। তবে সিলেট অঞ্চলে পানি আর বাড়েনি। বরং আজ সোমবার থেকে সিলেট অঞ্চলের পানি নামতে শুরু করবে বলে মনে করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। আর নতুন করে প্লাবিত হতে পারে টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চল। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শনিবার ভোর থেকে গতকাল রবিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত সিলেটে মোট বৃষ্টিপাত হয় ৩০৪ মিলিমিটার। আর রবিবার সারাদিনে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১ মিলিমিটারেরও কম। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিবহুল এলাকা চেরাপুঞ্জিতে গত শনিবার বৃষ্টিপাত ছিল ২৮৯ মিলিমিটার। গতকাল তেমন বৃষ্টি হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিলেটের বন্যার মূল কারণই চেরাপুঞ্জির ভারী বৃষ্টি। সেখানকার বৃষ্টি কমে গেছে; আবার সিলেটেও তেমন বৃষ্টি হয়নি। তাই সিলেট অঞ্চলে ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোর সবগুলোরই পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে ৯টি নদীর ১৮ পয়েন্টের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি দ্রুত বাড়ছে। এর প্রভাবে গাইবান্ধা, রংপুর, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। আগামী কয়েক দিন সেখানে পানি আরও বাড়তে পারে। অন্যদিকে বাংলাদেশের উজানের আরেক নদী গঙ্গা অববাহিকায় ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ফলে সেখানে পানি বেড়ে তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের মধ্যাঞ্চলে প্রবেশ করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি একযোগে বাড়লে দেশে মাঝারি থেকে বড় বন্যা হয়ে থাকে। ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় পানি বাড়লে তা চার থেকে সাত দিনের মধ্যে পদ্মা হয়ে বঙ্গোপসাগরে নেমে যায়। কিন্তু গঙ্গার পানি একই সময়ে বাড়লে ব্রহ্মপুত্রের পানির চাপে দেশের উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত পানি আটকে থাকে। ফলে পানি ১০ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক একে সাইফুল ইসলাম বলেন, সিলেটের বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে পানি বাড়তে শুরু করতে পারে। আর ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গার পানি একসঙ্গে বাড়লে বন্যা আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে ও দীর্ঘ সময় স্থায়ী হতে পারে। তিনি বলেন, দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বন্যার পানি নেমে যাবে। এগুলো সুরমা, কুশিয়ারা মেঘনা হয়ে ভৈরব ও চাঁদপুর দিয়ে বঙ্গোপসাগরের নেমে যাবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ বলছে, সিলেটে বৃষ্টি কমে গেলেও চট্টগ্রামে বৃষ্টি বাড়তে শুরু করেছে। রবিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলোতও আজ দিনভর বৃষ্টি চলেছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তা আরও বাড়তে পারে।

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয়বাষ্পপূর্ণ মেঘ আসা অব্যাহত রয়েছে। আর তা হিমালয় পর্বতমালাসহ বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকায় বাধা পেয়ে বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। আগামী কয়েক দিন দেশের উত্তরাঞ্চল এবং চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টি বাড়তে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর গাণিতিক মডেলভিত্তিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের স্থানগুলোতে মাঝারি থেকে ভারী এবং কোথাও কোথাও অতিভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে। ফলে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা ও ধরলাসহ প্রধান নদ-নীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

এই সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারেও বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। একই সময়ে তিস্তা নদীর পানি সমতল বিপদসীমার কাছাকাছি অথবা ওপরে অবস্থান করতে পারে।

মন্তব্য করুন


Link copied