রংপুর : শহর-বন্দর নগর সবস্থানেই আধুনিকতার ছোঁয়া। কৃষি সেক্টরও এর থেকে পিছিয়ে নেই। যান্ত্রিকতা এবং আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে লাঙল ও গরু দিয়ে হাল চাষ।
রংপুরের বদরগঞ্জে গরু গাড়ির চাঁকা ও চাষের জন্য হালের বিখ্যাত হাট ছিল। এখন সেসব অতীত। সেই হাটও নেই। সেই হালও নেই। যন্ত্রিকতা ও উন্নত চাষ পদ্ধতির কারণে এখন আর কেউ গরু দিয়ে জমি চাষ করেন না। ভোর বেলা কৃষকরা বের হত জমি চাষ দেয়ার জন্য গরু এবং হাল নিয়ে। হাল দিয়ে চাষের পরে দেয়া হত মই। এখন সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না।
পীরগাছার কল্যানি ইউনিয়নের চাষি নজরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, গরুর হাল ও লাঙল দিয়ে প্রতি বিঘা জমি ৬০০ /৭০০ টাকা পাওয়া যায়। বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে তিনি গরু দিয়ে হাল চাষ করছেন। তিনি বলেন, এমন একটা সময় ছিল গরু ছাড়া হাল চাষের কথা চিন্তাই করা যেত না। এখন গরুর দাম বেশি এবং ট্রাক্টর যন্ত্রের সাহায্যে চাষ করায় সময় ও খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা এখন আর গরু দিয়ে জমি চাষ করেন না। তবে এতিহ্য হিসেবে কেউ কেউ ধরে রেখেছেন গরু দিয়ে জমি চাষের বিষয়টি। আবার অনেকে হাল এবং মই পুরনো দিনের স্মৃতি হিসেবে বাড়ির আঙ্গিনায় রেখে দিয়েছেন।
কৃষিবিদদের মতে গ্রাম বাংলা থেকে গরুর হাল ও মই বিলুপ্তির প্রধান কারণ হলো আধুনিক প্রযুক্তির প্রসার। আধুনিক প্রযুক্তি এখন সহজ লভ্য হওয়ায় কেউ সময়, পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় করছে না গরুর হালে। এছাড়া গরুর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আগের মত ঘরে ঘরে গরু পালনের বিষয়টিও কমে গেছে। এক সময় চাষ দেয়ার জন্য নির্দিষ্ট গরু পালন করা হত। গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানান কারণে সময়ে পথ পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে কৃষি কাজে গরুর ব্যবহার। যারা এখন গরু লালন-পালন করছেন তারা বাণিজ্যিক চিন্তা ভাবনায় গরু পালন করছেন। তাই গরুকে বিকল্প অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না। অর্থাৎ গরুকে এখন আর কৃৃষি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না।