ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ২২ মে॥ পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নীলফামারীর সৈয়দপুরে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীদের ককটেলের আঘাতে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক সহ চারজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, দেশীয় অস্ত্র, ইয়াবা এবং একটি মোটর সাইকেল জব্দ করে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ভোর রাত আড়াইটার দিকে সৈয়দপুর উপজেলার বাইপাস মহসড়কের গোলাহাট বধ্যভূমি এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান চলাকালে পুলিশের সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের বন্দুক যুদ্ধে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন সৈয়দপুর পৌর শহরের ইসলামবাগ মহল্লার আব্দুল হান্নানের ছেলে মো. জনি হোসেন (২৭) ও নিচু কলোনী মহল্লার ইউসুফ হোসেনে ছেলে শাহিন আহমেদ (৩০)।
নিহতরা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় আটটি করে মামলা রয়েছে বলে জানান নীলফামারীর সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল।
তিনি আরও জানান, গতকাল সোমবার (২১ মে) বিকালের দিকে নিয়মিত মাদক বিরোধী অভিযানে সন্ধ্যার পর ইসলামবাগ মহল্লা থেকে জনিকে এবং নিচু কলোনী মহল্লা থেকে শাহিনকে গ্রেফতার করা হয়।
থানায় এনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, যে তারা গোলাহাট এলাকার মাদক ব্যবসায়ী জসিয়ার রহমান ও নূর বাবুর কাছ থেকে ইয়াবা, ফেন্সিডিল, বিদেশী মদসহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য ক্রয় করে এলাকায় বিক্রি করে। জসিয়ার ও নূরবাবু সৈয়দপুর গোলাহাট বদ্ধভূমির বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা, ফেন্সিডিল, মদ লুকিয়ে রাখে।
গ্রেফতারকৃতদের সহ তাদের তথ্য অনুযায়ী গোলাহাট বধ্যভুমি এলাকায় অপর দুই মাদক ব্যবসায়ী জসিয়ার ও নূর বাবুকে ধরতে ও মাদক উদ্ধারে আজ মঙ্গলবার ভোর রাত আড়াইটার দিকে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা গোলাহাট বধ্যভূমি এলাকায় পৌছালে মাদক ব্যবসায়ী জসিয়ার ও নূরবাবু তাদের দলের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল ছোড়ে। পুলিশও মাদক ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে পাল্টা গুলি ছুড়ে। এই সুযোগে গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী জনি ও শাহিন পালানোর চেষ্টা করলে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে তারা গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় ককটেলের আঘাতে আহত হয় সৈয়দপুর থানার উপ-পরিদর্শক ওয়াদুদ রহমান ও কনস্টেবল মোর্কারম হোসেন রাশেদুল ইসলাম ও আমিনুজ্জামান সহ ৪ পুলিশ সদস্য। এ সময় পালিয়ে যায় মাদক ব্যবসায়ী জসিয়ার ও নূরবাবু তাদের দলের অন্যান্য সদস্যরা। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় তাদের ফেলে যাওয়া ১২৩ পিচ ইয়াবাসহ ৪টি দেশীয় অস্ত্র ও একটি মোটরসাইকেল।
এ সময় গুলিবিদ্ধ দুইজন ও ককটেলের আঘাতে আহত চার পুলিশ সদস্যদের সৈয়দপুর ১০০ শর্যা হাসপাতালে নেয়া হলে কতব্যরত চিকিৎসক জনি ও শাহিনকে মৃত ঘোষনা করে। আহত চার পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। নিহত জনি ও শাহিনের মরদেহ হাসপাতাল হতে সৈয়দপুর থানায় নেওয়া হয়েছে। তাদের লাশের ময়না তদন্তের জন্য নীলফামারী জেলার মর্গে প্রেরন করা হবে।
এদিকে এ ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ী জসিয়ার ও নূর বাবুকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ চিরুনী অভিযান শুরু করেছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল।