আর্কাইভ  বুধবার ● ২০ আগস্ট ২০২৫ ● ৫ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   বুধবার ● ২০ আগস্ট ২০২৫

এমএ পরীক্ষায় বসলেন হার না মানা তৃতীয় লিঙ্গের মাহি, জানালেন ইচ্ছা

মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, বিকাল ০৭:২২

Advertisement Advertisement

 নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৭ বছর বয়সি তৃতীয় লিঙ্গের রবিউল খন্দকার মাহি। মঙ্গলবার রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে তিনি মাস্টার্স ১ম পর্বের পরীক্ষায় অংশ নেন। রংপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এমএ পরীক্ষায় বসেছেন হার না মানা তৃতীয় লিঙ্গের মাহি।

পরীক্ষা শেষে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের কোনো পিছুটান নেই। আমি গরিব ও অসহায় রোগীদের বিনা টাকায় ব্লাড ম্যানেজ করে দিই। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমি মানুষকে সহযোগিতা করি।’

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ছড়ান গ্রামের ইলিয়াস হোসেন ও ফৌজিয়া বেগমের ২ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে সবার বড় রবিউল ইসলাম মাহি। তিনি ৭ বছর বয়সে বুঝতে পারেন যে, অন্যদের থেকে তিনি আলাদা। তখনই তার মতো যারা তাদের খুঁজে বের করে খালাশপীরহাটে চলে আসেন। প্রায় ১৮ বছর ধরে তিনি পীরগঞ্জের খালাশপীর হাটে হিজড়া সর্দার সাইফুল ইসলাম স্মৃতির সঙ্গে বসবাস করছেন। পাশাপাশি তিনি পীরগঞ্জের ভোটারও হয়েছেন।

জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলার পূর্ব বড় বালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাহি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি), ২০১৫ সালে ছড়ান দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি, ২০১৭ সালে কেশবপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০২০ সালে খালাসপীর বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএসএস পাশ করেন। এরপর তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে এমএ ১ম বর্ষে ভর্তি হন।

মঙ্গলবার তিনি এমএ ১ম বর্ষের ২০২২ সালের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন। সেশন জটের কারণে ২০২২ সালের পরীক্ষা ২০২৫ সালে দিচ্ছেন। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি অন্যের উপকারসহ ধর্মীয় ও সমাজসেবামূলক কাজ করেন বলে জানা গেছে।

২০১৯ সালে তাকে সরকারিভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং ভাতাভোগী করা হয়। তিনি ব্লাড ডোনেশন সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। 

মাহি বলেন, আমি মাস্টার্স শেষে পরিবার পরিকল্পনা বা সমাজসেবা বিভাগে সরকারি চাকরি করে মানুষের সেবা করতে চাই। কারণ আমি তো বিয়েও করতে পারব না। আমরা প্রতিটি পদেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমার জীবনের কোনো পিছুটান নেই। আমি গরিব ও অসহায় রোগীদের বিনা টাকায় ব্লাড ম্যানেজ করে দেই এবং আমিও ব্লাড দেই। এছাড়াও মসজিদ ও মাঠ উন্নয়ন, ওয়াজ মাহফিল পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানেও আমার সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করি। আমি ভূমিহীন।

হিজড়া সর্দার সাইফুল ইসলাম স্মৃতি জানান, সরকারিভাবে পীরগঞ্জ উপজেলায় ৫৪ জন হিজড়া রয়েছেন। আমরা সামাজিক মর্যাদা চাই।

মন্তব্য করুন


Link copied