আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪ ● ৭ কার্তিক ১৪৩১
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২২ অক্টোবর ২০২৪
 
 width=
 
 
 width=
 
শিরোনাম: উত্তরবঙ্গে ঘনিয়ে আসছে শীত; তাপমাত্রা ১৭.৮       আড়াই শতাধিক এসআইকে অব্যাহতি       প্রবাসী সরকার: কী বলছে আ.লীগ ও ভারত       রংপুরে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল        ব্যারিস্টার সুমন আটক      

 width=
 

গৃহবধু জ্যোতির আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় স্বামী গ্রেফতার

সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, বিকাল ০৬:১১

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে গৃহবধু জ্যোতি আগরওয়ালের(৪২) আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় গ্রেফতার হয়েছে স্বামী সুমিত কুমার আগরওয়াল ওরফে নিক্কি (৪৫)। সৈয়দপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। সোমবার(১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গ্রেফতারকৃত সুমিত কুমার আগরওয়াল নিক্কিকে আদালতের মাধ্যমে পুলিশ জেলা কারাগারে প্রেরণ করে। ওই মামলার অপর ৩ আসামী জ্যোতির শাশুড়ি উমা দেবী আগরওয়াল (৬০), দেবর অমিত কুমার আগরওয়াল(৪২) ও জা ডা. অমৃতা কুমারী আগরওয়াল(৩৫) পলাতক রয়েছে।

সৈয়দপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মৃত জ্যোতি আগরওয়ালের বড় ভাই বিমল কুমার জাজোদিয়া আগরওয়াল (৬০) বাদী হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচনার পিনাল কোর্র্ট ১৮৬০ এর ৩০৬ ধারায় সৈয়দপুর থানায় মামলা (নম্বর ১৯) দায়ের করেন। আমরা অপর তিন আসামীকে গ্রেফতারের চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

নীলফামারী কোর্ট পরিদর্শক মোমিনুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত সুমিত কুমার আগরওয়াল নিক্কিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জাহিদ হাসানের আদালতে তোলা হয়। সেখানে আসামী পক্ষের আইজীবি আসামীর জামিন প্রার্থনা করেন। কিন্তু আদালত জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে আসামীকে জেল হাজতে প্রেরনের আদেশ দেন। কোট পুলিশ আসামীকে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।

উক্ত গৃহবধু আত্মহত্যার পূর্বে দুই পাতার একটি সুইসাইড নোট লিখে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। নোটটিতে তিনি উল্লেখ করেন- ২০০১ সালের ১২ ডিসেম্বর তার বিয়ে হয় সুমিত কুমার আগরওয়াল ওরফে নিক্কির সাথে। স্বামী, শাশুড়ি, দেবর ও জা এর নাম উল্লেখ জ্যোতি সেখানে লিখে যায় ২১ বছরের বিবাহিত জীবনে ওরা আমাকে সুখের দিন দেখতে দেয়নি। সেই সাথে নির্যাতনের বিভিষিকার কাহিনী গুলো তিনি তুলে ধরে সেই নোটে। পরিশেষে লিখেন “আমি আমার মৃত্যুর বিচার চাই।”

জ্যোতির দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। এরা হলো রাঘব আগরওয়াল(১৯) ও ইয়াস আগরওয়াল ওরফে ফান্টুস(১১)। জ্যোতি তার নোটে ছেলে দুইজনের বিষয়ে লিখে যায় ওরা নির্দোষ। আমার উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তারাও নির্যাতিত হতো। এদিকে মা এর এই আত্মহনন তারা মেনে নিতে পারছেনা। তারা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

প্রকাশ থাকে যে, গত বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই গৃহবধু তার সুইসাইড নোটটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে সৈয়দপুর শহরের শহীদ বদিউজ্জামান সড়কে স্বামীর বাড়িতে আতœহত্যার জন্য অতিরিক্ত ঘুমের ঔষধ সেবন করেছিল। ফলে গুরুতর অসুস্থ হলে বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা করতে থাকেন নিক্কির ছোট ভাই অমিত কুমার আগরওয়ালের স্ত্রী ডা. অমৃতা কুমারী আগরওয়াল। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে জ্যোতিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার(১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে মৃত্যু বরণ করে।

জ্যোতির বাবা জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার পুরানবাজার মহল্লার মৃত পুরানমল জাজোদিয়া আগরওয়াল। মামলার বাদী হয়েছেন জ্যোতির বড় ভাই বিমল কুমার জাজোদিয়া আগারওয়াল(৬৩)। জ্যোতির স্বামী সুমিত কুমার আগারওয়াল নিক্কি সৈয়দপুর শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও উপজেলা হিন্দু কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি সৈয়দপুর শহরের মৃত সুশীল কুমার আগরওয়াল ছেলে। এ ঘটনা সৈয়দপুর শহরে চাঞ্চল্যের পাশাপাশি তোলপাড় সৃস্টি করেছে। 

মন্তব্য করুন


 

Link copied