আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

তিস্তার চরে বাদাম চাষে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা

শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, দুপুর ০১:০৭

Advertisement Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদক:  তিস্তা নদীর চরাঞ্চলজুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় বাদাম চাষ হচ্ছে। যেদিকে দু-চোখ যায় শুধু সবুজ বাদামের ক্ষেত দেখা যায়। সবুজ পাতায় দোল খাচ্ছে বাদামের গাছ। অল্প বিনিয়োগে লাভ বেশি হওয়ায় দিনদিন বাদাম চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীবেষ্টিত রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া  ও পীরগাছা উপজেলার চরাঞ্চলে বাদাম চাষে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

এদিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে বাদামের বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। তবে সারাদেশে চলমান প্রচণ্ড দাবদাহ ও খরায় ফলন কিছুটা ব্যাহত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান,  চরাঞ্চলে চাষ হওয়া অন্যান্য ফসলের তুলনায় বাদাম চাষে লাভ বেশি ও বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে বাদাম চাষে। চলতি মৌসুমে বেশির ভাগ জমিতে বিনা-৪, বারি-৬, বারি-৮ ও বারি-৯ জাতের বাদাম চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে তিস্তার চরে প্রায় ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার বাদাম উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন তারা।  

সরেজমিনে কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা নদীতে ভেসে ওঠা চরাঞ্চল তালুক সাহাবাজ চর, ঢুষমারা চর, গনাই চর, হয়বতখা চর, বিশ্বনাথ চর, হারাগাছ নাজিরদহ চর এলাকায় দেখা গেছে বাদামের ব্যাপক আবাদ হয়েছে। বালুচরে দিগন্ত মাঠ জুড়ে বাদাম ক্ষেত। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই বাদামের সবুজ ক্ষেত। বাদামের সবুজ পাতা হলুদ হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে কৃষকরা। বাদাম গাছের পাতা হলুদ হলেই বাদাম তোলার উপযোগী হয়। তখন কৃষক ও কৃষাণীদের দম ফেলার ফুরসত থাকবে না। তবে খরস্রোতা তিস্তার পানি নিয়ে আতঙ্কে আছেন কৃষকরা। হঠাৎ করে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে কৃষকদের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।  

একই চিত্র দেখা গেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা, লক্ষ্মীটারী, মর্নেয়া, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ এবং পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলগুলোতে।  

বাদাম চাষিদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে খরচ হয় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা, ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৭ থেকে ৮ মণ পর্যন্ত বাদাম উৎপাদন হয়। প্রতি মণ বাদাম সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাজারদরে বিক্রি হয়।

কাউনিয়া উপজেলার চরগনাই গ্রামের বাদাম চাষি আলেফ উদ্দিন বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে ১২০০ শতাংশ জমিতে বাদামের চাষ করেছেন। ‘বর্তমানে বাদামের অবস্থা বেশ ভালো। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন পাবো। তবে ভয়ে আছি নদীর পানি বাড়া নিয়ে। পানি বাড়লে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। ’

একই ধরনের কথা বলেছেন কাউনিয়া বিশ্বনাথ গ্রামের বাদাম চাষি সিরাজুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, পাঞ্জরভাঙ্গা এলাকার পস্পেন্দ্র চন্দ্র রায়, দিনেশ রায়সহ কয়েকজন। তারা বলেন, যদি বৃষ্টি ও নদীর পানিতে বাদাম তলিয়ে না যায় তাহলে লাভের মুখ দেখব।

টেপামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘চরের মানুষেরা ব্যাপক হারে বাদাম চাষ করছেন। চাষিদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া হলে তারা বাদাম চাষে আরও আগ্রহী হবেন। ’

গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী চল্লিশ সাল এলাকার আবু বক্কর মিয়া ও সাবের আলী বলেন, ‘এবারের মতো প্রতিবছর যদি কৃষি বিভাগ ভালোমানের বীজের ব্যবস্থা করে তবে তিস্তার চরে বাদামের চাষ আরও বাড়বে। ’

কাউনিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ তানিয়া আকতার জানিয়েছেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় বাদামের বাম্পার ফলনের আশা করছি। গত বছর বাদামের ভালো দাম পাওয়ায় এবার কৃষকরা বেশি করে বাদাম চাষ করেছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, গতবারের চেয়ে এবার চাষ বেড়েছে। কৃষি বিভাগ বাদাম চাষিদের বিনামূল্যে বীজ ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে আসছে।  

মন্তব্য করুন


Link copied