স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ রূদ্ধমূর্তি ধারন করেছে তিস্তা নদী। নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তাপাড় কাঁপিয়ে শোঁ-শোঁ শব্দে কাঁপিয়ে চলেছে নদীর তীব্র স্রোতে। রবিবার (৫ অক্টোবর) রাত ১০টায় তিস্তার পানি নীলফামারীর ডালিয়াস্থ তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার (৫২.১৫) ৩০ সেন্টিমিটার (৫২.৪৫) উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে রাত ৯টায় বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার, রাত আটটায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার, সন্ধ্যা ৬টায় ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে বেলা ৩টায় বিপৎসীমার এক সেন্টেমিটার নিচে ছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাব চৌধুরী জানান, “উজানের ঢলে নদীর পানি এখনও হু-হু করে বাড়ছে। ফলে তিস্তা ব্যারাজের খুলে রাখা ৪৪টি স্লুইচগেট দিয়ে মিনিটে ৪ লাখ কিউসিক পানি অপসারন হয়ে ভাটির দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এরপরেও সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।”
এখন তিস্তা ব্যারেজের রক্ষা কবজ বলে পরিচিত ফাডবাইপাস সড়কের উপর দিয়ে নদীর পানির বয়ে যাচ্ছে। ফাডবাইপাস অটো ভেঙ্গে গেলে তিস্তা ব্যারেজের ওপর পানির চাপ কমবে বলে তিনি উল্লেখ করেন আরও জানান, “পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কর্মকর্তাও কর্মচারীরা ফাডবাইপাস ও কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্টে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান নিয়ে ভাঙ্গন রক্ষার চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
এদিকে তিস্তার পানির তীব্র স্রোতে ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বরে অবস্থিত ক্রস বাঁধটি ইতোমধ্যে বিধ্বস্থ হয়ে ওই এলাকার পুর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফাটপাড়াসহ তিস্তা পারের বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়ি ঘর ফসলিজমি তলিয়ে গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি বাবুল হোসেন। তিনি জানান, “কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্টে অবস্থিত ভারত বাংলাদেশের তিস্তার ডান তীরের যৌথবাঁধটি হুমকীর মুখে পড়ে। ঝাড়শিঙ্গেশ্বরের ক্রস বাঁধটি বিধ্বস্থ হওয়ায় যৌথবাঁধটি রক্ষা পেয়েছে। তবে এখনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্টের বিজিবি ক্যাম্পটি।”
এদিকে রাত পনে ১০টার দিকে কালিগঞ্জ জিরোপয়েন্ট এর পূর্ব ও দক্ষিন দিকে সড়কটি হুমকীর মুখে পড়ায় শতশত মানুষজন সড়কটি রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই সড়কটি বিধ্বস্থ হলে ডান তীর বাঁধ সহ শতশত বসতঘর বানের পানিতে ভেসে যাবে বলে জানান ওই এলাকার শিক্ষক মশিউর রহমান। তিনি বলেন, “শুধু এলাকাবাসী নয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লেঅকজন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা সড়ক ও ডানতীর প্রধান বাঁধ রক্ষার্থে ঝাপিয়ে পড়েছে। তবে তিস্তা নদীর পানি হু-হু করে বেড়েই চলেছে।”