স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীতে নিখোঁজের একদিন পর শাহরিয়ার সিহাব নামের ১২ বছরের এক শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার হয়েছে। রবিবার(৫ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টা দিকে জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের বাড়ির অদূরে একটি সেচ নালা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই গ্রামের এরশাদুল হকের ছেলে এবং শহরের নীলফামারী ক্যাডেট একাডেমির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সিহাব।
এঘটনায় সোমবার(৬ মার্চ) বিকাল ৫টার দিকে সদর থানায় তিনজন নামীয়সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জন আসামীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এলাকার দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
স্বজনরা জানায়, শনিবার(৪ মার্চ) সন্ধ্যা সাতটার দিকে নিখোঁজ হয় সিহাব। এর পর রাত থেকে আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে তাকে খুঁজতে থাকেন পরিবারের সদসদ্যরা। এলাকায় মাইকিং করেও সন্ধান না পেয়ে রবিবার সন্ধ্যায় সদর থানায় জিডি করেন তার বাবা। এরপর রাত নয়টার দিকে (রবিবার) জমিতে সেচ দিতে গিয়ে বাড়ির প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে সেচ নালায় তার লাশ দেখতে পায় এলাকার কৃষক হাচিনূর রহমার (২২)। তার চিৎকারে এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও সিআইডি ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে বিকালে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে।
সিহাব হোসেনের দাদা মতিয়ার রহমান (৬০) বলেন, কাইল(শনিবার) মাগরিবের নামাজ পড়ি মুই মোড়ের (বাড়ির এলাকার মোড়) দোকানত দেখেছ সিহাব পুড়ি খাছে। এরপর দাদা নাতি একসাথে পুড়ি খায়া বাড়ি আইসেছি। বাড়ির কাছোত আসিয়া কইল তোমরা বাড়ি যাও মুই পরে আইসেছ। সেই থাকি কোনঠে গেইল (কোথায় গেলো) আর সারা রাইত খুঁজি পাইনো না।
স্থানীয়রা জানায় বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূড়ে সেচ নালায় গর্ত করে গলা কাটা অবস্থায় সিহাবকে কাদায় পুতে রাখা হয়। রবিবার রাত নয়টার দিকে প্রতিবেশী কৃষক হাচিনূর জমিতে সেচ দিতে গেলে ওই নালার মাঝখানে মাটি উঁচু থাকার কারণে পানি আটকা পড়ে। ওই মাটি সরাতে গেলে সিহাবের গলাকাটা লাশ দেখতে পায়। পরে তার চিৎকারে এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে গিয়ে সিহাবের লাশ শনাক্ত করে।
নিহত সিহাবের বাবা এরশাদুল হক শহরের একটি দোকানে কর্মচারী। মা শাহানাজ বেগম ইপিজেডের একটি কারখানার শ্রমিক। তাদের এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে সিহাব বড়। তার ছোট বোন ইসরার বয়স ৩ বছর।
নীলফামারী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোক্তারুল আলম বলেন, রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা এরশাদুল হক বাদী হয়ে সন্দেহভাজন ৩জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪/৫ জন ব্যক্তির নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা রাতে এলাকার দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনেছি। এরা হলেন, তারা হলেন, গ্রামের সুরত আলীর ছেলে ময়নুল ইসলাম (৩০) ও নাজমুল ইসলাম (৩৮)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। হত্যা রহস্য উদঘাটনে সদর থানা পুলিশের সঙ্গে ডিবি পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই কাজ করছে। #