স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী: শ্বশুড়বাড়িতে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী রত্না ও আড়াই বছরের শিশু কন্যা ইয়াসমিনকে হত্যা করেছে স্বামী জিয়ারুল ইসলাম (৩০)। স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার পর শ্বাশুড়ি ও নবজাতক অপর ১৪ দিনের মেয়ে সন্তানকে হত্যার চেস্টা চালায় জিয়ারুল। সেখানে ব্যর্থ হবার পর সে নিজেই নিজের হাত পা পেট ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে আত্মহত্যার চেস্টা চালায়। বুধবার(৩১ আগষ্ট) দুপুর দেড়টার দিকে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ি ইউনিয়নের নিমজখানা হরতকীতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। জিয়ারুল ইসলাম পেশায় একজন কাঠ মিস্ত্রি একই ইউনিয়নের পশ্চিম বোড়াগাড়ি গ্রামের চান্দিনাপাড়ার সোমারু ইসলামের ছেলে। ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে সেখানে পুলিশ সহ শতশত মানুষজন ছুটে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সকালে জিয়ারুল তার শ্বশুড় আব্দুল করিমের বাড়িতে যায়। দ্বিতীয় সন্তান প্রসব করায় সেখানে তার স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান ছিল। ধারানা করা হচ্ছে প্রথম সন্তান মেয়ে ও দ্বিতীয় সন্তান মেয়ে হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় কাঠ মিস্ত্রি জিয়ারুল। ফলে স্ত্রীর সাথে পারিবারিক কলহের সৃস্টি হয়। এরই জের ধরে জিয়ারুল তার স্ত্রী রত্না বেগম (২৬),আড়াই বছরের শিশু কণ্যা ইয়াসমিন আরা, শাশুড়ি বিলকিস বেগমকে (৪৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেন। এরপর তার ১৪ দিনের নবজাতক কণ্যা সন্তানকে পুকুরে ফেলে দেয়। এলাকাবাসী তাৎক্ষনিক পুকুরে নেমে নকজাতকটিকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এরপর এলাকাবাসী জিয়ারুলকে আটকের চেষ্টা করলে সে নিজে নিজের পেট কেটে আত্মহত্যার চেস্টা চালায়। ওই সময় স্ত্রী রত্না বেগম ও আড়াই বছরের শিশু কণ্যা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে মারা যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিয়ারুল, তার শাশুড়ি বিলকিস বেগম ও ১৪ দিনের শিশু কণ্যাকে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত জিয়ারুল ইসলামকে পুলিশ পাহাড়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে তার অবস্থা আশংঙ্কাজনক বলে জানা যায়।
ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য অশ^ণি কুমার রায় বলেন, ‘জিয়ারুলের বাড়ি থেকে তার শ^ শুর বাড়ির দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। প্রায় তিনমাস আগেও তাদের পারিবারিক কলহ হয়। বুধবারের ঘটনাটি কিভাবে হলো তা এখনো পরিস্কার না।’ তবে ধারনা করা হচ্ছে স্ত্রী রতœার দ্বিতীয় সন্তান মেয়ে হওয়ার কারনে কাঠমিস্ত্রী জিয়ারুল এমনটি করতে পারে।
ডোমার থানার ওসি মো. মাহমুদ উন নবী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহ থেকে ঘটনার সুত্রপাত হয়েছে। আহত তিনজনের মধ্যে জিয়ারুল ইসলামকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার শাশুড়ি ও ১৪ দিনের শিশু সন্তানটি ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিসাধিন আছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।’