স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারী জেলার চারটি সংসদীয় আসনে ভোট গ্রহন করা হবে ৫৬৩টি কেন্দ্রে। ভোট গ্রহনের জন্য শনিবার(৬ জানুয়ারি) বিকেলের মধ্যে এসব কেন্দ্রর প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। ওই ৫৬৩ কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) ১৬৮টি। ঝুঁকিপূর্ণ এসব কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে অধিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এরমধ্যে নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনে ১৫৪টির মধ্যে ৪০টি, নীলফামারী-২ (সদর) আসনে ১৩৫টির মধ্যে ৩৩টি, নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসনে ১০৫টির মধ্যে ৪৬টি, নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনে ১৬৯টির মধ্যে ৪৯টি ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। রির্টানিং কর্মকর্তার দপ্তর এসব কেন্দ্রেকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
নীলফামারী ১ আসনঃ- ডোমার ও ডিমলা উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে এ আসন। ১৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ডোমার উপজেলায় ৭০টি এবং ডিমলা উপজেলায় ৮৪টি। আসনটিতে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২৯ হাজার ৯৪। এর মধ্যে নারী ২ লাখ ১২ হাজার ৩০২, পুুরুষ ২ লাখ ১৬ হাজার ৭৯৬, হিজরা ২ জন। ডিমলা উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নে ২ লাখ ২৪ হাজার ৬৯৬, ডোমার উপজেলায় ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ২ লাখ ৪ হাজার ৩৯৬ ভোটার রয়েছে।
আসনটিতে ৭ প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার (নৌকা), জাতীয় পার্টির তছলিম উদ্দিন (লাঙ্গল) সাবেক সংসদ সদস্য তৃণমূল বিএনপির অ্যাডভোকেট এন কে আলম চৌধুরী (সোনালী আঁশ), সাবেক সংসদ সদস্য বিএনএম এর জাফর ইকবাল সিদ্দিকী (নোঙ্গর), জাতীয় পার্টি (জেপি) মখদুম আজম মাশরাফী (বাইসাইকেল) বিএনএফ এর সিরাজুল ইসলাম (টেলিভিশন) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমরান কবির চৌধুরী (ট্রাক)।
নীলফামারী ২ আসনঃ- জেলার সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে এ আসন। ভোট কেন্দ্র ১৩৫টি, ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯১ জন। নারী ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩, পুরুষ ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭১৮ জন।
আসনটির চার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর (নৌকা), জাতীয় পার্টির শাহজাহান আলী চৌধুরী (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোরছালিন ইসলাম (ডাব) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন (ট্রাক)।
নীলফামারী-৩ আসনঃ- জলঢাকা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে আসটি গঠিত। মোট ভোট কেন্দ্র ১০৫টি। ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩৩১ জন। নারী ১ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৮, পুরুষ ১ লাখ ৪০ হাজার ৭২ ও হিজরা ১ জন।
প্রতিদ্বন্দ্বী ৯ প্রার্থী হলেন, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল (লাঙ্গল), তৃণমুল বিএনপির খলিলুর রহমান (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কল্যাণ পাটির বাদশা আলমগীর (হাতঘড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন পাভেল (কাঁচি), স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা যুবলীগের সহসভাপতি মার্জিয়া সুলতানা (ঈগল), স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ শামীম (মোড়া), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য জেলা জাতীয় পাটির উপদেষ্টা মন্ডলীর সহসভাপতি কাজী ফারুক কাদের (কেটলি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্মআহ্বায়ক হুকুম আলী খান (ট্রাক), গণতান্ত্রী পাটির মোজাম্মেল হক (কবুতর)। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাঈদ শামিম ( মোড়া) এবং হুকুম আলী খান (ট্রাক) নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে গেছেন।
নীলফামারী-৪ আসনঃ- সৈয়দপুর ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত আসনটির ভোট কেন্দ্র ১৬৯টি। এর মধ্যে সৈয়দপুর উপজেলায় ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৯১টি, কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৭৮টি। আসনটির ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২৬ হাজার ৮৭। নারী ২ লাখ ১২ হাজার ২৩৮, পুুরুষ ২ লাখ ১৩ হাজার ৮৪৪ ও হিজরা ৫ জন। সৈয়দপুর উপজেলায় ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৪৪ জনের মধ্যে নারী ১ লাখ ৭ হাজার ১০০জন, পুরুষ ১ লাখ ৮ হাজার ২৪৪ জন ও হিজরা ৪ জন। কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ৯টি ইউনিয়নে ২ লাখ ১০ হাজার ৭৩৮ ভোটারের মধ্যে নারী ১ লাখ ৫ হাজার ১৩৮জন, পুরুষ ১ লাখ ৫ হাজার ৬০০ জন ও হিজরা ১ জন।
আসটির ৭ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন, জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান (লাঙ্গল). ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আব্দুল হাই সরকার (আম)), তৃণমূল বিএনপির আব্দুল্লাহ আল নাসের (সোনালী আঁশ), জাসদের আজিজুল হক (মশাল), বিএনএম এর এম সাজেদুল করিম (নোঙ্গর), স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখছেদুল মোমিন (ট্রাক), স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি সিদ্দিকুল আলম (কাঁচি)।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ জানান, জেলায় চারটি সংসদীয় আসনে ৫৬৩টি ভোট কেন্দ্রে ৩ হাজার ৩৫৪টি বুথে ভোট গ্রহন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ১৬৮টি ভোট কেন্দ্রে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পুলিশ ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে সেনাবিবাহিনী, বিজিবি, র্যাব সদস্যরা নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।