পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের পাটগ্রামে প্রেমের টানে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে এলেও বিয়ে না করেই ফেরত যেতে হলো ভারতীয় তরুণী রিংকি বেগমকে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে ঐ তরুণীকে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান বুড়িমারী স্থলবন্দর চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম।
গত (৮ ই সেপ্টেম্বর) প্রেমিক রবি প্রেমিকা রিংকি বেগমকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে দুই দেশের চোরাকারবারি সহায়তায় ভোররাতে কাঁটাতারের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ নিয়ে আসে।
বাংলাদেশে খাবার রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে গেলে স্হানীয় লোকজনের কবলে পরলে মেয়ের দূর সম্পর্কের চাচা শফিকুল ইসলাম বাপ্পি তাদের বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রেমিক রবি লাপাত্তা হয়ে যায় এবং বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়।
বিয়ের দাবিতে রিংকি বেগম ৫ দিন ধরে তার চাচার বাসায় থাকলেও বিষয়টি পারিবারিক ভাবে ধামাচাপা দিতে প্রেমিক রবির বড় বোন শিখা রিংকি বেগমকে ভয়-ভীতি দেখায় রবিকে লুকিয়ে রাখে।
স্হানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে রিংকি বেগম নামে এক ভারতীয় তরণী বিয়ে করতে বাংলাদেশে আসলেও অবশেষে রবির বড় বোন শিখা কারসাজি করে মেয়ের নামে অপপ্রচার চালিয়ে অবৈধ,সুন্দর না ট্যাগ দিয়ে রবিকে লুকিয়ে রাখে ফলে মেয়ের চাচার পরিবার রবিকে না পেয়ে ভারতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
এ বিষয়ে রবির দাদা বলেন, আমি রাজি মেয়েকে আমার পছন্দ হয়েছে কিন্তু আমার নাতি রবিকে পাওয়া যাচ্ছে না। রবিকে পেলেই আমি বিয়ের ব্যবস্হা করতাম।
রিংকি বেগম (২০) ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার থানার কড়াই ক্রান্তি গ্রামের আব্দুল রহিমের মেয়ে।
আব্দুল রহিম বলেন, দুই -দেশের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের সহায়তায় মেয়েকে পেয়ে আমি খুশি তবে যে কারণে মেয়ে নিখোঁজ ছিল তার প্রধান বাংলাদেশের একটি ছেলে যার নাম রবি (২০)।
ভারতে যাওয়ার সময় রিংকি বেগম সাংবাদিকদের বলেন, রবির সাথে আমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক এ পরিচয়, পরে দেড় বছরের সম্পর্কে ভারতে আমার পরিবার বিয়ে ঠিক করলে আমি রবির আশ্বাসে রাতের আঁধারে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসলেও রবির পরিবার আমায় মেনে না নিয়ে রবিকে লুকিয়ে রেখে আমাকে ভারতে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। আমি হেরে গেলাম, জিতে গেল রবি। তাহলে কি পাচারের উদ্দেশ্যে আমাকে বাংলাদেশ এ নিয়ে আসছে, আমি এটার প্রশ্ন রেখে গেলাম, আর যেন আমার মতো কেউ এমন ভোগান্তির স্বীকার না হয়।
এ সময় ভারতের ময়নাগুড়ি থানার ইনচার্জ সুবাল ঘোষ, রিংকি বেগম এর বাবা আব্দুল রহিম,বুড়িমারী ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এর ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম, পাটগ্রাম থানার এস আই শাহজাহান, বুড়িমারী বিওপি ক্যাম্প কমান্ডার হাফিজুল ইসলাম, বুড়িমারী স্থলবন্দর বিজিবি চেকপোস্টের কমান্ডার আনজারুল ইসলামসহ বিএসএফ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।