স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারী পাক হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বিশাল সমাবেশে ও বর্ণাঢ্য র্যালী করা হয়েছে। মঙ্গলবার(১৩ ডিসেম্বর) সকালে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আয়োজনে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পতাকা উত্তোলন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এর পর সেখান থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়। র্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক অতিক্রম করে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়। র্যালীতে জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নীলফামারী-২ সদর আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, দেশ স্বাধীনের পর স্বাধীনতা বিরোধীরা একের পর এক ষড়যন্ত্র শুরু করে। তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে, জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে দেশে আসতে বাধা দিয়েছে। শেখ হাসিনা বাধা অতিক্রম করে বীরের বেশে দেশে ফিরেছেন। তিনি আজ প্রধানমন্ত্রী। তিনি সফলভাবে দেশ পরিচালনা করছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের নিয়ে জিয়াউর রহমান সরকার গঠন করেছে। নবীন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের এসব ইতিহাস জানাতে হবে। একটা সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি।
তিনি বলেন, আজ নীলফামারী হানাদার মুক্ত দিবস। কিন্তু এই কর্মসুচিতে বিএনপি জামায়াত আসে নাই। কারন তারা মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্বাস করেন না। অগ্নি সন্ত্রাসীরা আবারো সক্রিয় হচ্ছে, তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহবায়ক হাফিজুর রশীদ প্রামানিক মঞ্জু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. মমতাজুল হক, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার, বীরমুক্তিযোদ্ধা সাবেক উপসচিব এ,কে,এম আমিনুল হক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেত ডিপুটি কমান্ডার কান্তি ভূষন কুন্ডু, সদর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুজার রহমান ও সাধারন সম্পাদক ওয়াদুদ রহমান প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংসদ নূরের পক্ষে উপহার ও মেডেল দেওয়া হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভোরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা হানামুক্ত করেন নীলফামারী। শত্রুকে পরাজিত করে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের উল্লাস আর ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে রাস্তায় নেমে আসেন সে সময়ের মহকুমা শহরের মুক্তিকামী সাধারণ মানুষ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে শহরের চারদিক থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে হানাদার বাহিনী পরাজিত হয়ে জেলা শহর ছেড়ে আশ্রয় নেয় সৈয়দপুর সেনানিবাসে। এরপর থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী মানুষের বিজয় উল্লাসের ঢল নামে শহরে। আর সে উল্লাসের ঢল চলে দিনব্যাপী। ১৩ ডিসেম্বর ভোরে হানাদার ম্ক্তু হয় নীলফামারী।