আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

দলের নির্বাচনি কৌশল চূড়ান্ত

বিএনপিতে গ্রিন সিগন্যাল শতাধিক প্রার্থীকে

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, রাত ০২:১৭

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ক্লিন ইমেজের শতাধিক নেতাকে নির্বাচনি প্রস্তুতির জন্য গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্ভাব্য প্রার্থীদের ভিডিও কলে অংশ নিয়ে যাঁর যাঁর এলাকায় কাজ করার জন্য নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে। চূড়ান্ত যাচাইবাছাই শেষ হলে পর্যায়ক্রমে ৩০০ প্রার্থীকেই এ সবুজ সংকেত দেওয়া হবে। একই সঙ্গে সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন। সবাইকে ভোটের কারচুপি, জালিয়াতি, কেন্দ্র দখল, ফলাফল ছিনতাইসহ সব ধরনের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকমান্ড। রাজধানী ঢাকার একাধিক আসনে সমমনাদের ছাড় দেওয়া হবে বলেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাস টার্গেট করে নির্বাচনি প্রস্তুতি পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। ইতোমধ্যে নির্বাচনি চূড়ান্ত কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। সম্ভাব্য দলীয় প্রার্থীদের আমলনামাও পৌঁছে গেছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে। প্রাথমিক যাচাইবাছাইয়ের পর তিনি ডিটেইলস তথ্য নিচ্ছেন তাঁদের সম্পর্কে এবং যোগ্য ও ক্লিন ইমেজের নেতাদের গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া শুরু করেছেন। দলের হাইকমান্ড অত্যন্ত গোপনে তিন স্তরে যাচাইবাছাই কার্যক্রম চালিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে তিনটি টিম কাজ করেছে বলে জানা গেছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের স্ব স্ব এলাকায় কার জনপ্রিয়তা কতটুকু তা জানতে ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন প্রার্থীসহ আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা ধরে এ জরিপ চালানো হয়। এজন্য প্রার্থীদের অজান্তে অত্যন্ত গোপনে সরেজমিন জরিপ চালান একাধিক জরিপ সংস্থার সদস্যরা। জানা গেছে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের জন্য যাঁদের প্রস্তুতি ছিল কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে অংশ নেননি এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে যাঁরা মনোনয়ন পেয়েছিলেন তাঁদেরও এ জরিপের অংশ করা হয়। তবে যাঁদের এলাকা ও এলাকার মানুষের সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক আছে এবং শিক্ষিত, এনারজেটিক, যোগ্য, ত্যাগী ও দলের জন্য ডেডিকেটেড, বিশেষ করে দেশব্যাপী নতুন ভোটাররা যে প্রার্থীকে বেশি পছন্দ করেন এমন ব্যক্তিদেরই এবারের মনোনয়নে অধিক প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। দলের নীতিনির্ধারক মহল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের টার্গেটে অন্তর্বর্তী সরকার এগোচ্ছে কি না?-এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আমি তো দেখছি সরকার এ টার্গেটেই সামনে এগোচ্ছে।’ তা ছাড়া নির্বাচনসংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশনা শিগগিরই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে দেওয়া হবে বলে স্বীকার করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

নির্বাচনি প্রস্তুতির বিষয়ে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সব সময়ই নির্বাচনমুখী। সুতরাং নির্বাচনি প্রস্তুতি বিএনপির সব সময়ই আছে। এমনকি নির্বাচন কমিশন আগামীকাল নির্বাচনের আয়োজন করলেও বিএনপি প্রস্তুত আছে।’ প্রার্থী বাছাইয়ের বিষয়টিকে তিনি স্বাভাবিক নির্বাচনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই উল্লেখ করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এবার দলের সিদ্ধান্ত হলো একক প্রার্থী নির্ধারণ করা। ২০১৮ সালের মতো একাধিক প্রার্থীকে চিঠি দেওয়া হবে না। সেভাবেই প্রস্তুতি-প্রক্রিয়া চলছে।’

জানা যায়, মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া এবং মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বর্তমান অবস্থানও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। যাকে মনোনয়ন দিলে সাধারণ ভোটাররা খুশি হবেন, এমন প্রার্থীর হাতেই এবার নির্বাচনের চূড়ান্ত টিকিট তুলে দেবে বিএনপি। এ ক্ষেত্রে কতিপয় মৌলিক নীতি অনুসরণ করা হবে। এজন্য দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে নীতি হিসেবে তিনটি যোগ্যতা অন্যতম মানদ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। সেগুলো যথাক্রমে ১. গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই-সংগ্রামে দেশ ও দলের জন্য যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন। ২. যিনি সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং এলাকার মানুষের কাছে একজন ভালোমানুষ হিসেবে সুপরিচিত। এবং ৩. ভোটের রাজনীতিতে যিনি তাঁর এলাকায় বেশি জনপ্রিয়। দলটির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এমন মাপকাঠির কথা নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়া জানা যায়, এবারের মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে তরুণ প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পেতে পারেন। আবার দলের বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে নবীন-প্রবীণের চমৎকার সমন্বয় ঘটিয়ে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। অন্যদিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। একই সঙ্গে মিত্রদের তথা সমমনা দলগুলোর জন্যও কিছু আসন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কিছু চমকও থাকতে পারে এবারের নির্বাচনে।

হোমওয়ার্ক হিসেবে এসব প্রস্তুতি কার্যক্রম চালালেও নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পরই মূলত নির্বাচনকেন্দ্রিক সব কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। তফসিল ঘোষণার পর দলীয়ভাবে মনোনয়নপত্র বিক্রি ও জমা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের পর একক প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড।

মন্তব্য করুন


Link copied