নিউজ ডেস্ক: ভারতের ভূখণ্ডে বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে, এমন কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের মাটিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় ও কার্যক্রম বন্ধের জন্য দিল্লিকে অনুরোধ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর জয়সওয়াল এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতের মাটিতে কথিত আওয়ামী লীগের সদস্যদের বাংলাদেশবিরোধী কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড বা ভারতের আইনবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তারা অবগত নন।’
তিনি আরো বলেন, ‘ভারত সরকার অন্য দেশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় না। সুতরাং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুচিত।’
এ সময় রণধীর জয়সওয়াল পুনর্ব্যক্ত করেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা ও ম্যান্ডেট নির্ধারণের জন্য শিগগিরই অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করছি।’
এর আগে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘নিষিদ্ধ’ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অফিস ভারতের রাজধানী দিল্লি এবং কলকাতায় স্থাপনের খবরে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপের পটভূমিতে এ ঘটনা ঘটেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মানবতাবিরোধী গুরুতর অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ফৌজদারি মামলা হওয়ার কারণে দলের অনেক সিনিয়র নেতা পালিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে রয়েছেন। এর আগে গত ২১ জুলাই সন্ধ্যায় একটি অখ্যাত এনজিওর আড়ালে নিষিদ্ধ দলটির কয়েকজন সিনিয়র নেতা দিল্লি প্রেস ক্লাবে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের পরিকল্পনা করেছিলেন। তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যে পুস্তিকা বিতরণ করেছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন ভারতের মাটিতে থাকাকালে দলের ক্রমবর্ধমান কার্যক্রমের কথা নিশ্চিত করেছে।
সরকার মনে করে, ভারতের মাটিতে অবস্থান করে বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের পলাতক নেতাকর্মীদের আইনত অবৈধভাবে অফিস স্থাপনসহ যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক কার্যকলাপ বাংলাদেশের জনগণ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবমাননা। এ ঘটনা ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে পরিচালিত সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে ঝুঁকিও বহন করে এবং বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে গুরুতর প্রভাব ফেলে। এটি বাংলাদেশে জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে, যা দুই নিকটতম প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্ক আরো উন্নত করার জন্য উভয় দেশের চলমান প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করতে পারে।
বিবৃতিতে এ ধরনের কার্যকলাপের অনুমতি ও সমর্থন না দেওয়া এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়গুলো অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এ ছাড়া ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশবিরোধী কোনো কার্যক্রম যাতে কেউ চালাতে না পারে, বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি বাংলাদেশ অনুরোধ জানায়।