আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ৪ নভেম্বর ২০২৫ ● ২০ কার্তিক ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ৪ নভেম্বর ২০২৫
আগামী সপ্তাহে শেখ হাসিনার বিচারের রায় হবে : মাহফুজ আলম

আগামী সপ্তাহে শেখ হাসিনার বিচারের রায় হবে : মাহফুজ আলম

বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যেসব নারী প্রার্থীরা

বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যেসব নারী প্রার্থীরা

রংপুর বিভাগে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

রংপুর বিভাগে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

৩৯ বছর আগে হারানো আসন উদ্ধারে রংপুরে ৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থী যারা

৩৯ বছর আগে হারানো আসন উদ্ধারে রংপুরে ৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থী যারা

সকালে না রাতে, কখন গোসল করা ভালো?

মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, রাত ১২:০৬

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  সকালে ঘুম ভাঙানোর জন্য হোক বা রাতে আরামের জন্য —গোসলের সময় নিয়ে মানুষের মধ্যে ভিন্ন পছন্দ রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে আসলে কখন গোসল করা সবচেয়ে বেশি উপকারী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্যের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। তারা এও বলছেন, বিছানার পরিচ্ছন্নতাই মূল চাবিকাঠি। 

সকালের গোসল প্রেমীরা মনে করেন, সকালে গরম পানির ঝর্ণার নিচে ১০ মিনিট দাঁড়ালে ঘুম পুরোপুরি ভেঙে যায়, শরীর ও মন তাজা হয় এবং দিনের শুরুতে প্রস্তুত থাকা যায়। অন্যদিকে রাতের গোসল প্রেমীদের বিশ্বাস, ঘুমানোর আগে গোসল করলে সারাদিনের ধুলো-ময়লা, ঘাম ধুয়ে ফেলা যায় এবং শরীর পরিষ্কার থাকলে আরামের ঘুম আসে।

রাতে গোসলের পরও পরিচ্ছন্নতার চ্যালেঞ্জ

গোসলের মূল কাজ হলো ত্বক থেকে ময়লা, ঘাম আর তেল দূর করা, যা দিনভর বাইরের ধুলো, দূষণ ও পরাগরেণুর সঙ্গে ত্বকে জমে। রাতে গোসল না করলে এই আবর্জনা বিছানার চাদর ও বালিশের কাভারে জমা হয়।

লিসেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিদ প্রিমরোজ ফ্রিস্টোন বলেন, রাতে গোসল করে পরিচ্ছন্ন হয়ে বিছানায় গেলেও রাতে আমাদের ঘাম হয় এবং একজন মানুষ রাতে ৫০ হাজারের বেশি ত্বকের কোষ বিছানায় ছড়িয়ে দেয়, যা ধুলোর মাইটের জন্য ‘ভোজসভা’।

স্ট্যাফিলোকক্কাসের মতো ব্যাকটেরিয়া ঘামগ্রন্থি থেকে নির্গত তেল খেয়ে সালফার যৌগ তৈরি করে, যা শরীরের গন্ধ তৈরি করে।

ফ্রিস্টোনের মতে, রাতে গোসল করলেও আমরা একটা ঘামভেজা ক্ষুদ্র পরিবেশ তৈরি করি, যেখানে ব্যাকটেরিয়া খাবার পেয়ে হালকা শরীরের গন্ধ তৈরি করবে। তাই সকালে উঠলে, রাতে গোসল করা সত্ত্বেও আমরা একটু গন্ধযুক্তই থাকি।

বিছানার পরিচ্ছন্নতাই মূল চাবিকাঠি

যুক্তরাজ্যের হাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষত নিরাময় ও অণুজীব বিষয়ক সিনিয়র লেকচারার হলি উইলকিনসন মনে করেন, সন্ধ্যা বা রাতে গোসল করার চেয়ে বিছানার চাদর পরিষ্কার রাখা অনেক বেশি জরুরি।

কারণ, রাতে গোসল করে বিছানায় গেলেও যদি চাদর এক মাস ধরে না ধোয়া হয়, তাহলে সেখানে ব্যাকটেরিয়া, ময়লা, ধুলোর মাইট এবং ছত্রাক জমতে থাকবে। ব্যাকটেরিয়া কম্বল, চাদর ও বালিশে সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে বেঁচে থাকতে পারে।

ধুলোর মাইটের মলের দীর্ঘমেয়াদি সংস্পর্শে অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়ে। যারা পরাগরেণুর মতো অ্যালার্জেনের প্রতি সংবেদনশীল, তাদের ক্ষেত্রে চাদর পরিষ্কার না করলে উপসর্গ আরো খারাপ হবে।

এছাড়া, গুরুতর হাঁপানির রোগীদের ৭৬ শতাংশই অন্তত এক ধরনের ছত্রাকের প্রতি অ্যালার্জি রাখে।

ভালো ঘুমের জন্য রাতের গোসল

রাতে গোসল করেন এমন লোকেরা দাবি করেন, এতে তাদের ঘুম ভালো হয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমানোর এক-দুই ঘণ্টা আগে ১০ মিনিটের গরম গোসল করলে ঘুমে যাওয়ার সময়টা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

ধারণা করা হয়, শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে আবার ঠাণ্ডা করার প্রক্রিয়া শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি (সার্কাডিয়ান রিদম) একটা সংকেত দেয় যে ঘুমের সময় হয়েছে।

প্রভাব সামান্য

ফ্রিস্টোন সকালে গোসল করাকেই বেশি পছন্দ করেন, কারণ এতে রাতে বিছানা থেকে জমা ঘাম আর অণুজীবগুলো ধুয়ে ফেলা যায়।

তবে বিশেষজ্ঞদের চূড়ান্ত মত হলো, গোসলের এই সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্যে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। এটা বরং নির্ভর করে আপনি দিনের বেলায় পরিচ্ছন্ন থাকতে চান, নাকি রাতে।

উইলকিনসন বলেন, যদি দিনে একবার গোসল করেন, তাহলে কোন সময় করছেন তাতে খুব একটা ফারাক পড়ে না। বরং স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো (যেমন- বগল, কুঁচকি, পা) প্রতিদিন ধুয়ে ফেললে, সপ্তাহে কয়েকবার গোসলই যথেষ্ট। তবে কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে দিনের শেষে গোসলের প্রয়োজন হতে পারে।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যেমন- আপনি যদি কৃষক হন, তাহলে দিনের শেষে বাড়ি ফিরে গোসল করতে চাইতেই পারেন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে, পরিচ্ছন্ন বিছানা বজায় রাখাই সম্ভবত বেশি জরুরি।

সার্বিক বিচারে, পরিচ্ছন্ন বিছানা বজায় রাখাটাই সম্ভবত গোসলের সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি। তথ্যসূত্র: বিবিসি।

মন্তব্য করুন


Link copied