আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ● ১ কার্তিক ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ১৬ অক্টোবর ২০২৫
বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা

বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা

কারচুপি হলে বাংলাদেশ অচল করে দেবে ছাত্রদল: রাকিব

কারচুপি হলে বাংলাদেশ অচল করে দেবে ছাত্রদল: রাকিব

আড়াই ঘন্টা পর অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত উপ-উপাচার্য

চাকসু নির্বাচন
আড়াই ঘন্টা পর অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত উপ-উপাচার্য

চাকসুর ভিপি, জিএসসহ ২৬ পদের ২৪টিতে জয়ী শিবির

চাকসুর ভিপি, জিএসসহ ২৬ পদের ২৪টিতে জয়ী শিবির

হানাহানির রাজনীতি বন্ধের আহ্বান জাপা মহাসচিবের

শনিবার, ৩০ আগস্ট ২০২৫, রাত ০৮:১৭

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: হানাহানির রাজনীতি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

শনিবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

দেশবাসী ও রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ হানাহানির রাজনীতি বন্ধ করুন। সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত, আগুন নিয়ে খেলা বন্ধ করা উচিত। আমরা জাতীয় পার্টি ভীত না, কিন্তু আমরা দেশকে নিয়ে চিন্তিত। এ দেশ আমাদের সবার।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, আমরা খুব দুঃখ কষ্ট পেয়েছি। আমাদের প্রিয় নুর আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন। আমরা দোয়া করি উনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুক। উনার সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক অনেক ভালো।

ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, গতকাল আমাদের পার্টি অফিসের পাস দিয়ে একটি মিছিল যাওয়ার সময় সেখান থেকে অনেক বড় বড় ঢিল মারা হয়। ঢিল মারার কারণে স্বাভাবিকভাবেই অনেকে আহত হয়েছেন। আমরা এখন পর্যন্ত আমাদের দলীয় ৩০ জনের নাম পেয়েছি, যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। পরে আমরা আমাদের পার্টি অফিসে চলে আসি। গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরাও চলে যান।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় আবার একটি মশাল মিছিল নিয়ে আসে আমাদের পার্টি অফিস জ্বালানোর জন্য। এ সময় কার্যালয়ের ভেতরে আমাদের চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় নেতা, নারী ও সাবেক সংসদ সদস্যরা ছিলেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং পুলিশ গিয়ে সেটি ঠেকানোর চেষ্টা করে। আমরা দেখি তারা পুলিশের ওপর আঘাত করে। আমরা দেখেছি, বেশ কয়েকজন পুলিশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। এরপর সেনাবাহিনী এসে আমাদের বলেন, ৫ মিনিটের মধ্যে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে যেতে। তখন আমরা বলি, আমাদের পার্টি অফিসে আগুন দিলে তখন কি হবে? তখন সেনাবাহিনী বলে, আমরা দেখবো। আমরা সেনাবাহিনীর কথা শুনে পার্টি অফিসে চলে আসি। পার্টি অফিসের বাইরে আমাদের কোনো লোক ছিল না। সেনাবাহিনী এরপর তাদের (গণঅধিকার পরিষদ) বোঝানোর চেষ্টা করে, মাইকিং করে। এরপর আমরা দেখতে পাই, তারা সেনাবাহিনীর ওপর চড়াও হয় এবং আঘাত করে।

তিনি আরও বলেন, ইউনিফর্ম পরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের ওপর এভাবে আঘাত করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। রাষ্ট্রের মূল কাঠামোতে চিড় ধরার সামিল। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী তাদের থামানোর জন্য লাঠিচার্জ করে। পরে আমরা জানতে পেরেছি, সেই লাঠিচার্জে নুর আহত হয়েছেন। এতে আমরা দুঃখ পেয়েছি, কষ্ট পেয়েছি।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আমরা চাই, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। একটি দলের কখনো আদর্শ হতে পারে না, আরেকটি দলকে নিষিদ্ধ করা। একটি দলের আদর্শ হতে পারে না, আরেকটি দলের চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের কর্মসূচি দেওয়া। জাতীয় পার্টি শান্তিপূর্ণ দল, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী রাজনীতি করে। জাতীয় পার্টিকে এভাবে ট্যাগিং করার মাধ্যমে নব্য মবতন্ত্রের সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের গণতন্ত্র হোঁচট খাচ্ছে, বিভাজনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। যে ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে, সেই ঐক্যে চিড় ধরেছে। এ চিড় ধরা দেশ যেকোনো সময়ে খাদে পড়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী কালকে আগুনের হাত থেকে আমাদের বাঁচিয়েছে। আমরা সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি যদি অতিরিক্ত বল প্রয়োগ হয়ে থাকে সেটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসুক। এখন পর্যন্ত ছয়টি জেলায় আমাদের পার্টি অফিসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ অপরাধের জন্য আমরা রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ আশা করছি। রাষ্ট্র যদি আমাদের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে রাষ্ট্র থাকছে না, রাষ্ট্র নেই। তারা যে আছে, এটা সরকারকে প্রমাণ করতে হবে। যারা আইন হাতে তুলে নেবে তারা অপরাধী। তাদের প্রতি সহানুভুতির সুযোগ আছে? আমি মনে করি না।

জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে কারা হামলা করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘোলা পানিতে অনেকে মাছ শিকার করতে পারে। এখানে তৃতীয় পক্ষেরও ইন্দন থাকতে পারে। এ ধরনের মবের মধ্যে অনেক ধরনের লোক থাকতে পারে, অনেক অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের দলগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।

এ আন্দোলন নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অনুযায়ী যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, তাহলে তফসিল ঘোষণা হবে নভেম্বরে। অর্থাৎ, তফসিলের আর তিন মাস বাকি আছে। এ সময়ে কোনো দলের পার্টি অফিসের সামনে মব, দিনভর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পার্টির চেয়ারম্যান আহত হওয়া, আর যাই হোক আমরা নির্বাচনের দিকে যাওয়া দেখছি না। এ সরকার সঠিকভাবে ভোট করতে পারবে অনেকের সেই আস্থা নেই, আমরাও সন্দিহান।

হেলমেট পরাদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন অনেক বড় বড় ইট পাটকেল মারা হচ্ছিল, তখন আমাদের লোকজন হেলমেট পরেছে, আমিও পরেছি। এটা অস্বীকার করবো না।

জাপার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি আমাদের ছিল, এখনো আছে। কিন্তু যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকে, যদি মবতন্ত্র থাকে, তাহলে সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে কিনা সেটা চিন্তার বিষয়। অনেক রাজনৈতিক দল চাচ্ছে আমরা যেনো নির্বাচনে অংশ নিতে না পারি। যারা এটা ভাবছে, তারা কখনো জাতীয় পার্টির সমতুল্য হতে পারবে না। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিলে অনেকের ভোটের হিসাব মিলবে না।

মন্তব্য করুন


Link copied