আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ● ৪ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ইউনূসের নেতৃত্বে শুরু হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা, হাসিনার পলায়নের সাথে সাথে তিস্তা থেকে বাদ পড়লো ভারত

চীনের চুড়ান্ত পদক্ষেপ
ইউনূসের নেতৃত্বে শুরু হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা, হাসিনার পলায়নের সাথে সাথে তিস্তা থেকে বাদ পড়লো ভারত

ছাত্রদের ঝরে কাঁপছে প্রতিবেশীর ঘর ! মোদির সামনে বাংলাদেশের ছায়া!

ছাত্রদের ঝরে কাঁপছে প্রতিবেশীর ঘর ! মোদির সামনে বাংলাদেশের ছায়া!

“ তিস্তা শুধু একটি নদী নয় একটি নায়ক ভিলেনের লড়াইয়ের মঞ্চ “

বাস্তবায়ন হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা
“ তিস্তা শুধু একটি নদী নয় একটি নায়ক ভিলেনের লড়াইয়ের মঞ্চ “

ফেলানী হত্যার এক যুগ পর-ছোট ভাইয়ের বিজিবিতে যোগদান

ফেলানী হত্যার এক যুগ পর-ছোট ভাইয়ের বিজিবিতে যোগদান

রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা ঠেকাবে প্রযুক্তি

শুক্রবার, ২২ এপ্রিল ২০২২, সকাল ০৯:৫৮

Advertisement

ডেস্ক: রেললাইন পার হতে গিয়ে দেশে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে সড়কপথের যানবাহনে থাকা আরোহীরাই হতাহতের শিকার হন বেশি। এর মধ্যে দেশের ৯৪৬ লেভেলক্রসিংয়ে গেটকিপার নেই; নেই সড়কপথের যানবাহন থামিয়ে রাখার কোনো ব্যবস্থাও। আবার গেটকিপার থাকার পরও অনেক ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ অবস্থায় প্রযুক্তির মাধ্যমে রেলপথের নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, ক্রসিংয়ের দুই কিলোমিটার আগেই ট্রেনে সতর্কবার্তা পাঠাবে যন্ত্র। ট্রেন চালকও তার সামনে থাকা স্ক্রিনে দেখতে থাকবেন ক্রসিংয়ের বাস্তব চিত্র। টঙ্গী-ময়মনসিংহ ও টঙ্গী-ভৈরব বাজারের মধ্যে গেটকিপার নেই- এমন রেলক্রসিংয়ে প্রাথমিকভাবে এ প্রযুক্তি মিলবে। এ জন্য ১০টি ট্রেনের লোকোমোটিভে যন্ত্র সংযোজন করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ক্রসিংয়ে ট্রেনের সঙ্গে সড়কযানের দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। এ জন্য জিপিএস ও জিআইএস ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ক্রসিং সুরক্ষা পদ্ধতি উদ্ভাবনের পদক্ষেপ নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে ইলেকট্রিক সার্কিটকে সুইচিং করা হবে।

এর সাহায্যে চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে ডিভাইস ও মনিটর বসানো হবে। থাকবে ওয়ারনিং বেল, ফ্ল্যাসিং লাইট ও টাইমার। ইঞ্জিনটি ক্রসিং থেকে ২ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এলে ট্রেন চালক তা মনিটরের মাধ্যমে দেখতে পাবেন। তখন ক্রসিংয়ের যন্ত্রগুলো সচল হয়ে ট্রেন আসার সংকেত দিতে থাকবে। এমনকি কোনো কারণে ডিভাইস অকার্যকর থাকলেও ট্রেনচালক মনিটরের মাধ্যমে অবগত হতে পারবেন।

রেল সূত্র জানিয়েছে, একটি সোলার প্যানেল, ব্যাটারি ও সিপিটিইউয়ের মাধ্যমে ক্রসিং গেটে প্রযুক্তির সুবিধা দেওয়া হবে। ১২ ইঞ্চি একটি স্টিলের পোস্টে ‘পাওয়ার’ সরবরাহ করা হবে। পোস্টের ওপরের দিকে লম্বালম্বিভাবে একটি স্টিলের বার বসানো হবে। স্টিলের বারে থাকবে ফ্ল্যাশিং লাইট ও টাইমার। বারের ওপরে সোলার প্যানেলের নিচে একটা ওয়ারনিং বেল থাকবে। ট্রেন আসার দিকে চালকের জন্য সিগন্যাল (সংকেত) প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। গেটে স্থাপিত ওয়ারনিং বেল, টাইমার, ফ্লামিং লাইট ও ট্রেনের চালকের জন্য স্থাপিত সিগন্যাল ইত্যাদি সচল হওয়ার ফলে আগত ট্রেনের ইঞ্জিনে কিছু যন্ত্রপাতি থাকবে। সে জন্য একটি মনিটর ও ১টি ট্রান্সসিভার স্থাপন করতে হবে ১ বর্গফুট জায়গার মধ্যে। মনিটর ও ট্রান্সসিভারের জন্য প্রয়োজনীয় পাওয়ার সরবরাহ করতে হবে লোকোমোটিভ থেকে। তবে সেটি সর্বোচ্চ ১০০ ওয়াটের বেশি লাগবে না।

কোনো ট্রেন গেটের ২ কিলোমিটারের মধ্যে প্রবেশ করলে ট্রান্সসিভারের মাধ্যমে সেন্সিং হয়ে গেটের ফ্লামিং লাইট, বেল ও ট্রেনের ভেতরের সিগন্যাল সচল হয়ে উঠবে। তাৎক্ষণিক সতর্কবার্তা দেবে বাস, কারসহ সব ধরনের সড়কযানকে। বিষয়টি চালক তার ইঞ্জিনে থাকা মনিটরের মাধ্যমেও দেখতে পাবেন। ট্রেনের স্পিড অনুযায়ী ক্রসিংয়ে প্রবেশের ৬০ সেকেন্ড বাকি থাকতে টাইমার সংকেত দিতে থাকবে। অর্থাৎ রেলক্রসিংয়ে স্থাপিত টাইমারের মাধমে আশপাশের গাড়িগুলো জানতে পারবে ট্রেন আসার সময়। সেটি ৬০ সেকেন্ড থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকবে ট্রেন আসার সময় ঘনিয়ে আসা দেখে। ট্রেনটি ক্রসিং অতিক্রম করলে টাইমার, ফ্লাশিং লাইট ও বেল বন্ধ হয়ে যাবে। আরেকটি বিষয়, রেললাইনে কোনো সড়কযান ১০ সেকেন্ডের বেশি অবস্থান করলে তাও মনিটরে দেখতে পাবেন ট্রেন চালক। তা ছাড়া ট্রেন আসার দিকেও ‘অ্যারো’ চিহ্নের মাধ্যমে প্রদর্শনের বিষয়টি সংযোজন করা হচ্ছে।

এমন প্রযুক্তি স্থাপনের চিন্তাকে কার্যকর ভূমিকা উল্লেখ করে রেলওয়ের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার বলেন, ‘যেসব ক্রসিংয়ে গেটিকিপার নেই, সেগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের উদ্যোগে এসব ক্রসিংয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। এ পদ্ধতি যেসব ইঞ্জিনে যুক্ত থাকবে সেগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চলবে।’

তিনি জানান, নির্দিষ্ট ক্রসিংয়ে এ পদ্ধতি স্থাপন করে উভয় পাশে ‘পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করা হয়েছে’ মর্মে বড় আকারের সাইনবোর্ড বা স্টিকার থাকবে। তবে এ সুরক্ষা পদ্ধতির কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জানা গেছে, ট্রেন চলাচলের সংখ্যা হিসেবে লেভেল ক্রসিংয়ে এক থেকে চারজন গেটকিপার থাকেন। আট ঘণ্টার শিফট হিসেবে ক্রসিংয়ের তিনজন থেকে ১২ জন গেটকিপার প্রয়োজন। ঢাকা শহরে কিংবা জনবহুল এলাকায় থাকার কথা ১২ জন। আছেন ছয়জন করে। জনবল সংকটের কারণে যেখানে বৈধ ক্রসিংয়েই গেটম্যান নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না, সেখানে অবৈধ ক্রসিং অরক্ষিত রাখা ছাড়া উপায় নেই। রেললাইনের ওপর দিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তৈরি করা সড়কের কারণে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অবৈধ ক্রসিংয়ের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৮৫টি, যা আরও বেড়েছে। লেভেল ক্রসিংয়ের মান উন্নয়নে ২০১৫ সালের প্রকল্প এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু নিয়মিতই ক্রসিংয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের প্রাণ।

রেল সূত্রমতে, পূর্ব ও পশ্চিম রেলের এ দুই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি অবৈধ লেভেল ক্রসিং সৃষ্টি করেছে এলজিইডি। এলজিইডির কারণে সৃষ্ট অবৈধ ক্রসিংয়ের সংখ্যা ৪৪২। ইউনিয়ন পরিষদ নির্মাণ করেছে ৩৬৩টি, পৌরসভা ৭৯টি, সিটি করপোরেশন ৩৪টি, জেলা পরিষদ ১৩টি, সওজ ১১টি। ৩৩টি লেভেল ক্রসিং নির্মাণ করা হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে। এ ব্যাপারে তথ্য নেই রেলের কাছে। রেলের পূর্বাঞ্চলের ৩৪৩টি বৈধ ক্রসিংয়ের ১৮৯টিতে একজন গেটকিপার নেই। পশ্চিমাঞ্চলের ৯৭৮টির ৭৫৭টিতে গেটকিপার নেই। খবর-দৈনিক আমাদের সময়

মন্তব্য করুন


Link copied