সাবেক নির্বাচন কমিশনার লেখক মাহবুব তালুকদার (৮০) মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর ইউনাউটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে আইরিন তালুকদার।
তিনি জানান, সকালে তার বাবার অক্সিজেন লেভেল কমে গিয়েছিল। দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। সেখানে তার বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাকের কথা জানান চিকিৎসক।
আইরিন জানান, শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে দুই মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন মাহবুব তালুকদার। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পর তার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল।
মাহবুব তালুকদারকে ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছিল বলেও জানান তার মেয়ে।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মাহবুব তালুকদারকে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তাকে নিয়োগ পান।
১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় জন্ম মাহবুব তালুকদারের। নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
দৈনিক ইত্তেফাকে সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করা মাহবুব তালুকদার দীর্ঘ সময় শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন। তিনি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন।
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে চাকুরিতে যোগ দেন। পরবর্তীকালে তিনি সরকারি চাকরির ধারাবাহিকতায় বঙ্গবভনে পাঁচ বছর অবস্থানকালে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।
১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর বিশেষ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদউল্লাহর জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়কালে তিনি তার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মাহবুব তালুকদার শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৯ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে চাকুরি থেকে অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি।
২০১২ সালে শিশু সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমী পুরস্কার পান তিনি। মাহবুব তালুকদার ও তার স্ত্রী নীলুফার বেগম দম্পতির দুই কন্যা ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে।